দুর্নীতি মামলার রায় শুনতে বেগম খালেদা জিয়া আদালতে যাওয়ার পথ একটু পাল্টে দিলেন, আর এর পরপরই হঠাৎ তার বহরের দিকে ছুটে আসল বিএনপির শত শত নেতাকর্মী।
বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসন তার গুলশান-২ এর বাসভবন থেকে রওয়ানা হন বকশিবাজারের আদালতের পথে। গুলশান-১ হয়ে সাতরাস্তা হয়ে মগবাজার উড়াল সড়ক ধরে তিনি বকশিবাজার যাবেন-এমন ধারণা থেকে উড়াল সড়কের ওপরে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিল পুলিশ।
খালেদা জিয়ার যাত্রা শুরুর আগে থেকেই গুলশান থেকে পুরো যাত্রাপথে ব্যাপক নিরাপত্তার আয়োজন করেছিল। এই বহরে কেউ যেন ঢুকতে না পারে, সে দিকে নজর ছিল তাদের।
সব কিছু ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু সাতরাস্তা মোড় পার হয়ে উড়াল সড়কে উঠার আগে আগে পাল্টে গেল চিত্র। এতদিন খালেদা জিয়া এই উড়াল সড়ক ব্যবহার করেই আদালতে গেছেন। কিন্তু হঠাৎ করেই তার গাড়ি বহর উড়াল সড়কে না উঠে নিচের সড়ক ধরে মগবাজারের দিকে যাত্রা শুরু করল।
আর এফডিসি মোড়ের আগেই বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা জড়ো হন তাদের নেত্রীর গাড়িকে ঘিরে। মুহূর্তেই অপ্রস্তুত হয়ে যায় পুলিশ। আর যত সময় বাড়তে থাকে, নেতা-কর্মীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে তত বেশি। নেতা-কর্মীরা স্লোগান দিতে থাকেন, ‘আমার নেত্রী, আমার মা, বন্দী হতে দেব না।’
মুহূর্তেই গাড়িবহরের গতি একেবারেই থমকে যায়। আর যত সময় গড়াতে থাকে, নেতা-কর্মীদের সংখ্যা তত বাড়তে থাকে।
একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘তিনি যে এই পথ দিয়ে যাবেন, সেটা আমাদের ধারণাতেই ছিল না। আমরা তো উড়াল সড়কের ওপরের সড়কে যাতায়াত নির্বিঘ্ন করে রেখেছিলাম। কিন্তু তিনি যেটা করলেন, সেটার জন্য আমরা প্রস্তুত ছিলাম না। মনে হচ্ছে এটা পরিকল্পিতই ছিল।’
ফ্লাইওভার পার হওয়ার পর নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সেখান থেকে পুলিশ বেশ কয়েকজনকে আটক করে। নেতাকর্মীদের ভিড় ঠেলেই খালেদা জিয়ার গাড়িবহর বকশিবাজারের দিকে রওয়ানা করে।
২০০৮ সালের ৩ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশনের করা দুর্নীতির মামলায় আজ রায় ঘোষণার তারিখ জানানো হয় গত ২৫ জানুয়ারি। সেদিন থেকেই বিএনপির পক্ষ থেকে রায় বিরুদ্ধে গেলে তা মেনে না নেয়ার ঘোষণা আসে।
আর নেতা-কর্মীদেরকে জড়ো করে রেখে খালেদা জিয়া রায় শুনতে যাবেন বলে গণমাধ্যমকর্মীদেরকে জানান বিএনপি নেতারা।
এই পরিস্থিতিতে রায়ের দুইদিন আগে আজ থেকে রাজধানীতে কোনো ধরনের মিছিল সমাবেশ বা জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়। গত কয়েক দিনে সারাদেশে বিএনপির দুই হাজারের বেশি নেতা-কর্মীদেরকে গ্রেপ্তারের অভিযোগ করেছে বিএনপি।