আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ইং বুধবার বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দীন আহমেদ এক বিবৃতিতে বলেন, গতকাল ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ইং টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন ফোর-জি তরঙ্গ নিলাম অনুষ্ঠিত করে। তাতে বর্তমানে সক্রিয় অপারেটর রাষ্ট্র মালিকানাধীন টেলিটক সহ ৪টির মধ্যে অংশ নিয়েছে দুটি অপারেটর। রবি মার্জার করায় তার তরঙ্গ সব অপারেটরের চাইতে বেশি ৩৬.৪ মেগাহার্টজ থাকায় নিলামে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকে। গ্রামীণফোন ১৮০০ ব্যান্ডের ৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ কিনেছে। এতে গ্রামীণফোনের তরঙ্গের পরিমাণ দাড়ালো ৩৭ মেগাহার্টজ। আর বাংলালিংক ১৮০০ ব্যান্ডের ৫.৬ মেগাহার্টজ ও ২১০০ ব্যান্ডের ৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ কিনেছে। এতে বাংলালিংকের তরঙ্গের পরিমাণ দাড়ালো ৩০.৬ মেগাহার্টজ। তরঙ্গের প্রতিযোগীতায় গ্রামীণফোন রবির চাইতে ০.৬ মেগাহার্টজ বেশি রইলো।
কিন্তু আমাদের প্রশ্ন এতোদিন ধরে রবি ৩৬.৪ মেগাহার্টজ দিয়ে যে থ্রী-জি সেবা গ্রাহকদের দিয়েছে সেটার মান কি থ্রী-জি পর্যায়ে ছিল? এই পরিমাণ তরঙ্গ ইন্টারনেটের গতি ছিল সর্বোচ্চ ৫ এমবিপিএস। ফোর-জির জন্য গতি নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ এমবিপিএস। যেখানে এতদিন এই তরঙ্গ দিয়ে গড়ে ৬ এমবিপিএস গতিই আনা গেল না সেখানে একই পরিমাণ তরঙ্গ দিয়ে বর্তমান বিটিএস ব্যবহার করে কিভাবে ইন্টারনেটের মান বাড়াবে ফোর-জি?
তরঙ্গ বিক্রি করে সরকার হয়তোবা ৫৪২৩ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে যা কিনা জনগণের কাছ থেকেই পরোক্ষভাবে আদায় করা হয়েছে। তারপরও নিয়ন্ত্রণ কমিশন ও অপারেটররা গ্রাহকদের মিথ্যা তথ্য ও আশ্বাস দিচ্ছে যা অত্যন্ত দুঃখ ও লজ্জাজনক। কারণ ২০এমবিপিএস গতি পেয়ে প্রয়োজন ৬০ মেগাহার্টজ তরঙ্গের। বর্তমান বিশ্বে ১৮০ টি দেশে ফোর-জি চালু আছে। তাতে গড় গতি ১৬.৬ এমবিপিএস। সর্বচাইতে গতি বেশি আছে সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়ায় যথাক্রমে ৪৬.৬৪ ও ৪৫.৮৫ এমবিপিএস। এছাড়া নরওয়ে হাঙ্গেরিতে ৪২ এমবিপিএস। এসকল ছাড়াও বাংলাদেশের প্রান্তিক পর্যায়ে ইন্টারনেটের বর্তমান গতি ২.১ এমবিপিএস বা আরও কম। আরও সমস্যার মধ্যে ফোর-জি সম্বলিত হ্যান্ডসেটের অপর্যাপ্ততা, ফোর-জি সিম পরিবর্তন, বিটিএস তৈরি সহ অসংখ্য সমস্যার নিরসন না করেই ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ফোর-জি চালুর ঘোষণা গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই না।