রাজধানীর নাখালপাড়ায় জঙ্গি আস্তানায় নিহত তিনজনের মধ্যে নাসিফের লাশ শনাক্ত করেছে তার বাবা। শুক্রবার বিকালে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে তার বাবা নজরুল ইসলাম লাশ শনাক্ত করেন।
র্যাব কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্কুল পড়ুয়া ৮ম শ্রেণির এই কিশোর নাসিফ উল ইসলাম জেএমবির আত্মঘাতী দলে যোগ দেয়। গত ৬ অক্টোবর সে স্কুল থেকে পালিয়ে যায়। গত ১২ জানুয়ারি ১৩/১, ‘রুবি ভিলা’ভবনের পঞ্চম তলায় অভিযান চালায়। এতে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সন্দেহভাজন তিন সদস্য নিহত হন। নিহতদের মধ্যে একজনের নাম মেজবা উদ্দিন। বাকি দু’জনের পরিচয় পাওয়া না গেলেও নিহত মেজবা’র ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের অ্যাপস থেকে তাদের ছবি উদ্ধার করেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাব লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং থেকে এই দুজনের ছবি প্রকাশ করার পর নাসিফের পরিচয় পাওয়া যায়।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের দায়িত্বরত নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার হুমায়ুন কবির বলেন, র্যাবের প্রকাশ করা ছবি দেখে নাসিফের বিষয়টি আমার নিশ্চিত হয়েছি। এরপরও নাসিফের বাসায় গিয়ে তার বাবা-মাকে ছবি দেখানো হলে তারাও তাদের ছেলেকে শনাক্ত করেন।
মা-বাবার দেয়া তথ্যমতে, গত বছরের ৬ অক্টোবর নাসিফ উল ইসলাম নিখোঁজ হয়। সে চট্টগ্রাম মহানগরীর কাজেম আলী স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। ওই দিন স্কুলে যাওয়ার পর আর ফেরেনি নাসিফ। পরে নাসিফের বাবা নগরীর চকবাজার থানায় নিখোঁজ ডায়রি করেন।
ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরো বলেন, জেএমবির কথিত আমীর ডনের নির্দেশে মেজবা ও নাসিফ সদরঘাট থানায় হামলার পরিকল্পনা করে। সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টার্গেটকৃত সদরঘাট থানা এলাকার একটি স্ক্যাচ ম্যাপও অঙ্কন করেন। ম্যাপটি ডনের কাছে পাঠানো হয়। আত্মঘাতী হামলার পরিকল্পনার পর গত ২৭ সেপ্টেম্বর আশফাক, নাসিফ, রাকিব ও মেজবাহ চট্টগ্রামে আসে। দুই দিন পর মেজবা ও নাসিফ চলে যায়। কিন্ত এর আগে নিখোঁজের জিডির সূত্র ধরে নাসিফকে খুঁজতে গিয়ে নগরীর সদরঘাট পূর্ব মাদারবাড়ি পোর্টসিটি হাউজিং সোসাইটির মিনু ভবনে জঙ্গি গ্রুপ নব্য জেএমবির সন্ধান পায় কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। সেখানে অভিযানে ধরা পড়ে আত্মঘাতী জঙ্গি সদস্য আশফাকুর রহমান ও রাকিবুল হাসান। তারা জানিয়েছে, নাসিফের সাংগঠনিক নাম আবদুল্লাহ। দুই আত্মঘাতী জঙ্গি ধরা পড়লেও নাসিফ কিংবা ছদ্মবেশে বাসা ভাড়া নেয়া মেজবা ধরা পড়েনি।