আলী আব্বাস জাফর। ১৯৮০ সালে ভারতের একটি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করা এই তারকা ব্যক্তি একজন চলচ্চিত্র পরিচালক। তার হাতেই নির্মাণ হয়েছে ২০১৭-১৮ বছরের সবচেয়ে সুপারহিট ছবি ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’। যেটিতে অভিনয় করেছেন সালমান খান ও ক্যাটরিনা কাইফ।
ক্যারিয়ারে মাত্র তিনটি ছবি নির্মাণ করেছেন ৩৭ বছর বয়সী তরুণ এই পরিচালক। তিনটিতেই তিনি সফল। আলী আব্বাস জাফরের পরিচালনায় হাতেখড়ি হয় ২০১১ সালে। ওই বছরে ‘মেরে ব্রাদার কি দুলহান’ ছবিটি তিনি প্রথম পরিচালনা করেন। এই ছবিটির জন্যই তিনি পরিচালক হিসেবে বলিউড পাড়ায় বেশি পরিচিতি পেয়েছেন। তার অভিষেক ছবি ‘মেরে ব্রাদার কি দুলহান’ তুমুল জনপ্রিয়তা পায় এবং ব্যবসায়িক ভাবেও হয় সফল।
এরপর তিন বছর বাদে তিনি নির্মাণ করেন ‘গুণ্ডে’। যে ছবিটির কথা সিনেপাড়ার সকলেই জানা। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে মুক্তিপ্রাপ্ত ওই ছবির ‘তুনে মেরি এন্ট্রি ইয়ার’ গানটি এখনও জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। সুপারহিট সে ছবিটিতে দুই বন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেন রণবীর সিং ও অর্জুন কাপুর। নায়িকা ছিলেন প্রিয়াংকা চোপড়া। এটিও ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাওয়ার পাশাপাশি হয় দারুণ ব্যবসাসফলও।
মাঝে কেটে গেছে আরও তিনটি বছর। ২০১৭ সালের শেষ দিকে এসে তিনি তো ট্রাম কার্ডই মেরে দিলেন। বছরের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও ব্যবসাসফল ছবিটি এলো এই আলী আব্বাস জাফরেরই হাত ধরে। গত ২২ ডিসেম্বর মুক্তি পায় তার ব্লকবাস্টার ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’। এই ছবি সম্পর্কে কিছু বলাটাই বোকামি। কেননা, সালমান-ক্যাটরিনা অভিনীত ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’র সাফল্যের খবর এখন সিনেমহলের প্রতিটি অলিগলিতে।
বলিউড বক্স অফিসের এখনকার হিসাব বলছে, আয়ের দিক থেকে ৬০০ কোটির ঘর পেরিয়ে গেছে ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’। ছাড়িয়ে গেছে সুপারস্টার সালমান খানের ক্যারিয়ারের সকল ছবিকেও। ভাইজানের আর কোনো ছবি এতো বেশি আয় করতে পারেনি। ছবিটি এখনও চলছে দেদারছে।
২০১২ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’র প্রথম কিস্তি ‘এক থা টাইগার’। সেটি পরিচালনা করেছিলেন বলিউডের আরেক নামি চলচ্চিত্র নির্মাতা কবির খান। ব্লকবাস্টারের তকমা লাগে সে ছবিটির গায়েও। ‘এক থা টাইগার’ এও অভিনয় করেছিলেন সালমান-ক্যাটরিনা জুটি।
পাঁচ বছর পর দ্বিতীয় কিস্তি ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’-তে এসে ছবির অভিনেতা-অভিনেত্রী ঠিক থাকলেও বদলে যায় নির্মাতার চেয়ার। কবির খানের বদলে ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’ নির্মাণের দায়িত্ব কাঁধে নেন আলী আব্বাস জাফর। সালমান-ক্যাটরিনাদের সঙ্গে নিয়ে ছবিটি নির্মাণও করলেন। বাকি ইতিহাস তো সকলেরই জানা। গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে রীতিমত দাপিয়ে বেড়াচ্ছে আলী আব্বাস জাফরের সুপারডুপার হিট ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’।
যে ছবির এতো সাফল্য, সেই সাফল্যের জন্য অভিনেতা-অভিনেত্রীদের নিয়েই কিন্তু সকলের মাতামাতি। পেপার-পত্রিকা, টেলিভিশন, সভা-সমাবেশ ও বিভিন্ন শো-তে তাদের নিয়েই বেশি হইচই। কিন্তু ভালো ভালো ছবি যারা নির্মাণ করেন, আলী আব্বাস জাফরের মতো সেই নির্মাতারা সব সময়ই থেকে যান লোকচক্ষুর অন্তরালে। সুন্দর একটা সৃষ্টির সৃষ্টিকর্তা হিসেবে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের মতো তাদের ছবি কোনো পত্রিকায় বড় করে আসে না। পর্দার আড়ালের আলী আব্বাস জাফররা সব সব সময় আড়ালেই থেকে যান।