মোঃ রাজিব তালুকদার, ঝালকাঠি: জেলার রাজাপুর ও কাঠালিয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত ঝালকাঠি-১ আসনে আ’লীগ বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশিরা তাদের তৎপরতা শুরু করেছে। দুই দলের ছয় প্রার্থী রয়েছেন বর্তমানে মনোনয়ন মিশনে। একদিকে তারা এলাকার নেতাকর্মী ও জনগনের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করছেন অন্যদিকে দলের হাই কমান্ডেও লবিং অব্যাহত রেখেছেন।
আ’লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে বর্তমান এমপি বিএইচ হারুন, জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট খান সাইফুল্লাহ পনির, কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো: ইসমাইল হোসেন ও আ’লীগের কেন্দ্রীয় নেতা মনিরুজ্জামান মনির রয়েছেন। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশিদের মধ্যে আছেন সাবেক এমপি ও আইন প্রতিমন্ত্রী ব্যারিষ্টার শাহজাহান ওমর, ২০০৮ সালের নির্বাচনে দলের প্রার্থী রফিকুল ইসলাম জামাল ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আজম সৈকত।
আ’লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশিদেও মধ্যে মনোনয়ন দৌড়ে বিএইচ হারুন এগিয়ে রয়েছেন। নির্বাচনী এলাকার সকল জনপ্রতিনিধি ও দলীয় পদ পদবীধারী নেতা কর্মীরা বিএইচ হারুনের সাথে রয়েছেন। তবে এ আসনে জেলা আ’লীগের জনপ্রিয় সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট খান সাইফুল্লাহ পনির মনোনয়ন চাইলে হিসেব পাল্টে যেতে পারে। মনোনয়ন প্রত্যাশি মনিরুজ্জামান মনিরও এলাকায় গনসংযোগ সহ সামাজিক কর্মকান্ডে প্রায়ই এলাকায় আসছেন এবং গনসংযোগ করছেন। ইসমাইল হোসেন সরাসরি দলীয় কোন পদে না থাকায় এবং সরকারী পদে থাকায় এলাকায় তিনি কোন দলীয় কার্যক্রমে অংশ নিতে পারছেননা। ঝালকাঠি-১ আসনের আ’লীগের নেতাকর্মীরা মনে করেন যদি মামলা সংক্রান্ত কারনে শাহজাহান ওমর এই আসনে নির্বাচন করতে না পারেন তাহলে আ’লীগের বিজয় সহজ হবে।
আ’লীগের পাশাপাশি বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশিরাও ইতোমধ্যে নির্বাচনী প্রচারনার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ব্যারিষ্টার শাহজাহান ওমর এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নেয় সহ ঢাকায় রাজাপুর ও কাঠালিয়া উপজেলার যারা ঢাকায় থাকেন তাদের নিয়ে মতবিনময় সভা করছেন। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আজম সৈকত ইতোমধ্যেই নির্বাচনী প্রচারনার কাজ শুরু করছেন। সম্প্রতি সৈকত কাঠালিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে গনসংযোগ করেছেন। তরুন ও ত্যাগী নেতা হিসেবে এলাকায় সৈকতের গ্রহনযোগ্যতা রয়েছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে অংশ নেয়া রফিকুল ইসলাম জামালও নির্বাচনী প্রচারনার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ছাত্রদল নেতা গোলাম আজম সৈকত বলেন, যদি শাহজাহান ওমর মনোনয়ন পান তাহলে আমি তার নির্বাচনী প্রচারনায় সহযোগিতা করবো। আর যদি কোন আইনী জটিলতায় তার মনোনয়ন আটকে যায়, তাহলে আমাকেই এ আসনে মনোনয়ন দেয়া হবে বলে আমি মনে করি। রফিকুল ইসলাম জামাল বলেন, শাহজাহান ওমর আমার বড় ভাই। তিনি মনোনয়ন পেলে আমি তার সাথে রয়েছি। তবে আমার বিশ্বাস দলের দু: সময় আমি যেহেতেু এই আসনে নির্বাচন করেছি, তাই আমাকেই এখানে মনোনয়ন দেয়া হবে। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম নুপুর বলেন, ঝালকাঠি-১ আসনে শাহজাহান ওমরের প্রার্থীতা নিশ্চিত হয়ে আছে। নির্বাচন করতে তার কোন আইনগত বাধা নেই। জেলা বিএনপির সহসভাপতি সৈয়দ রফিকুল ইসলাম বলেন, ঝালকাঠি-১ আসন তো বটেই প্র্ার্থী সংকট হলে ঝালকাঠি-২ আসনেও শাহজাহান ওমর নির্বাচন করতে পারেন।
এদিকে মনোনয়নকে কেন্দ্র করে রাজাপুর ও কাঠলিয়ায় আ’লীগ এখন কয়েকটি গ্রুপে দ্বিধা বিভক্ত। হয়ে পড়েছে। অপরদিকে বিএনপিতে রাজাপুরে কোন গ্রুপিং না থাকলেও সম্প্রতি কাঠালিয়ার সন্তান গোলাম আজম সৈকত মনোনয়ন চাওয়ায় সেখানে সৈকত কেন্দ্রীক একটি গ্রুপ সৃষ্টি হবার সম্ভবানা রয়েছে। সৈকত বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক নান্নুর অনুসারি হিসেবে পরিচিত।