প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থে কানাডার আরও বিনিয়োগ কামনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিতকরণে আমাদের আরও বিনিয়োগ প্রয়োজন। বিনিয়োগ আকর্ষণ ও কর্মসংস্থানে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাসহ আমরা দেশে ১০০ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করেছি।’
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার বিনিয়োগকারীদের সুযোগ-সুবিধা দিতে চায়। ‘তাই আমরা বাংলাদেশে কানাডার বিনিয়োগকারীদের ব্যাপক আকারে বিনিয়োগের আহ্বান জানাচ্ছি।’
বাংলাদেশে কানাডার নবনিযুক্ত হাইকমিশনার বিনোইট প্রিফানটেইন রবিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সংসদ ভবনের কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি একথা বলেন। এসময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
আগামী সাধারণ নির্বাচন নিয়ে আলাপকালে শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার চায় দেশে গণতন্ত্র সুষ্ঠুভাবে অব্যাহত থাকুক। এ প্রসঙ্গে তিনি স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স চালু এবং ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রস্তুতের কথা উল্লেখ করেন।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানবিক কারণে বাংলাদেশ মিয়ানমারের প্রায় ১০ লাখ নাগরিককে আশ্রয় দিয়েছে।
জবাবে কানাডার হাইকমিশনার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় এবং সবধরনের সহযোগিতা প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। এ প্রসঙ্গে কানাডার হাইকমিশনার বলেন, তার দেশ লাখ লাখ রোহিঙ্গার বাংলাদেশে অনুপ্রবেশে ইতোমধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনার জন্য আমাদের প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমারে একজন বিশেষ দূত পাঠিয়েছেন।’
প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় দ্রুত সহায়তা প্রদান বিশেষ করে তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে ট্রুডোর অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি কানাডার বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর দুইবার বৈঠকের কথাও স্মরণ করেন।
শেখ হাসিনা বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার সরকারের অসামান্য সাফল্য ও অর্জনের কথা তুলে ধরে বলেন, বর্তমানে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, মাথাপিছু আয় এক হাজার ৬১০ ডলারে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং দারিদ্র্যের হার ২২ শতাংশে হ্রাস পেয়েছে। পাশাপাশি সরকার শিশুদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে পিতা-মাতা ও অভিভাবকদের উৎসাহিত করছে। তাদের বৃত্তির অর্থ সরাসরি মায়েদের সেলফোনে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে।
বিনোইট প্রিফানটেইন বলেন, কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করতে পারেন। তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদারে কানাডা কাজ করে যাবে। বিভিন্ন খাতে সহযোগিতার সম্ভাবনার বিষয়ে কানাডা খুবই আশাবাদী।
হাইকমিশনার বলেন, টরেন্টো শহরে বাংলাদেশ কনস্যুলেট অফিস স্থাপনকে কানাডা স্বাগত জানায়। তিনি বলেন, বাংলাদেশে নারীর আরো ক্ষমতায়নে কানাডা সহায়তা করতে চায়।