দেশের ৮৯ ভাগ মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ সেবা পৌঁছে গেছে। এর মধ্যে ৮৭ ভাগ এই সেবা নিয়ে কমবেশি সন্তুষ্ট। আর বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা নিয়ে সরকারের পরিকল্পনায় ৭৯ দশমিক ৭ ভাগ মানুষ আস্থা রাখতে চায়। ৫ দশমিক ৬ ভাগ মানুষ আস্থা রাখতে চায় না। বাংলাদেশ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ গবেষণা কাউন্সিলের সহযোগিতায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) পরিচালিত এক জরিপে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। গত সোমবার বিকালে বিদ্যুৎ ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই জনমত জরিপ প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, আমরা বিদ্যুত্খাতে কী কাজ করছি তার ফলাফল জানার জন্যই এ ধরনের জরিপ করা জরুরি। সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক উপায়ে এই জরিপ করা হয়েছে। সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এ ধরনের জরিপ সহায়তা করে। বিবিএস এর তথ্য অনুযায়ী আমরা বলতে পারি ৯০ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে।
জরিপ কার্যক্রমে ১৯ হাজার ৬০০ মানুষের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলা হয়েছে। ২০১৪ সালের পর আবারও ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে দেশের বিদ্যুৎ পরিস্থিতিতে মানুষের সন্তোষ-অসন্তোষ জানতেই এই গবেষণা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০০৯ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত দেশের বিদ্যুত্খাতে ৮ দশমিক ৯ বিলিয়র ডলার বিনিয়োগ হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি খাতে ৪ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার এবং বেসরকারি খাতে ৪ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হয়েছে। চলতি বছর থেকে ২০২১ সালের মধ্যে আরো ১৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হবে। সরকার ২০২১ সালে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। বাস্তবে এই সময়ে ২৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। একই সঙ্গে ১১ হাজার সার্কিট কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন এবং ৫ লাখ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হবে। জরিপে দেখা গেছে, ১১ ভাগ মানুষের ঘরে এখনও বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মোট বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীর মধ্যে ৮৬ দশমিক ৯ ভাগ মানুষ সন্তুষ্ট এবং ১৩ দশমিক ১ ভাগ মানুষ সন্তুষ্ট নয়। ব্যবহারকারীদের মধ্যে ১১ দশমিক ২ ভাগ মানুষ খুব সন্তুষ্ট, শুধু সন্তুষ্ট মানুষের হার ৪৫ দশমিক ৮ ভাগ, আর মোটামুটি সন্তুষ্ট মানুষের হার ২৯ দশমিক ৯ ভাগ। এই হারের আবার গ্রীষ্ম এবং শীতে পার্থক্য রয়েছে। গ্রীষ্মকালে ৯ দশমিক ২ ভাগ খুবই সন্তুষ্ট, ৪৭ দশমিক ২ ভাগ সন্তুষ্ট, ৩১ ভাগ মোটামুটি সন্তুষ্ট এবং ১২ দশমিক ৭ ভাগ অসন্তুষ্ট। আবার শীতে ১৩ দশমিক ৩ ভাগ খুবই সন্তুষ্ট, ৪৪ দশমিক ৭ ভাগ সন্তুষ্ট, ২৮ দশমিক ৮ ভাগ মোটামুটি সন্তুষ্ট এবং ১৩ দশমিক ৫ ভাগ অসন্তুষ্ট। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, ইপিআরসি চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ চৌধুরী, পিডিবির চেয়ারম্যান খালিদ মাহমুদ, আরইবির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মঈন উদ্দিন এবং বিবিএস’র মহাপরিচালক মোঃ আমির হোসেন।