মাদক ও ধর্ষনে ক্ষত বিক্ষত স্বদেশ।
ধর্মীয়, সমাজিক ও পারিবারিক মূল্যবোধের চরম অবনতি গোটা বাংলাদেশকে অনিরাপদ করে তুলেছে। মাদক ও ধর্ষনের আগ্রাসী বহিঃপ্রকাশ লেলিহান শিখার মত দেশের পথে, ঘাটে, মাঠে, প্রান্তরে ছড়িয়ে পড়ছে দাবানলের মত। শিশু থেকে বৃদ্ধা কোন নারীই আজ নিরাপদ নয়। নিজ সন্তান ও অনিরাপদ হয়ে যাচ্ছে ঘরের ভেতরে। হয়েনাদের তীব্র নখড়ে ক্ষত বিক্ষত স্বদেশ। মাদকের বিস্তার ,ডিস কালচার, ইন্টারনেট, লীভ টুগেদার, লেট নাইট পার্টি, দূর্নীতি, রাহাজানি, নীল নেশা ও সমকামিতার মত ঘৃন্য সব ষড়যন্ত্রে দিশেহারা বাংলাদেশ। ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ গুলো বিলীন হবার পথে। পারিবারিক ভ্যালুস গুলো নেই বললেই চলে। যুব সমাজের নৈতিক অবক্ষয় শেষ সীমায় পৌছেছে। চলন্ত গাড়ি থেকে শুরু করে বাসা, অফিস, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, খেলার মাঠ, পার্ক সহ সব জায়গায় ধর্ষকরা ওৎ পেতে বসে আছে। বিচারহীনতা মাদক সম্রাট ও ধর্ষকদের উন্মুক্ততা বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রতিদিন প্রিন্ট ও ইলেকট্রোনিক্স মিডিয়ায় অবহেলিত মূল্যবোধ গুলো ঝকমকে ছবি হয়ে ফিরে আসছে। নারীবাদী ও প্রগতীবাদীরা মা বোনদের সম্ভ্রম নিলামে তুলে, এসি রূমে বসে টক শো করে নিজেদের বিশ্ব বেহায়ায় পরিনত করেছে।
তরুন-তরুনী, যুবক-যুবতী এমনকি নারী-পুরুষ, নেশা, লিভ টুগেদার, ইন্টারনেট ও ডিস কালচার নিয়ে মহাব্যস্ত। রাতের ঢাকা যেন হলিউড, বলিউডকে পেছনে ফেলে দিচ্ছে। দেশের জন্য,সমাজের জন্য , পরিবারের জন্য তাদের সময় নেই । ভিডিও কলে স্বামী বা বয়ফ্রেন্ডকে কানেকড করে
আত্মহত্যা করছে। কেউ আবার এক ধাপ এগিয়ে সরাসরি আত্মহত্যার ভিডিও লাইভ করছে। সবাই হুমরি খেয়ে তা দেখে মজা লুটছে। লাজ লজ্জা বলতে কিছু অবশিষ্ট নেই।
একটা সমাজ ধংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হলে যে সব আলামত দেখা যায় সেই সব উপর্সগ প্রবল আকারে দেখা দিচ্ছে। অভিশপ্ত সেই সমাজের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছি। নীতি, নৈতিকতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধের কথা শুনলে এরা নাক ছিটকায়।
মরন ব্যাধি নেশা বাংলাদেশের ঘরে ঘরে । নেশার ছোবল থেকে শিশু , কিশোর, যুবক ও যুবতী কেউ রেহাই পাচ্ছে না । নেশা শুধু একটি ছেলে বা মেয়ের জীবন ধংস করে না বরং পুরো পরিবারকে ধংস করে দেয়। মাদকের বিস্তার দেশকে ধংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে। নেশার এই মরণ ব্যাধি থেকে যুব সমাজকে বাঁচানোর সঠিক ও কার্যকর উদ্যোগ নেই। মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে , গনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে । ইয়াবা সম্রাটদের আইনের আওতায় আনতে হবে। দেশে ধর্ষনের যে রাজত্ব কায়েম হয়েছে এর মূলে রয়েছে মাদক ও ইন্টারনেটের অবাধ ব্যবহার।
বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ । এখানে ধর্মীয় ও সামাজিক বিধি বিধান মেনে চলা খুবই স্বাভাবিক। সাধারণ মানুষ ধর্মের প্রতি বিশ্বস্ত । এরপরেও দেশে লীভ টুগেদার বা বিবাহ বর্হিভূত বসবাস আশংকা জনক হারে বেড়ে গেছে। লেট নাইট পার্টির নামে চলে বেহেল্লেপনা। ডিজে পার্টির নামে পার্টিগার্লদের অসম্মান করা হয়। সীসা ও মদের নীল আসর বসে ঐ সব পার্টিতে। বনানী, গুলশানে সীসার নেশায় বুদ হয়ে কত বোন যে সম্ভ্রম হারিয়েছে
তা লিখে শেষ করা যাবে না। দুঃখের বিষয় এই সব দেখার কেউ নেই বরং একটি বিশেষ শ্রেনী এই সব বেহেল্লাপনাকে উসকানী দিচ্ছে । ধর্ষকদের ক্রসফায়ার দেওয়ার সাধারণ মানুষের প্রবল আগ্রহ কেন যেন কার্যকর হয়না । গণধর্ষন কারীরা জেলের ভেতরে ভিআইপি ভাবে থাকে ।
প্রচলিত বিচার ব্যবস্থা যখন নীতি ও আদর্শহীন হয়ে যায় তখন বিকল্প ব্যবস্থাই হউক সত্যিকারের বিচার। মানবাধিকারের নামে আওয়াজ তোলা সুশীল নারী , পুরুষদের আজকাল রাস্তায় দেখি না। আর কত বোন ধর্ষনের শিকার হলে রাস্তায় বের হবেন, কত মায়ের ছেলে নীল নেশায় আসক্ত হয়ে জীবন
বিপন্ন করে তুললে রাস্তায় বের হয়ে আসবেন। ঐ সব সুশীল নারী, পুরুষরা এখন মানবাধিকারের জিকির তোলে না। তনু , খাদিজা, নুসরাত ও নাম না জানা হাজারো বোনের রক্ত ওদের বুকে কাপন ধরায় না। যারা নারী স্বাধীনতা ও নারী মুক্তির নামে লম্পট পুরুষদের বাজারে মা, বোনদের সম্ভ্রম
নিলামে তুলেছে তাদের বিচার একদিন হবে ইনশা্আল্লাহ। পুলিশ ও র্যাব ভাইদের মধ্যে এখনও অনেক ভালো অফিসার আছে যারা সাধারণ জনগনকে সাথে নিয়ে মাদক ও ধর্ষকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। মহান আল্লাহ্ তাদের কবুল করুন। যেখানেই অপরাধ সেখানেই প্রতিরোধ
গড়ে তুলতে হবে। সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। গুটি কয়েক নষ্ট, সাইকো, চরিত্রহীন, নেশাখোর, সন্ত্রাসী, ধর্ষক, দূর্নীতি বাজদের কাছে পবিত্র জন্মভূমি জিম্মি হতে পারে না। সাহসী প্রতিবাদ ও সচেতনতাই সমাজকে বদলে দিবে ইনশা্আল্লাহ । আমীন।
মুহাম্মদ আজিজুর রহমান,
লেখক ও কলামিস্ট।