মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত যশোর রোডের দু’শতবর্ষী দুই সহস্রাধিক গাছ কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জনউদ্যোগ। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় খুলনা প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এ সময় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তারা বলেন, যশোর রোডকে চার লেনে উন্নীত করার প্রকল্পের নামে যশোর রোডের দুই ধারে দুই হাজারের উপরে দু’শতবর্ষী গাছ কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত যশোর অঞ্চলের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও প্রকৃতির প্রতি ভয়াবহ হুমকিস্বরূপ। যশোর রোড বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের আবেগের সঙ্গে জড়িত বলে এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে শুধু যশোর নয়, বরং সমগ্র বাংলাদেশের মানুষের ইতিহাস চেতনায় আঘাত করা হয়েছে। হাইকোর্টের দেওয়া ৬ মাসের স্থগিতাদেশের কথা উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, হাইকোর্টের এই সিদ্ধান্ত প্রমাণ করেছে- যারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা সরকারকে বিপাকে ফেলতে চাইছে।
তারা বলেন, দু’শতবর্ষী গাছগুলো স্বাধীনতা সংগ্রামের স্মৃতিবিজড়িত। আমাদের উন্নয়ন অবশ্যই দরকার, তবে ইতিহাস, ঐতিহ্য ও পরিবেশ রক্ষা করে। যারা গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য উৎসাহ দেখাচ্ছেন, তাদের বিশেষ মতলব রয়েছে। যশোর রোডের ভারত অংশের গাছ কাটা না হলেও আমাদের অংশের গাছগুলো কেটে ফেলা হচ্ছে, মূলত ইতিহাস মুছে ফেলার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে। বক্তারা অবিলম্বে সরকারকে এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে গাছ রেখে চার লাইনে সড়ক প্রশস্তের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। সমাবেশে সভায় সভাপতিত্ব করেন জনউদ্যোগ, খুলনা আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট কুদরত-ই-খুদা।
বক্তৃতা করেন, মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আ ফ ম মহসিন, মুক্তিযোদ্ধা নূর মোহাম্মদ মোড়ল, অধ্যক্ষ মো. তারিকুল ইসলাম, ওয়ার্কার্স পাটি নেতা মফিদুল ইসলাম, সিপিবি নেতা মিজানুর রহমান বাবু, আয়কর আইনজীবী ফেডারেশনের সভাপতি এস এম শাহনেওয়াজ আলী, মাসাসের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট শামীমা সুলতানা শীলু, খুলনা পোল্ট্রি ফিস ফিড শিল্প মালিক সমিতির মহাসচিব এস এম সোহরাব হোসেন, বেলার সমন্বয়কারী মাহাফুজুর রহমান মুকুল, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম সিদ্দিকী, জাপার শাহ লায়েকুল্লাহ, আমরা খুলনাবাসীর মাহাবুবুর রহমান খোকন, খুলনা উন্নয়ন ফোরামের এম এ কাশেম, শেখ আব্দুল হালিম, এস এম দেলোয়ার, উন্নয়ন নেতা আফজাল হোসেন রাজু, সুজনের ডা. মোছাদ্দেক হোসেন বাবলু, ছায়াবৃক্ষের মাহাবুব আলম বাদশা, রূপসা সংস্থার হিরণ্ময় মণ্ডল, সেফের দীপক কুমার দে, প্রশিকার অজয় দে, বাকের আহমেদ, নান্দিক একাডেমির জেসমিন আরা, মহিলা পরিষদের আলমাস আরা, শেখ আইনুল হক, সাংবাদিক খলিলুর রহমান সুমন, পরিবর্তনের ছবি রহমান, ওয়াহিদুজ্জামান জাহাঙ্গীর, কে এম মোস্তফা কামাল, এম এম শরিফুল ইসলাম, কামরান হাসান মন্টু প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন জনউদ্যোগ,খুলনার সদস্য সচিব মহেন্দ্রনাথ সেন।