1. rajubdnews@gmail.com : admin :
  2. 52newsbangla@gmail.com : News 52 Bangla : Nurul Huda News 52 Bangla
সোমবার, ০২ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:৫১ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ :
কাপ্তাইয়ে আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস পালন কাউখালীতে অবাধে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ শাল পাতা মাছ কাপ্তাইয়ে শেখ হাসিনার ৭৭ তম জন্মদিন পালন ও দোয়া মাহফিল কাপ্তাই ব্যাংঙছড়ি যাত্রী ছাউনির ওপর গাছ পরে লণ্ডভণ্ড কাপ্তাই হিলফুল ফুযুল যুব কাফেলা সেচ্ছাসেবী সংগঠন চিকিৎসাবাবদ বৃদ্ধ মহিলাকে আর্থিক অনুদান প্রদান আর্ন্তজাতিক তথ্য অধিকার দিবস উপলক্ষে কাপ্তাইয়ে র‍্যালি ও আলোচনা সভা শুদ্ধাচার পুরস্কার পেলেন কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার মুরাদ কাপ্তাইয়ে বেতনের আশায় চালু রাখা হয়েছে পাড়াকেন্দ্র কার্যক্রম সুইডেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত কাউখালীতে শ্রেণী কক্ষে ক্লাস নিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল মোল্লা

শহীদ বুদ্ধিজীবী হিসাবে এখনো সরকারিভাবে তালিকাভুক্ত হয়নি কাপ্তাই পিডিবি স্কুলের সাবেক শিক্ষক বাগ্মীশ্বর বড়ুয়াঃ পরিবারের আকুতি

প্রতিবেদকের নাম :
  • আপডেটের সময় : বৃহস্পতিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২০

কাপ্তাই প্রতিনিধি,

কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের রিসিপশন গেইটে কাপ্তাইয়ের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এবং বুদ্ধিজীবীদের নামফলক রক্ষিত আছে। কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রবেশের মুখে চোখ আটকে যায় সেই নাম ফলকের দিকে। অবনত চিত্তে মনের মধ্যে শ্রদ্ধা চলে আসে সেই সমস্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম দেখলে। সেই নাম ফলকে ২৮ নাম্বার সিরিয়ালে জ্বলজ্বল করে লেখা আছে কাপ্তাই এর বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বুদ্ধিজীবী বাগ্মীশ্বর বড়ুয়ার নাম। কে সেই বাগ্মীশ্বর বড়ুয়া? যদি তাঁর ইতিহাস জানতে হলে ফিরে যেতে হবে ৪৯ বছর আগে। কাপ্তাই প্রজেক্টের কর্নফুলি প্রকল্প উচ্চ বিদ্যালয়ের( বর্তমান, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড মাধ্যমিক বিদ্যালয়) প্রাক্তন সহকারী প্রধান শিক্ষক বাগ্মীশ্বর বড়ুয়া। ১৯৭১ সালের ১২ এপ্রিল পাকবাহিনী কাপ্তাইয়ে প্রবেশ করে। সেই সময় বিপদের কথা মাথায় রেখে শিক্ষক বাগ্মীশ্বর বড়ুয়া ২০ মে তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তাঁর গ্রামের বাড়ী রাউজান উপজেলার আবুরখীল গ্রামে চলে যান। সেইখানে তিনি গ্রামের যুবক- তরুণদের নিয়ে বৈঠক করেন এবং সকলকে যুদ্ধে যাবার জন্য অনুপ্রাণিত করেন। এর পর তিনি ১৯৭১ এর ১৩ জুন আবারোও তাঁর কর্মস্বল কাপ্তাই প্রজেক্টে চলে আসেন। এরপর তাঁর পরিবারের সদস্যরা তাঁকে আর খোঁজে পান নাই। দেশ স্বাধীন হবার পর তারা জানতে পারে কাপ্তাইয়ের শান্তি কমিটির লোকজন তাঁকে পাক বাহিনীর হাতে তুলে দেন। ধারণা করা হয় জুন মাসে তিনি কাপ্তাই এ পাকবাহিনী হাতে শহীদ হন।
শহীদ মুক্তিযোদ্ধা বুদ্ধিজীবী বাগ্মীশ্বর বড়ুয়া স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রাক্কালে এবং যুদ্ধকালীন সময়ে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসাবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।
কিশোর বয়সে তিনি ছিলেন বিপ্লবী মাষ্টারদা সূর্যসেনের কিশোর কর্মী। সেই কারনে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের রেকর্ডপ্রাপ্ত আসামী ঘোষিত হবার প্রেক্ষিতে আত্মগোপন করার উদ্যোশে বঙ্গীশ নাম দিয়ে বৌদ্ধ ভিক্ষু হয়ে বিপ্লবী কার্যক্রম চালিয়ে যান তিনি। ৩২৯ জন বুদ্ধিজীবীর জীবনী নিয়ে গবেষণামূলক গ্রন্হ ” শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ” এ উনার জীবনী প্রকাশিত হয়েছে। এইছাড়া বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত রশীদ হায়দার সম্পাদিত স্মৃতি ৭১ এর ৫ম খন্ডে উনার ৭১ এর স্মৃতির কথা লিখা হয়েছে। ১৯৭৩ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রদত্ত এক চিঠিতে তাঁর পরিবারের উদ্যোশে লেখা পত্রে স্বাধীনতা যুদ্ধে তাঁর অবদানের কথা প্রশংসা করা হয় এবং সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়।
শহীদ বুদ্ধিজীবী বাগ্মীশ্বর বড়ুয়া রাউজান উপজেলার আবুরখীল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাল্যনাম ছিল শশাংক বিমল বড়ুয়া। তিনি ১৯৩৭ সালে প্রথম বিভাগে মেট্রিকুলেশান পাস করেন। ১৯৩৯ সালে আই এ পাস এবং ১৯৪১ সালে পালি সুত্র বিশারদ উপাধি পান। পরবর্তীতে তিনি ১৯৪৬ সালে বি এ এবং ঢাকা সিটি কলেজ হতে বি এড পাস করেন। ১৯৪৯ সালে তিনি এবং বৌদ্ধদের অন্যতম ধর্মীয় গুরু প্রয়াত বিশুদ্ধানন্দ মহাথের মিলে চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লায় বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ গড়ে তোলেন। তিনি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হয়ে ১৯৫০ সালে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত প্রথম আর্ন্তজাতিক বৌদ্ধ সম্মেলনে যোগ দেন। এইছাড়া তিনি বিভিন্ন দেশে বৌদ্ধ সম্মেলনে তিনি দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। পরবর্তীতে তিনি ১৯৬৭ সালে কর্নফুলি প্রকল্প উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। কাপ্তাইয়ের স্থানীয় সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শামসুল হক এবং স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা রশিদ আহমেদ চৌধুরী ছিলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তাঁরা ১৯৭১ সালে অসহযোগ আন্দোলনে কাপ্তাইয়ে একসাথে কাজ করেন। তাঁর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে কাপ্তাইয়ে এক বিরাট মশাল মিছিল বের হয়।
অথচ ৭১ এর রনাঙ্গনের এই অকুতোভয় সৈনিক শিক্ষাবিদ এখনো সরকারিভাবে শহীদ বুদ্ধিজীবীর মর্যাদা পায় নাই। ইতোমধ্যে তাঁর স্ত্রী সবিতা রানী বড়ুয়া রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক বরাবরে জেলা পর্যায়ে শহীদ বুদ্ধিজীবী হিসাবে তালিকাভুক্ত হবার আবেদন করেছেন।
শহীদ বুদ্ধিজীবী বাগ্মীশ্বর বড়ুয়ার সন্তান ব্যবসায়ী অতিনু প্রসাদ বড়ুয়া এই প্রতিবেদককে জানান, আমার পিতা একজন দেশের প্রথম সারিতে শহীদ বুদ্ধিজীবী। বর্তমান সরকার যেহেতু শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করছেন, তাই আমাদের পরিবার সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি আমার শহীদ বুদ্ধিজীবী বাবাকে সরকারিভাবে বুদ্ধিজীবীদের তালিকায় তালিকাভুক্ত করা হউক।

এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের কাপ্তাই শাখার সাধারণ সম্পাদক এ আর লিমন জানান, তরুণ প্রজন্ম কে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত করার লক্ষ্যে এবং মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস এখনই সংরক্ষণ করা না হলে তরুণ প্রজন্ম, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের অবদান সম্পর্কে অনেক কিছুই অজানা রয়ে যাবে, তাই আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সঠিক তথ্য যাচাই বাছাই করে তাদের অবদান জাতির কাছে তুলে ধরার আহবান জানাচ্ছি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
2019 All rights reserved by |Dainik Donet Bangladesh| Design and Developed by- News 52 Bangla Team.
Theme Customized BY LatestNews