মোঃ নাছির আহমেদ/এইচ আর রুবেল :
মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ফ্রান্সে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)কে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশের প্রতিবাদে উলামা পরিষদ শ্রীমঙ্গলের আয়োজনে শহরজুড়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ সম্পন্ন হয়েছে।
শুক্রবার (৩০শে অক্টোবর) বাদ জুম্মা উপজেলার বিভিন্ন মসজিদের মুছল্লী ও সর্বস্তরের তৌহিদি জনসাধারণের বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের রেলওয়ে স্টেশন মসজিদ চত্ত্বর থেকে শুরু করে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে চৌমুহনয় এসে বিক্ষোভ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন জামেয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম আব্দুর শাকুর ও সঞ্চালনা করেন দারুল আজহার ইনস্টিটিউট এর প্রিন্সিপাল আহমদ সোহাইল।
এতে বক্তব্য রাখেন পরিষদের বিভিন্ন দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন মসজিদ এবং মাদ্রাসার থেকে আগত ওলামায়ে কেরামগণ।
উক্ত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, সম্প্রতি সময়ে ফ্রান্সে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)কে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ ইসলাম ধর্মের প্রতি চরম অবমাননা এবং মুসলমানদের হৃদয়ে ছুরিকাঘাতের শামিল। এর মাধ্যমে মূলত বিশ্বব্যাপী ধর্মীয় সহিংসতা ও উগ্রবাদকে উসকে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনে মহানবী (সাঃ) কে অবমাননার তীব্রনিন্দা জানায় ও অবিলম্বে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোকে বিশ্ব মুসলিমের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। আর যদি ক্ষমা না চান তাহলে সরকারের প্রতি আহবান জানব যাতে করে অনতিবিলম্বে ফ্রান্সের সকল প্রকার পণ্য বয়কট, কুটনৈতিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করা সহ ফ্রান্সের দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়া জন্য।
উল্লেখ্য যে, সম্প্রতি ফ্রান্সের একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর কার্টুন প্রদর্শনের কারণে দেশটির এক শিক্ষককে চেচেন বংশোদ্ভূত এক কিশোর গলা গেটে হত্যা করে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশটিতে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের তদন্তে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটি তার ক্লাসে শিক্ষার্থীদের মহানবীর (সা.) কার্টুন দেখিয়ে ছিলেন। ওই ব্যঙ্গচিত্র নিয়ে বিতর্ক আয়োজনের পর থেকেই হত্যার হুমকি পাচ্ছিলেন তিনি। গত শুক্রবার নিজ কর্মস্থল মিডল স্কুলটির সামনের সড়কেই হামলার শিকার হন ওই শিক্ষক। এ ঘটনার পর ইসলামিক বিচ্ছিন্নতাবাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ।
এক টুইটবার্তায় এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘আমরা কখনোই ইসলামি মৌলবাদীদের কাছে নত স্বীকার করব না। এ ছাড়া আমরা বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য গ্রহণ ও যুক্তিযুক্ত মতামতকে প্রতিহত করি না। এই বিচ্ছিন্নতাবাদ ফ্রান্সের মুসলমান সম্প্রদায়গুলোতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। ফ্রান্সের সরকারি ভবনে মহানবীকে (সা.) ব্যঙ্গ করে চিত্রপ্রদর্শন বন্ধ হবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তাই এদিকে ম্যাক্রোঁর এমন মন্তব্যের পর তার আচরণের কারণেই মূলত মুসলিম দেশগুলোতে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)- এর ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশের পর সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশে সহ বিশ্বের মুসলিম দেশগুলো ফ্রান্সের পণ্য বয়কটের আহ্বান জানাতে শুরু করে। এর পর দেখা গেছে, মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশে সহ বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোর দোকান থেকে ফরাসি কোম্পানির পণ্য সরিয়ে ফেলা হচ্ছে।
আর প্রতিটি দেশেই আহ্বান জানানো হচ্ছে যাতে তিনি নিজের ভুল স্বীকার করে মুসলিম বিশ্বের কাছে মাফ চান। আর ভবিষ্যতে যাতে তার দেশে এরকমটি পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেদিকে গভীরভাবে লক্ষ্য রাখতে সচেষ্ট থাকার জন্য । মুসলিম বিশ্বের দেশগুলো থেকে এ রকমেই আহবান করা হয়েছে।