স্নেহের কঙ্কাল
–মোহাম্মদ হাসানুর রহমান
মহানিশার নিভৃত আঁধারে একাকী পথিক চলে
মলিন বসন ক্লিষ্টদেহখানি তার ক্ষুৎপিপাসায় টলে,
রাতের মিতালী তারাশশীসনে শিশিরস্নাত মলয়
হাতছানি দেয় নিশার আতঙ্ক অযাচিত আশঙ্কায়।
তমসা ভীতি ব্যাকুল মন হঠাৎই থমকে দাঁড়ায়
পদস্পর্শে পথের ধুলোয় কী যেন গড়াগড়ি যায়,
ঝুঁকে পড়ে তারে তুলে নেয় হাতে পরম কৌতুহলে
উচ্ছ্বাস তার নিমেষে মিলায় মহাশঙ্খ সংস্পর্শে।
জেঁকে বসে ভয় টলে পদদ্বয় ভীত কম্পিত দেহমন
ভাবনাগুলো ঝড়োমেঘ হয় হারায় সাহস মনোবল,
মনে মনে ভাবে নির্জন রাতে হয়তো কোনো পথিক
ক্ষুদপিপাসায় কাতর হয়ে হারায়েছে জীবনের প্রদীপ।
হয়তো ছিলো রাজা মহারানী, অঙ্গনা-মহাবীর
হয়তো ছিল নিগৃহীত চণ্ডালী, দীনহীন মাহাত্মিক!
নর কী নারী চেনা নাহি যায়
খুলিখানি শুধু হাতে শোভা পাই,
প্রাণচাঞ্চল্য দম্ভ আমিত্ব বড়াই
সুরম্য প্রাসাদ ক্ষয়িষ্ণু, হেলায় হারায়।
একই মানুষ পঞ্চকালে বহুরূপী
জড়-কঙ্কালের জাত ধর্ম নাই,
নাম যশ খ্যাতি সুকর্মে শাশ্বত
মানবিকতা মরণের পরও অক্ষয়।