1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : News 52 Bangla : Nurul Huda News 52 Bangla
বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩, ১০:৪৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ :
১০ আর ই ব্যাটালিয়ন কর্তৃক ফ্রি চিকিৎসা সেবা কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ সংরক্ষিত ইনটেক হতে নিষিদ্ধ জাল উদ্ধার করে জ্বালিয়ে দেয়া হয় হেলমেট ও কাগজপত্র না থাকায় কাপ্তাইয়ে ভ্রাম্যমান অভিযানে ৪ হাজার টাকা জরিমানা পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে কাপ্তাই বিজিবির ত্রাণ ও নগদ অর্থ বিতরণ অগ্নিঝরা মার্চ — বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরী স্বাধীনতা দিবসে কাপ্তাইয়ে বীর শহীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করলেন সর্বস্বরের মানুষ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে কাপ্তাইয়ে আলোচনা সভা দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রের ১ম রোজা পালন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি কাপ্তাই উপজেলায় বীর নিবাস পেয়ে আমরা গর্বিত কাপ্তাইয়ে বিশ্ব যক্ষা দিবস উপলক্ষে শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা

জাবিতে ভর্তি ছাড়াই ক্লাস পরীক্ষা ও হল বরাদ্দ

প্রতিবেদকের নাম :
  • আপডেটের সময় : বৃহস্পতিবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০১৮

গত এক বছর ক্লাস করেছেন ছাত্রীটি। বেশ কয়েকটি টিউটোরিয়াল পরীক্ষায়ও অংশ নিয়েছেন। নিজ নাম ও রোল নম্বর অনুযায়ী পরীক্ষার নম্বরও প্রকাশ হয়েছে। মাস দুয়েক আগে হলে উঠেছেন। তার বন্ধুরাসহ সবাই জানেন তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

আটকা পড়লেন প্রথম বর্ষের সমাপনী পরীক্ষায় এসে। ৫০টি প্রবেশপত্র বিভাগে এলেও ওই শিক্ষার্থীর প্রবেশপত্র আসেনি। আর তাতেই বেরিয়ে আসে এক নতুন ভর্তি জালিয়াতির গল্প। এই গল্পে প্রেমও আছে।

এমনই অভিনব জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগে। অভিযুক্ত ছাত্রীর নাম মোফসেনা ত্বাকিয়া। তার গ্রামের বাড়ি শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ি উপজেলায়।

এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ ৪২ ব্যাচের আল-আমিন হোসেন শাহেদকে আটক করা হয়েছে। তিনি জয়পুরহাট জেলার মান্দা উপজেলার মৃত সাইদুর রহমানের ছেলে।

যেভাবে শুরু

প্রক্টর অফিস ও সাংবাদিকতা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় মোফসেনা ত্বাকিয়া কলা ও মানবিক অনুষদে (সি ইউনিট) অপেক্ষমাণ তালিকায় ছিলেন। তখন ফেসবুকের মাধ্যমে আল-আমিনের সঙ্গে ত্বাকিয়ার পরিচয়। আল আমিন তার নিজের পরিচয় গোপন করে ‘Mahim Mursed’ নামে একটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে ত্বাকিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

সেখানে আল আমিন নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর ৪৩তম আবর্তনের শিক্ষার্থী এবং বাড়ি গাজীপুর বলে দাবি করেন। এভাবেই তাদের কথা চলতে থাকে।

একপর্যায়ে ত্বাকিয়ার নানার মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেটের মাধ্যমে ‘উপাচার্যের কোটায়’ তাকে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেন আল আমিন। এ জন্য চার লাখ টাকা দাবি করা হয়। এরই মধ্যে তাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে ভর্তির সময় ত্বাকিয়ার মা একটি বিকাশ অ্যাকাউন্টে ২০ হাজার টাকা পাঠান, যেটি ছিল আল আমিনের।

ভর্তির সময় বিভাগ থেকে ভর্তি ফর্ম নেয়ার নিয়ম থাকলেও আল আমিন রেজিস্ট্রার ভবন থেকে ত্বাকিয়ার জন্য ফর্ম এনে নিজেই পূরণ করাসহ অন্যান্য কাজ করে দেন। তবে আল আমিন কোনো মূল সার্টিফিকেট ত্বাকিয়ার কাছ থেকে নেননি।

তখন থেকে ত্বাকিয়া নিজেকে সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসেবে জেনে আসছিলেন। বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষায়ও অংশ নেন। একপর্যায়ে তিনি শেখ হাসিনা হলে উঠে নিয়মিত থাকা শুরু করেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ত্বকিয়ার মায়ের সঙ্গে প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা কথা বলেন। তার মা দুই কিস্তিতে ২০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। তবে ভর্তি ফির জন্য তিনি এই টাকা দেন বলে জানেন।

যেভাবে ধরা পড়ল জালিয়াতি

জাবিতে কোটায় ভর্তির ক্ষেত্রে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয় দেরিতে। এসব ক্ষেত্রে রোল নম্বর ও নাম বিভাগে আসতে সময় লাগে। সে হিসেবে ত্বাকিয়ার নাম ও রোল না আসায় তিনি শিক্ষকদের বলেন তার রোল ২২৩৮। এটি হাজিরা খাতায় তুলে নিতে। শিক্ষকরাও তুলে নেন। বেশ কিছু টিউটোরিয়াল পরীক্ষাও দেন। এর মধ্যে তিনি মাঝে মাঝে বিভাগের অফিসে গিয়ে তার নাম ও রোল এসেছে কি না জানতে চাইতেন। কিন্তু বারবারই ফিরে আসেন।

এর মধ্যে প্রথম বর্ষের সমাপনী পরীক্ষা এসে পড়ায় বিষয়টি নিয়ে বিভাগের শিক্ষকরাও অফিসে কথা বলেন এবং রেজিস্ট্রার অফিসে খোঁজ নিতে বলেন। একপর্যায়ে উপাচার্যের কোটায় ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের নামের তালিকায় দেখা যায় ত্বাকিয়া যে রোল নিয়ে ক্লাস-পরীক্ষা দিচ্ছেন তা ‘উপাচার্যের কোটায়’ ভর্তি হওয়া আইআইটি বিভাগের এক ছাত্রীর।

মঙ্গলবার সকালে ত্বাকিয়াকে বিভাগে ডাকা হয়। বিভাগের সভাপতিকে তিনি জানান, আল আমিন তাকে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে উপাচার্য কোটায় ভর্তি করিয়ে দেন বলে তিনি জানেন।

আল আমিন ও ত্বাকিয়াকে আটক

এ ঘটনায় ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ৪২তম আবর্তনের আল আমিনকে মঙ্গলবার রাতে প্রক্টর অফিসে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আর ত্বাকিয়াকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করে বিভাগ কর্তৃপক্ষ।

ত্বাকিয়ার ভাষ্য

রাতে প্রতিবেদককে ত্বাকিয়া বলেন, আমি তো জানি যে আমি উপাচার্যের কোটায় ভর্তি হয়েছি। আজকে সকালে বিভাগে ডাকার পর জানলাম আমি ভর্তি হইনি। এ জন্য আমার কোনো নাম নেই। আমি আল আমিনকে বিশ্বাস করেছিলাম, কিন্তু ও আমার সাথে চিট করেছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে ত্বাকিয়া বলেন, আমি প্রথম দিকে বাকি তিন লাখ ৮০ হাজার টাকার কথা বলেছি। তখন ও বলেছে ‘আরে এখন আমি আর তুমি তো একই’। আমি মনে করেছি এখন তো আমাদের সম্পর্ক হয়েছে এ জন্য মনে হয় আর টাকা নেবে না। আর সম্পর্ক হয়ে যাওয়ার পর এসব বিষয় নিয়ে কথা হয়নি।

মাস দুয়েক আগে শেখ হাসিনা হলে ওঠেন ত্বাকিয়া। কীভাবে জানলেন যে সেটি আপনার হল? জানতে চাইলে বলেন, আল আমিন আমাকে বলেছে এ জন্য আমি উঠেছি। আর হল কার্ড করার জন্য হল প্রভোস্টের সাথে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন একটি ফর্ম পূরণ করতে হবে। এজন্য আমি চিন্তা করেছি তাহলে পরে করব। এর মাঝে ডিসেম্বরে আমাদের সম্পর্ক ভেঙে যায়।

আল আমিনের অস্বীকার

ডনজের কোনো দোষ নেই বলে দাবি আল আমিনের। তিনি বলেন, ‘আমি এসবের কিছুই জানি না। ওই মেয়ে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।’ তবে তার সাথে সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন তিনি। কেন পরিচয় গোপন করে ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে তার সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে জানতে চাইলে আল আমিন বলেন, ‘আমি এমনিতেই করেছিলাম।’

সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সভাপতি উজ্জ্বল কুমার মন্ডল ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘মেয়েটি আমাদের বিভাগে ক্লাস করেছে। আমাদের প্রাথমিক সন্দেহ হলে আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি সে আমাদের বিভাগের ছাত্রী না। তার ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। তার কোনো কাগজপত্র প্রশাসনের কাছে নেই। এ জন্য আমরা তাকে প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করি।’

প্রক্টর অধ্যাপক ড. তপন কুমার সাহা বলেন, ‘বিভাগীয় সভাপতির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা তদন্ত করে জালিয়াতির সত্যতা পেয়েছি। ত্বাকিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেনি। সুতরাং সে আমাদের ছাত্রী নয়। তাকে শাস্তি না দিয়ে মুচলেকা নিয়ে অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে জালিয়াতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে গতকাল রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডেকেটের সভায় আল আমিনকে সাময়িক বহিষ্কতার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া ঘটনা তদন্তে সাত সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এই বিভাগের আরও খবর
2019 All rights reserved by |Dainik Donet Bangladesh| Design and Developed by- News 52 Bangla Team.
Theme Customized BY News52Bamg;a