দুর্নীতির দুই মামলার যুক্তি উপস্থাপনের জন্য আদালত বসে গেলেও খালেদা জিয়ার দেখা নেই- ১৩ দিন আগের সেই চিত্রের উল্টোরূপ দেখা গেল এবার। আদালতে এসে বিএনপি চেয়ারপারসনকে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে এজলাস বসার।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন হয়ে গেছে আগেই। এবার চলছে অপর আসামিদের যুক্তি উপস্থাপন। এর মধ্যেও প্রধান আসামি হিসেবে খালেদা জিয়াকে উপস্থিত থাকতে হচ্ছে।
মঙ্গলবার বেলা ১১টা ৩৮ মিনিটের দিকে আদালতে উপস্থিত হন খালেদা জিয়া। কিন্তু আদালত বসার জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন তিনি।
আদালত বসতে কেন দেরি হচ্ছে-এমন প্রশ্নে এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, ‘ঢাকা বারের যেসব আইনজীবী মারা গেছেন তাদের স্বরণে একটি অনুষ্ঠান চলছে। এ কারণে বিচারক আখতারুজ্জামান জানিয়েছেন, আজ অর্ধেক দিবস কোর্ট চলবে। বেলা দুইটায় বসবে কোর্ট।’
দুদকের আইনজীবী বলেন, ‘এখন খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে তার আইনজীবীরা যদি তার চলে যাওয়ার বিষয়ে আবেদন দেন, তাহলে আমরা বাধা দেব না। তিনি চলে যেতে পারবেন।’
‘আগামীকাল ওনার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুবার্ষিকী। কালও যদি তিনি আদালতে না আসতে চান তাতেও আমরা বাধা দেব না।’
এর আগে ১৬ জানুয়ারি খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শেষ হয়। আর পরদিন থেকে শুরু হয় অন্য আসামিদের যুক্তি উপস্থাপন।
আর অন্য আসামিদের যুক্তি উপস্থাপনের দিক খালেদা জিয়ার আদালতে উপস্থিতি থেকে তাকে রেহাই দিতে সেদিনই আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। তবে সে আবেদন খারিজ করে দেন বিচারক।
গত ১০ জানুয়ারি একই মামলায় খালেদা জিয়া দেরিতে আদালতে হাজির হওয়ায় অসন্তোষ জানিয়েছিলেন বিচারক আখতারুজ্জামান। সেদিন তিনি খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৯টায় আদালতের কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা। আপনারা ১২টার সময় কেন আসলেন? আদালতের সময় কেন নষ্ট করছেন? কেন আপনারা সময়মতো আসতে পারেন না?’
‘আপনারা সকাল ১০টায় আসতে পারেন, তিনি (খালেদা জিয়া) কেন আসতে পারবেন না? এরপর থেকে আমি সকাল সাড়ে ১০টায় আদালতের কার্যক্রম শুরু করব। আপনারা সময়মতো আসবেন।’
২০০৮ সালের ৮ আগস্ট সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে তেজগাঁও থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে আসা দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করে দুদক।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক সাংসদ ও ব্যবসায়ী কাজী সালিমুল হক কামাল, সাবেক মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও জিয়াউর রহমানের বোনের ছেলে মমিনুর রহমান।
এখন আদালতে শরফুদ্দিন আহমেদের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন চলছে।