স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ দূতাবাস বৈরুত এর রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব সরকারের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এই দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের লেবানন কেন্দ্রীয় কমিটি ।
অভিযোগে বলা হয়, বাংলাদেশ দূতাবাস বৈরুত এর অবৈধ কর্মী বাংলাদেশে পাঠানোর কর্মসূচীর আওতায় দেশে ফেরৎ বাবদ প্রতি জনের কাছ থেকে ৩৫০(তিনশত পঞ্চাশ) ইউ এস ডলার করে নেওয়া হয়েছে। যেখানে বৈরুত টু ঢাকা এয়ার এরাবিয়া বিমান এর টিকিটের মূল্য ১৭০-১৮০ ইউএস ডলার মাত্র। বিশেষ কথা হলো সাধারণ প্রবাসীরা যে টাকা জমা দিয়েছে সেই টাকা কষ্টার্জিত অর্থ। এই অর্থের দূর্নীতি দূর্নীতির শীর্ষ বলে অভিহিত করা যায়। দূতাবাসের ক্যাশিয়ার মোবাশ্বের রহমান এর যোগসাজসে রাষ্ট্রদূত সাধারণ প্রবাসীর টাকা আত্মসাৎ করেছে। জব কন্ট্রাক্ট এর টাকা প্রতি সপ্তাহে আত্মসাৎ করা হচ্ছে। জব কণ্ট্রাক্ট এর টাকার পরিমান প্রতি মাসে মিনিমাম ১০,০০০/- (দশ হাজার) ইউএস ডলার। প্রায় ৪,০০০/-(চার হাজার) প্রবাসী থেকে ১৪,০০,০০০ (চৌদ্দ লক্ষ) ইউএস ডলার। এর মধ্যে ৭,০০,০০০ (সাত লক্ষ) ইউএস ডলার দুর্নীতি হয়েছে যা বাংলাদেশী টাকায় ৫ কোটি ৬০লক্ষ টাকা।
দূতাবাসের নিয়োগের ক্ষেত্রে দিদারুল আলম ও মোহাম্মদ মামুনকে প্রত্যেকের কাছ থেকে ৬,০০,০০০/- (ছয় লক্ষ) টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দিয়েছেন। দূতাবাসের চাকুরীর সময় উনার মতের বিরোধীতা করায় তাদেরকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছেন। ভিসা কন্ট্রাক্ট বা সত্যায়িত ও ভিসার বাজার নিজস্ব সিন্ডিকেট দ্বারা পরিচালিত করে প্রতি মাসে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। যার ফলে বিরূপ প্রভাব পড়েছে লেবাননে আসতে ইচ্ছুক বাংলাদেশী কর্মীদের উপর।
ওয়েলফেয়ারের টাকা কোন প্রকার অসহায় রোগী বা অসুস্থ্য প্রবাসীরা পাচ্ছে না। বিভিন্ন অজুহাতে টাকা আত্মসাৎ করে যাচ্ছে। জাতীয় দিবসগুলি নাম মাত্র অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে পালিত হচ্ছে। বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, রাষ্ট্রদূত সাহেব বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বলেন আপনাদের মন্ত্রী অর্থাৎ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী এসেছিলেন লেবাননে। আপনাদের জন্য কিছুই করতে পারেন নাই। এমনকি সরকারও কিছু করতে পারে নাই। যা কিছু করছি সবকিছু আমার চেষ্টায়। বর্তমান সরকার বিরোধী একজন রাষ্ট্রদূত এর পূর্ব প্রমাণেও পাওয়া গেছে, মোতালেব সরকার সাহেব যখন শেরেবাংলা কৃষি কলেজে শিক্ষক ছিলেন, তখন সক্রীয়ভাবে জামায়াত ইসলামের রাজনীতি করতেন। উনার রোকন নম্বর ছিল-১২৩৮।
এছাড়াও বাংলাদেশ দূতাবাস বৈরুত এর রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব সরকারের প্রত্যাহারের দাবী করে সংগঠনটি বলে, সর্বশেষ প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত সংশোধনীয় কমিটির সভাপতি ও সদস্যবৃন্দ লেবানন সফরে সংগঠনের কার্যক্রম দেখেছেন এবং গণসংবর্ধনায় উপস্থিত হয়ে প্রসংশা করেছেন। এ ঐতিহ্যবাহী সংগঠনের বিরুদ্ধে তথা সংগঠনের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছেন জামায়াতপন্থি রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব সরকার। মিথ্যা মামলা দিয়ে লেবানন আওয়ামী লীগের সংগ্রামী সভাপতি সাবেক ছাত্রনেতা জনাব আলী আকবর মোল্লাকে মিথ্যা অভিযোগে গ্রেফতার ও হয়রানি করা হয়েছে। ১৯৯৮ সাল থেকে প্রবাসীদের সমস্যা সমাধানের জন্য এবং আওয়ামী লীগকে সময় উপযোগী নেতৃত্বদান ও কর্মী তৈরীর কারিগর যিনি ইতোমধ্যে নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে তার মালিকের সার্বিক সহযোগিতায় প্রবাসীদের মাঝে ফিরে এসছে। সভাপতিসহ সিনিয়র ১৩জন নেতৃবৃন্দের নামে মিথ্যা মামলা করে নেতৃবৃন্দকে হয়রানি এবং আওয়ামী লীগকে ক্ষতিগ্রস্থ করার গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। নেতৃবৃন্দের নামে মিথ্যা দালালি মামলা দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ দূতাবাস বৈরুত এ অসহায় ও ক্ষতিগ্রস্থ অসুস্থ প্রবাসীদের সেবার মান নাই বললেই চলে। রাষ্ট্রদূতকে জিজ্ঞাসা করলে উত্তরে বলেন- বৈরুত দূতাবাসে লেবার উয়িং না থাকার কারণে সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এমনকি দূতাবাসে আগত প্রবাসীদের সাথে খুবই খারাপ আচরণ করা হয়।
রাষ্ট্রদূত সাহেব লেবাননের প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রবাসীদের সম্পর্কে ভুল তথ্য প্রদান করে দেশের ভাবমূর্তি ও প্রবাসীদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে। উল্লেখ্য, লেবাননের এই বিশাল শ্রম বাজার অর্থাৎ অদক্ষ/আধাদক্ষ এবং দক্ষ শ্রমিকের লেবাননের কর্মসংস্থান তৈরীতে প্রবাসীদের জন্য জি-টু-জি কোন কার্যক্রম এখনো স্বাক্ষরিত হয় নাই।
রাষ্ট্রদূতদের কাজ হল শ্রমিকদের সুবিধা ও অসুবিধা দেখা কিন্ত্র এক্ষেত্রে লেবাননে কর্মরত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের কাজ হল উল্টো। তিনি দুর্নীতির মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছেন কোটি কোটি টাকা। দুর্নীতিবাজ আব্দুল মোতালেবের নামে উল্লেখিত দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। লেবাননে থাকা বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের লেবানন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আলি আকবর মোল্লা, সহ-সভাপতি কাউছার আলম জনি ও সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেলসহ ১৮ জন আওয়ামীলীগ কর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ধরিয়ে দেন তিনি।
নেতাকর্মীদের মুক্তির ব্যবস্থা ও দুর্নীতিবাজ রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব এর বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীর স্বজনরা। সংগঠনটি আব্দুল মোতালেব সরকারের প্রত্যাহারের জোরদাবি জানিয়েছে।