লেবানন এর রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব সরকারের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ তুলেছে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের লেবানন কেন্দ্রীয় কমিটি। রাষ্ট্রদূত এর এই দূর্নীতির বিরুদ্ধে যাওয়ার কারনে আওয়ামীলীগ লেবানন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি, সহ-সভাপতি ও সাংগঠনিক সম্পাদকসহ আরও ১৮ জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি-তে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
গতকাল সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য পেশ করেন মো: রিপন(ভুক্তভোগী), মো: জাবেদ আলী(ভুক্তভোগী), সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল এর বাবা কামাল মিয়া ও মামা মো: হারুন, সভাপতি আলী আকবর মোল্লার স্ত্রী নারগিস বেগম।
রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব সরকারের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে তারা বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ দূতাবাস বৈরুত এর অবৈধ কর্মী বাংলাদেশে পাঠানোর কর্মসূচীর আওতায় দেশে ফেরৎ বাবদ প্রতি জনের কাছ থেকে ৩৫০(তিনশত পঞ্চাশ) ইউ এস ডলার করে নেওয়া হয়েছে। যেখানে বৈরুত টু ঢাকা এয়ার এরাবিয়া বিমান এর টিকিটের মূল্য ১৭০-১৮০ ইউএস ডলার মাত্র। দূতাবাসের ক্যাশিয়ার মোবাশ্বের রহমান এর যোগসাজসে রাষ্ট্রদূত সাধারণ প্রবাসীর টাকা আত্মসাৎ করেছে। জব কন্ট্রাক্ট এর টাকা প্রতি সপ্তাহে আত্মসাৎ করা হচ্ছে। জব কণ্ট্রাক্ট এর টাকার পরিমান প্রতি মাসে মিনিমাম ১০,০০০/-(দশ হাজার) ইউএস ডলার। প্রায় ৪,০০০/-(চার হাজার) প্রবাসী থেকে ১৪,০০,০০০ (চৌদ্দ লক্ষ) ইউএস ডলার। এর মধ্যে ৭,০০,০০০ (সাত লক্ষ) ইউএস ডলার দুর্নীতি হয়েছে যা বাংলাদেশী টাকায় ৫ কোটি ৬০লক্ষ টাকা। বিশেষ কথা হলো সাধারণ প্রবাসীরা যে টাকা জমা দিয়েছে সেই টাকা কষ্টার্জিত অর্থ। এই অর্থের দূর্নীতি দূর্নীতির শীর্ষ বলে অভিহিত করা যায়।
দূতাবাসের নিয়োগের ক্ষেত্রে দিদারুল আলম ও মোহাম্মদ মামুন প্রত্যেকের কাছ থেকে ৬,০০,০০০/- (ছয় লক্ষ) টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দিয়েছেন। দূতাবাসের চাকুরীর সময় উনার মতের বিরোধীতা করায় তাদেরকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছেন। ভিসা কন্ট্রাক্ট বা সত্যায়িত ও ভিসার বাজার নিজস্ব সিন্ডিকেট দ্বারা পরিচালিত করে প্রতি মাসে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। যার ফলে বিরূপ প্রভাব পড়েছে লেবাননে আসতে ইচ্ছুক বাংলাদেশী কর্মীদের উপর।
ওয়েলফেয়ারের টাকা কোন প্রকার অসহায় রোগী বা অসুস্থ্য প্রবাসীরা পাচ্ছে না। বিভিন্ন অজুহাতে টাকা আত্মসাৎ করে যাচ্ছে। জাতীয় দিবসগুলি নাম মাত্র অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে পালিত হচ্ছে। বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, রাষ্ট্রদূত সাহেব বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বলেন আপনাদের মন্ত্রী অর্থাৎ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী এসেছিলেন লেবাননে। আপনাদের জন্য কিছুই করতে পারেন নাই। এমনকি সরকারও কিছু করতে পারে নাই। যা কিছু করেছি সবকিছু আমার চেষ্টায়। বর্তমান সরকার বিরোধী একজন রাষ্ট্রদূত এর পূর্ব প্রমাণেও পাওয়া গেছে, মোতালেব সরকার সাহেব যখন শেরেবাংলা কৃষি কলেজে শিক্ষক ছিলেন, তখন তিনি সক্রীয়ভাবে জামায়াত ইসলামের রাজনীতি করতেন। উনার রোকন নম্বর ছিল-১২৩৮।
তারা আরও বলেন, রাষ্ট্রদূতদের কাজ হল শ্রমিকদের সুবিধা ও অসুবিধা দেখা। কিন্তু এক্ষেত্রে লেবাননে কর্মরত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের কাজ হল উল্টো। তিনি দুর্নীতির মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছেন কোটি কোটি টাকা। দুর্নীতিবাজ আব্দুল মোতালেবের নামে উল্লেখিত দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। লেবাননে থাকা বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের লেবানন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আলি আকবর মোল্লা, সহ-সভাপতি কাউছার আলম জনি ও সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেলসহ ১৮ জন আওয়ামীলীগ কর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ধরিয়ে দেন তিনি। রাষ্ট্রদূত মোতালেব সরকার নিজেই সোহেলকে মসজিদ থেকে ধরে নিজের হাতে তার গাড়িতে আটকে রেখে পুলিশকে খবর দিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে।
সবশেষে সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন আমরা এই অনিয়ম ও দুর্নীতিবাজ সরকারের উপযুক্ত শাস্তি চাই এবং লেবাননে যাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছেন তাদের নিঃস্বর্ত মুক্তি চাই।