আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমারে রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতায় জড়িত দেশটির সেনাবাহিনীর তীব্র সমালোচনা করেছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। তিনি নৃশংসতায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন। বুধবার সিঙ্গাপুরে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এক সম্মেলনের ফাঁকে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির সঙ্গে এক বৈঠকে পেন্স এ সমালোচনা করেছেন। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘সামরিক বাহিনী ও দুষ্কৃতকারীদের সহিংসতা ও নির্যাতনে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে চলে যেতে বাধ্য করেছে। লাখ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত ও প্রাণহানিসহ অবর্নণীয় ক্ষতি ডেকে এনেছে, তার জন্য যারা দায়ী তাদের বিচারে কী অগ্রগতি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র তা জানতে আগ্রহী।’

বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় পাওয়া বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে স্বেচ্ছায় মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাখাইনে ফিরিয়ে নিতে কী অগ্রগতি হয়েছে তা জানতে ওয়াশিংটন অপেক্ষা করছে বলেও জানান তিনি।

সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞ’ চালানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে আগেই দায়ী করেছিল। আগস্টে জাতিসংঘের একটি তদন্তদলও মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ‘গণহত্যার উদ্দেশ্যেই’ রাখাইনে বিস্তৃত আকারে হত্যাযজ্ঞ, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ চালিয়েছিল বলে জানায়।

পেন্সের বক্তব্যের জবাবে সুচি রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে তার আগের অবস্থানেই অটল থাকেন। গত বছরের আগস্টে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার প্রতিক্রিয়াতেই সেনাবাহিনী বৈধ অভিযান শুরু করে বলেও আবার মন্তব্য করেন তিনি।

সু চি বলেন, ‘অবশ্যই প্রত্যেক মানুষের দেখার দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন। ব্যাপারটা হচ্ছে- আপনি এসব দৃষ্টিভঙ্গির আদানপ্রদান ঘটাতে পারেন এবং একে অপরকে বোঝার চেষ্টা করতে পারেন।’

রোহিঙ্গা নিপীড়নের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান না নেওয়ায় চলতি সপ্তাহেই অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সুচিকে দেয়া তাদের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ সম্মানানাটি প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

গত বছর থেকে কারাগারে থাকা রয়টার্সের দুই সাংবাদিকের ব্যাপারে লাখ লাখ মার্কিনি ‘গভীর উদ্বিগ্ন’ বলেও মন্তব্য করেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট।

মিয়ানমারের ঔপনিবেশিক আমলে হওয়া আইন‘অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট’ লঙ্ঘনের দায়ে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ৭ বছরের কারাদণ্ডাদেশ পান রয়টার্সের দুই সাংবাদিক ওয়া লোন ও কেয়া সোয়ে ও। এ রায়ের বিরুদ্ধে গত ৫ নভেম্বর তাদের আইনজীবীরা আপিলও করেছেন।