চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি :
বরিশাল বিএম কলেজ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে চাকরির পিছু ছুটেছিলেন বহুদিন, চাকরি না জোটায় উদ্যোগ নিয়েছেন কিছু একটা করে সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌছাবেন ।
পরিবারের বড় সফিকুল ইসলাম সংসারের হাল ধরতেই নিজের অর্জিত জ্ঞান ও সামান্য পুঁজি নিয়ে স্বল্প পরিসরে কিছু গড়ার প্রত্যয়ে আবুবকরপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের নিজ বসত বাড়ীর আঙ্গিনায় প্রায় ১৬ শতাংশ জমিতে ফুল,ফলদ ও ঔষধি গাছের চারা উৎপাদন করে বিক্রি করছেন হাটবাজারের পাইকারি ও খুচরা চারা বিক্রেতাদের কাছে। সফিকুল ইসলাম জানান, ২০১৭ সালে সমাজকর্ম বিষয়ে বিএম কলেজ থেকে মাষ্টার্সে পড়াশুনা শেষ করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য ছুটেছেন কিন্তু চাকরি নামের সোনার হরিন হাতে না ধরা দেওয়ায় চাকরি খোঁজার পাশাপশি বেকারত্ব লাঘবে প্রস্তুতি নেন নিজেই কিছু করে সফলতা অর্জন করবেন। রাজশাহী ও রংপুর থেকে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের বিজ,ছোট চারা ও কলম আনেন তিনি। পরে সেসব বিজ,চারা, ও কলম পলি ব্যাগে লাগিয়ে মাটি ও জৈব সাড় দিয়ে পরিচর্যা করেন। ২থেকে ৪ সপ্তাহ পরে গাছে ফুল ও কলি দেখা দিলেই সে চারা বাজারে পাঠিয়ে দেন বিক্রির উদ্দেশ্যে। সফিকুলকে তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও এ চারা পরিচর্যাসহ বিক্রি পর্যন্ত সহযোগীতা করেন। সফিকুলের ফুল বাগানে রয়েছে ১০ প্রজাতির ফুলসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাল্টা,কমলা, লেবু,আম,লিচু,পেয়ারা,আনার,আঙ্গুর, ক্যাপসিকাম, কলা মরিচ, পেঁপে,বোম্বে মরিচ ও এলোব্যারার চারা। এসব চারা উপজেলার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হচ্ছে বেশ চড়া দামে। তিনি জানান ছাদ বাগান ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং বাসা বাড়ীতে লাগানোর উদ্দেশ্যে তার ফুলের চারা বেশ কদর করেই ক্রয় করেন ফুল প্রেমীসহ বৃক্ষপ্রেমীরা। তার বাগানের ফুলের চারা সেলোসিয়া ১০০,জিনিয়া ১০০,ইনকা ৫০,ইন্ডিয়ান গোলাপ ১৫০,দেশি গোলাপ ৫০-১০০,ডালিয়া ১০০,নারগিস১০০,স্টার ১০০,ভরা গাদা ৫০, ফলের চারা দেশি মাল্টা ও চায়না মাল্টা ১৫০-২০০,কমলা ২০০-২৫০,লিচু ১০০-১৫০,বারোমাসি লেবু ২০০-৫০০,বারোমাসি আম ৩০০-১০০০,কিউজে আম ও সূর্যের ডিম আম ২০০-২৫০, ফোর কেজি আম ১৫০,কাঁচা মিঠা আম ২০০,আম রূপালী ১৫০, পেয়ারা ১৫০,আনার ফল ২০০,আঙ্গুর ১৫০,দেশি ক্যাপসিকাম ও বেগুনী ক্যাপসিকাম ৫০,বোম্বে মরিচ ১০-১৫ কলা মরিচ ৫০ ও ঔষধি এলোব্যারার চারা ৫০-১০০টাকায় খুচরা বিক্রয় করছেন। অল্প পুঁজিতে বেশি লাভ হওয়ায় দেশি ও ছোট কেরালা জাতের নারককেলের চারা উৎপাদনের জন্য আরোও কিছু জমিও নির্বাচন করেছেন তিনি। সফিকুল ইসলাম বলেন, নিজ প্রচেষ্টায় স্বাবলম্বী হওয়ার একটি আত্মগৌরব রয়েছে। অভাবের সংসারে আমার চেষ্টা ও আমার স্বপ্নপুরণ,পরিবারের হাল ধরা এবং বেকারত্ব দূরিকরণেই আমার এ উদ্যোগ। পাশাপাশি নিজ এলাকায় উন্নত ও নতুন জাতের ফুল ও দির্ঘমেয়াদী ফল গাছের বিকাশ ঘটানোও আমার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। তবে সরকারিভাবে প্রশিক্ষণসহ আর্থিক সহযোগীতা পেলে ফুল ও ফলের চারা উৎপাদনে অধিক সফলতা আসবে বলেও তিনি মনে করেন।