গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে (ডিআরসি) সংঘাতের কারণে বাস্তুচ্যুত হওয়া মানুষের প্রতি বিশ্বনেতাদের উদাসীনতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থার প্রধান। নরওয়ের রিফিউজি কাউন্সিলের (এনআরসি) প্রধান ইয়ান এgel্যান্ড বলেছেন, ডিআরসিতে মানবিক সহায়তা কমে যাওয়ায় সেখানকার বাস্তুচ্যুত মানুষ চরম দুর্দশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে এম২৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠীর অগ্রযাত্রার কারণে প্রায় ১২ লক্ষাধিক মানুষ ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। গুমার কাছাকাছি আশ্রয়শিবিরগুলোতে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে। সেখানে খাদ্য, স্বাস্থ্যবিধি এবং বাসস্থানের অভাবে তাদের জীবন “যেন সুতার উপর ঝুলে আছে”।
এনআরসি প্রধান বলেন, “পূর্ব ডিআরসির বেসামরিক নাগরিকদের প্রতি বিশ্বনেতাদের এই চরম অবহেলা অত্যন্ত লজ্জাজনক।” তিনি বিশেষভাবে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে বলেন, এই দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে এই অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগকে উপেক্ষা করে আসছে।
ইয়ান এgel্যান্ড জানান, উদ্বাস্তু শিবিরে আশ্রয় নেওয়া মানুষেরা মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। অনেক শিবিরে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত মানুষ বাস করছে। পর্যাপ্ত স্যানিটেশন ব্যবস্থা নেই। এমনকি একটি ক্লাসরুমে ২৫ জন পর্যন্ত মানুষ ঘুমাতে বাধ্য হচ্ছে, সকালে যাদের জিনিসপত্র সরিয়ে ক্লাস করার ব্যবস্থা করতে হয়। বিকালে আবার তারা সেখানে আশ্রয় নেয়। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে একে “অমানবিক” বলছেন তিনি।
২০২২ সাল থেকে এম২৩ বিদ্রোহীদের তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। রুয়ান্ডার মদদপুষ্ট এই গোষ্ঠী ডিআরসির পূর্বাঞ্চলের বিশাল এলাকা দখল করে নিয়েছে। এর ফলে উদ্বাস্তুরা তাদের আশ্রয়শিবির ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে তাদের মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জায়গা খালি করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
এgel্যান্ড সতর্ক করে বলেন, উদ্বাস্তুদের খাদ্য ও বাসস্থান নিশ্চিত করতে জরুরি ভিত্তিতে রাজনৈতিক সমাধান এবং নগদ সহায়তা প্রয়োজন। তিনি উল্লেখ করেন, মানবিক সংস্থাগুলোও বর্তমানে অর্থ সংকটে ভুগছে। বিশেষ করে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময় মার্কিন সহায়তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেক প্রকল্পের কাজ এখনো শুরু করা যায়নি।
নরওয়ের মতো কিছু দেশ দ্রুত সহায়তা দিলেও অন্যান্য সংস্থাগুলো হিমশিম খাচ্ছে। এgel্যান্ডের মতে, “সংঘাত বাড়ার এই সময়ে উদ্বাস্তুদের সাহায্য করার যথেষ্ট সুযোগ থাকা সত্ত্বেও অর্থের অভাব দেখা যাচ্ছে। এর ফলে মানুষগুলো শিবিরে মানবেতর জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে, শিশুরা স্কুলে যেতে পারছে না।”
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান