কাপ্তাই প্রতিনিধি।
আগামী ৯ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। যা আগামী ১৩ অক্টোবর দশমী তিথিতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হবে।
আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে কাপ্তাই উপজেলার ৮টি মন্ডপে চলছে দুর্গা পূজার প্রস্তুতি। বর্তমানে প্রতিমা তৈরির পাশাপাশি মঞ্চ সাজ-সজ্জার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে মৃৎশিল্পী এবং আয়োজকরা। তারা সকলেই দিন-রাত পরিশ্রম করে আপন মনে নিপুণ হাতে তৈরি করছে দেবী দুর্গার প্রতিমা। একাগ্র চিত্তে মনের মাধুরী মিশিয়ে মঞ্চ সজ্জার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে পূজা আয়োজক কমিটির সদস্যরা।
পুরাণ অনুযায়ী দুর্গা শব্দের অর্থ অপ্রতিরোধ্য। হিন্দু শাস্ত্র মতে এবছর মহাষষ্ঠীতে এই মহামায়া দশভূজা দেবী দুর্গার আগমন ঘটবে দোলায়(পালকিতে) করে এবং পূজার সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে ঘোটকে(ঘোড়ায়) চড়ে কৈলাশে ফিরবেন।
কাপ্তাই উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, এবছর রাঙামাটি জেলাধীন কাপ্তাই উপজেলায় মোট ৮টি মন্ডপে অনুষ্ঠিত হবে দুর্গাপুজা। এরমধ্যে রাইখালী বাজার শ্রী শ্রী ত্রিপুরা সুন্দরী কালী বাড়ি পুজা মন্ডপ, চন্দ্রঘোনা শ্রীশ্রী দক্ষিণেশ্বর সিদ্ধেশ্বরী কালীবাড়ি, মিশন এলাকার শ্রী শ্রী সার্বজনীন রাধাকৃষ্ণ মন্দির, কেপিএম এলাকার শ্রীশ্রী কর্ণফুলী প্রকল্প শ্রী হরি মন্দির, শিলছড়ি এলাকার শ্রী শ্রী দূর্গা মন্দির রাম সীতা সংঘ, কাপ্তাই লকগেইট শ্রী শ্রী জয় কালী মন্দির, ব্রিকফিল্ড শ্রী শ্রী সার্বজনীন মাত্রিমন্দির, শিলছড়ি শ্রী শ্রী বাবা লোকনাথ মন্দির সেবাশ্রম মন্দির পূজা মন্ডপ সহ ৮টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপুজা অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে আসন্ন দুর্গাপুজাকে সামনে রেখে কাপ্তাই উপজেলা পুজা উযযাপন পরিষদের আইন-শৃঙ্খলা সভার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
কাপ্তাই উপজেলা পূজা উযযাপন পরিষদের সভাপতি দীপক কান্তি ভট্টাচায্য জানান, প্রতিবছরের মতো এবারও আমরা কাপ্তাইয়ে শারদীয় দুর্গাপূজার আয়োজন করবো। যেখানে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা এবং মায়ের আরাধনা করা হবে। কাপ্তাইয়ে যেন সুশৃঙ্খল, সুন্দর পরিবেশে আমরা দুর্গাপূজা উদযাপন করতে পারি সেজন্য কাপ্তাই উপজেলা প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগীতা কামনা করছি।
কাপ্তাই উপজেলা পূজা উযযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়তোষ ধর পিন্টু জানান, আমাদের কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন পরিষদের দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী কাপ্তাইয়ের পূজামন্ডপে দুর্গা পূজা উদযাপন করা হবে। এছাড়া প্রতিবারের মতো এবারও বিজয়া দশমীর দিন কর্ণফুলী নদীতে বিজয়া র্যালীর আয়োজন করার পরিকল্পনা রয়েছে। যেখানে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মহোদয় প্রধান অতিথি হয়ে থাকবেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। তবে এবছর তিনি দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রতিটি পূজামন্ডপে আর্থিক সহযোগীতা প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারসহ সকলের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন।
কাপ্তাই থানার ওসি মো. আবুল কালাম জানান, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। পূজায় সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকবে। প্রতিটি মন্দিরেই থানা পুলিশের পাশাপাশি আনসার ও গ্রাম পুলিশের স্বেচ্ছাসেবক দল ও মোবাইল টিম মাঠে থাকবে। দেবী বিসর্জন পর্যন্ত সার্বক্ষণিক প্রশাসনিক নজরদারি থাকবে।