একটি ছেলের রুচি এবং সাজপোশ পরিবর্তনের কারণে মায়ের উদ্বেগ, যা নিয়ে অনলাইন আলোচনা।
আজকালকার দিনে, পরিবারের সদস্যদের পছন্দ-অপছন্দ নিয়ে আলোচনা প্রায়ই শোনা যায়। বিশেষ করে যখন তরুণ প্রজন্মের রুচি এবং জীবনযাত্রার ধরনে পরিবর্তন আসে, তখন প্রবীণদের মধ্যে কিছু উদ্বেগ দেখা যায়।
সম্প্রতি, যুক্তরাজ্যের একটি অনলাইন ফোরামে তেমনই এক মায়ের উদ্বেগের কথা জানা গেছে, যিনি তার ২২ বছর বয়সী ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। ছেলেটির নতুন হেয়ারস্টাইল, শিল্পী হওয়ার আগ্রহ এবং একটি পডকাস্ট শুরু করার পরিকল্পনা—এসব কিছুই যেন মায়ের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ছেলেটির মা, যিনি নিজের পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি, জানিয়েছেন যে তার ছেলে ইদানীং বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটিয়েছে। তিনি বলেন, ছেলেটি নাকি এখন শিল্পকলার প্রতি বেশি আগ্রহী, বন্ধুদের সাথে মিলে একটি পডকাস্ট শুরু করতে চাইছে, এবং তার পুরনো স্টাইলও বদলে ফেলেছে।
মায়ের মতে, ছেলেটি এখন তার চুল ছোট করে কাটে না, বরং ব্যাকব্রাশ করা লম্বা চুলের সঙ্গে হালকা গোঁফ রেখেছে, যা দেখতে বেশ ‘অগোছালো’ লাগে। ছেলের এই পরিবর্তনে মা কিছুটা হতাশ এবং উদ্বিগ্ন। তিনি মনে করেন, তার ছেলে হয়তো এমন একজন ‘নির্ভরযোগ্য’ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে না, যেমনটি তিনি এবং তার স্বামী চেয়েছিলেন।
মা তার উদ্বেগের কারণ হিসেবে আরও জানান, তিনি সম্প্রতি তার ছেলেকে এড শিরানের একটি ভিডিও দেখাতে দেখেছেন, যেখানে শিল্পী তার শরীরে আঁকা ট্যাটু দেখাচ্ছিলেন। মায়ের মনে হয়েছে, শিল্পী জীবন বেশ কঠিন, এবং তিনি চান না তার ছেলে কোনো ট্যাটু করুক। তিনি প্রশ্ন করেন, তিনি কি অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন?
মায়ের এই উদ্বেগের প্রতিক্রিয়ায়, ফোরামে অনেকে মন্তব্য করেছেন। তাদের অধিকাংশই মায়ের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে একমত হননি। বরং তারা পরামর্শ দিয়েছেন, ছেলেকে নিজের সিদ্ধান্ত নিতে দেওয়া উচিত।
তাদের মতে, এই বয়সে ছেলেটি নিজের পরিচয় খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে, এবং তার এই স্বাধীনতা দেওয়া উচিত। কেউ কেউ বলেছেন, ছেলের এই পরিবর্তনগুলো আধুনিক সমাজে খুব একটা প্রভাব ফেলবে না। বরং, পডকাস্ট শুরু করার আগ্রহ থেকে বোঝা যায়, ছেলেটি সৃজনশীল, আত্মবিশ্বাসী এবং অন্যদের সঙ্গে মিশুক।
আলোচনায় আরও জানা যায়, অনেকে মনে করেন, ছেলের ব্যক্তিগত রুচি এবং আগ্রহ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হতে পারে। তাই, বর্তমানের এই পরিবর্তনই তার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে, এমনটা নাও হতে পারে। তারা মাকে সতর্ক করে বলেন, ছেলেকে তার নিজের মতো করে বাঁচতে না দিলে, মা ও ছেলের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের পরিস্থিতি আধুনিক সমাজে খুব সাধারণ। বাবা-মায়ের উচিত, ছেলেমেয়েদের পছন্দ-অপছন্দকে সম্মান জানানো এবং তাদের স্বাধীনতা দেওয়া। কারণ, প্রত্যেক মানুষের নিজস্ব একটি জগৎ থাকে, যেখানে সে নিজের মতো করে বাঁচতে চায়।
পরিবারের সমর্থন এবং বোঝাপড়া থাকলে, তরুণ প্রজন্ম আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবে এবং ভবিষ্যতের পথ খুঁজে নিতে পারবে।
তথ্য সূত্র: পিপল