চীনের অর্থনীতিতে অস্থিরতা, বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাবে হ্রাস শিল্প উৎপাদনে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য উত্তেজনার মধ্যে চীনের অর্থনীতিতে কিছুটা দুর্বলতা দেখা যাচ্ছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল মাসে দেশটির শিল্প উৎপাদন (কারখানা উৎপাদন) বেড়েছে ৬.১ শতাংশ, যেখানে মার্চ মাসে এই হার ছিল ৭.৭ শতাংশ। খুচরা বিক্রিও (খুচরা পণ্য বিক্রি) কমেছে, এপ্রিল মাসে এই খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫.১ শতাংশ, যা আগের মাসের ৫.৯ শতাংশের চেয়ে কম।
তবে, অর্থনীতির কিছু ইতিবাচক দিকও রয়েছে। চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশটির জিডিপি বা মোট দেশজ উৎপাদন (GDP) বেড়েছে ৫.৪ শতাংশ, যা বিশ্লেষকদের পূর্বাভাসের চেয়ে বেশি।
এছাড়া, এপ্রিল মাসে বেকারত্বের হার সামান্য কমে ৫.১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এই মুহূর্তে চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য যুদ্ধ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দুই দেশের মধ্যে শুল্ক আরোপের কারণে অর্থনৈতিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
যদিও সম্প্রতি জেনেভায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে দুই দেশ বাণিজ্য শুল্ক কমানোর বিষয়ে রাজি হয়েছে, যা ৯০ দিনের জন্য কার্যকর হবে। এই চুক্তির ফলে, যুক্তরাষ্ট্র চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক ১৪৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০ শতাংশে নামিয়েছে।
অন্যদিকে, চীনও তাদের শুল্ক ১২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশে এনেছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে চীনের শিল্প উৎপাদন এবং রপ্তানিতে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়তে পারে। অনেক কোম্পানি চীন থেকে তাদের উৎপাদন সরিয়ে নিতে পারে, যার ফলে দেশটির অর্থনীতিতে আরও চাপ সৃষ্টি হতে পারে।
তবে, শুল্কের এই অনিশ্চয়তার মধ্যে অনেক কোম্পানি এখনই বড় ধরনের বিনিয়োগ করতে দ্বিধা বোধ করতে পারে।
চীনের অর্থনীতির এই পরিবর্তন বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, চীন বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার।
চীনের অর্থনৈতিক গতিবিধির পরিবর্তন বাংলাদেশের বাণিজ্য, বিশেষ করে তৈরি পোশাক (আরএমজি) শিল্পের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকদের জন্য পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা এবং সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা