বিখ্যাত মার্কিন র্যাপার শন কম্বস, যিনি ডিডি নামে পরিচিত, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা গুরুতর অভিযোগের শুনানিতে সাক্ষী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান নতুন মোড় এনেছে। প্রাক্তন বান্ধবী ক্যাসি ভেনচুরার উপর শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত ডিডির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে ভেনচুরার বন্ধু এবং সহযোগী, এমনকি ডিডির প্রাক্তন সহকারীরাও বিস্ফোরক সব তথ্য দিয়েছেন।
সোমবারের শুনানিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী ছিলেন পপ গায়িকা ডন রিচার্ড। ড্যানি কেইন ব্যান্ডের প্রাক্তন এই সদস্য জানান, তিনি ডিডিকে প্রায়ই ক্যাসি ভেনচুরার উপর শারীরিক নির্যাতন করতে দেখেছেন। রিচার্ডের ভাষ্যমতে, তিনি ডিডিকে ভেনচুরার উপর ঘুষি মারতে, গলা টিপে ধরতে, মারতে, লাথি মারতে দেখেছেন।
একবার নির্যাতনের পর ভেনচুরার আঘাত লুকানোর জন্য সানগ্লাস পরতে হয়েছিল। রিচার্ড আরও জানান, নির্যাতনের ঘটনার পর ডিডির নিরাপত্তা কর্মীরাও কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাতেন না।
আরেক সাক্ষী ছিলেন ক্যাসির প্রাক্তন বন্ধু কেরি মরগান। তিনি জানান, ২০১৮ সালে ডিডির দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার কিছু দিন পরেই তিনি ক্যাসির সঙ্গে বন্ধুত্ব ত্যাগ করেন। মরগান আদালতে জানান, ডিডি তাকেও কাঠের হ্যাঙ্গার দিয়ে আঘাত করেছিলেন।
তিনি আরও জানান, ঘটনার পর ভেনচুরার থেকে তিনি $30,000 (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা, ৩১শে মে ২০২৪ তারিখের বিনিময় হার অনুযায়ী) পাওয়ার কথা শুনেছিলেন এবং একটি গোপনীয়তা চুক্তিতে (এনডিএ) স্বাক্ষর করতেও দেখেছিলেন। মরগান আরও জানান, ডিডি ভেনচুরার জীবনযাত্রার সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতেন, যার কারণে ভেনচুরা ডিডির বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পেতেন না।
শুনানিতে ডিডির প্রাক্তন সহকারী ডেভিড জেমসও সাক্ষ্য দেন। জেমস জানান, ভেনচুরা তাকে বলেছিলেন যে এই জীবনযাত্রা খুবই কঠিন। এর উত্তরে জেমস তাকে এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
জবাবে ভেনচুরা জানান, ডিডি তাঁর সঙ্গীতজীবন নিয়ন্ত্রণ করেন, তাঁর ফ্ল্যাটের ভাড়া দেন এবং নিয়মিত ভাতা দেন। জেমস আরও জানান, ডিডি ভেনচুরার সম্পর্কে বলতেন, “আমি তাকে যেভাবে চাই, সেভাবেই পেয়েছি, সে এখনো তরুণী।”
অন্যদিকে, ডিডির আইনজীবীরা এই অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন। তাঁরা বলছেন, ডিডি এবং ভেনচুরার মধ্যে সম্পর্কটি পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে গড়ে উঠেছিল।
ডিডির আইনজীবীরা সাক্ষীদের স্মৃতি এবং তাঁদের ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। ডিডির বিরুদ্ধে ধর্ষণের ষড়যন্ত্র, মানব পাচার এবং পতিতাবৃত্তির উদ্দেশ্যে নারী পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
দোষী সাব্যস্ত হলে ডিডির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।