মাথাব্যথার যন্ত্রণায় নাজেহাল? কয়েকটি অপ্রত্যাশিত কারণ যা হয়তো আপনার অজানা!
মাথাব্যথা, বিশেষ করে মাইগ্রেনের সমস্যা এখন বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মানুষের কাছে এক বিরাট উদ্বেগের কারণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সারা বিশ্বে প্রায় এক বিলিয়নেরও বেশি মানুষ মাইগ্রেনের শিকার।
তীব্র যন্ত্রণা, বমি বমি ভাব, আলো এবং শব্দের প্রতি সংবেদনশীলতা—এগুলো মাইগ্রেনের সাধারণ উপসর্গ। অনেক সময় সাধারণ ব্যথানাশক ওষুধেও এই যন্ত্রণা কমে না।
চিকিৎসকের পরামর্শে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এনে এবং কিছু বিষয় এড়িয়ে চললে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু মাইগ্রেনের কারণগুলো সবসময় সহজভাবে চিহ্নিত করা যায় না।
আসুন, তেমন কয়েকটি অপ্রত্যাশিত কারণ সম্পর্কে জেনে নিই, যা হয়তো আপনার মাথাব্যথার মূল উৎস হতে পারে:
১. সুগন্ধীযুক্ত আবর্জনা ফেলার ব্যাগ (Scented garbage bags):
ঘরের আবর্জনা ফেলার ব্যাগের গন্ধেও যে মাইগ্রেন হতে পারে, তা কি আপনি আগে জানতেন? সুগন্ধীযুক্ত এই ধরনের ব্যাগ অনেকের মাথাব্যথার কারণ হতে পারে।
সুগন্ধীযুক্ত বডি স্প্রে বা পারফিউমের গন্ধের কারণেও অনেকের মধ্যে মাইগ্রেনের সমস্যা দেখা যায়।
২. অতিরিক্ত সূর্যের আলো (The sun):
প্রখর রোদ এবং অতিরিক্ত গরমে অনেকের মাইগ্রেনের সমস্যা বাড়ে। সরাসরি সূর্যের আলোতে বেশিক্ষণ থাকলে মাথাব্যথা শুরু হতে পারে।
গরমকালে বাইরে বের হলে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা, ছায়াযুক্ত স্থানে বিশ্রাম নেওয়া, এবং টুপি ব্যবহারের মতো পদক্ষেপগুলো এক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।
৩. মানসিক শান্তির মুহূর্ত (Periods of calm):
বিশ্রাম বা মানসিক শান্তির সময়েও মাইগ্রেন হতে পারে! একটানা উদ্বেগের মধ্যে থাকার পর, যখন শরীর এবং মন শিথিল হয়, তখনও কিছু মানুষের মধ্যে মাইগ্রেনের সমস্যা দেখা যায়।
৪. সন্তান জন্ম দেওয়া (Giving birth):
গর্ভাবস্থা এবং সন্তান জন্ম দেওয়ার পরে মহিলাদের শরীরে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে মাইগ্রেন হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে, সন্তান জন্ম দেওয়ার কয়েক সপ্তাহ বা মাস পরেই এই সমস্যা শুরু হয়।
৫. ভ্রমণ (Traveling):
ভ্রমণের সময় আবহাওয়ার পরিবর্তন, ঘুমের অভাব, খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন এবং মানসিক চাপের কারণে অনেকের মাইগ্রেন হতে পারে।
ভ্রমণের সময় পর্যাপ্ত বিশ্রাম, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত ঘুমের রুটিন অনুসরণ করা এক্ষেত্রে জরুরি।
৬. ফ্লুরোসেন্ট আলো (Fluorescent lighting):
কিছু মানুষের মধ্যে উজ্জ্বল ফ্লুরোসেন্ট আলো বা এলইডি লাইটের কারণে মাইগ্রেন হতে পারে। কম্পিউটার বা মোবাইল স্ক্রিনের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এই ধরনের আলো এড়িয়ে যাওয়া এবং স্ক্রিনের উজ্জ্বলতা কমিয়ে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।
৭. দুর্বল মুখ স্বাস্থ্য (Poor oral health):
দাঁতের সমস্যা, যেমন – দাঁতের সারিবদ্ধতা, মাড়ির রোগ বা দাঁত ক্ষয়ের কারণেও মাইগ্রেন হতে পারে।
মুখ ও দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে নিয়মিত ডেন্টিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
৮. টেক নেক (Tech neck):
মোবাইল ফোন বা কম্পিউটারের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে ঘাড়ে ব্যথার সৃষ্টি হয়, যা মাইগ্রেনের কারণ হতে পারে।
স্ক্রিনের দিকে ঝুঁকে থাকার পরিবর্তে সোজা হয়ে বসা এবং মাঝে মাঝে বিরতি নিয়ে ঘাড়ের ব্যায়াম করা এক্ষেত্রে উপকারী।
উপরে উল্লেখিত কারণগুলো ছাড়াও, মাইগ্রেনের আরও অনেক কারণ থাকতে পারে।
আপনার যদি ঘন ঘন মাথাব্যথার সমস্যা হয়, তবে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। মাইগ্রেন প্রতিরোধের জন্য জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন আনা এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা খুবই জরুরি।
তথ্য সূত্র: পিপলস