সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপতি আহমেদ আল-শারা তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের সঙ্গে ইস্তাম্বুলে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। শনিবার অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে সিরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী মুরহাফ আবু কাসরা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল-শাইবানিও উপস্থিত ছিলেন।
এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল দু’দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর করা এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার পুনর্গঠন নিয়ে আলোচনা করা।
বৈঠকের কয়েক দিন আগে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে শুরু করেছে। এর কারণ হিসেবে জানা যায়, আঞ্চলিক মিত্রদের অনুরোধের ভিত্তিতে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই সিদ্ধান্ত নিতে রাজি হয়েছিলেন।
নিষেধাজ্ঞার ফলে সিরিয়ার অর্থনীতিতে যে খারাপ প্রভাব পড়েছিল, তা থেকে উত্তরণের পথ খুঁজতেই এই পদক্ষেপ। সিরিয়ার সরকার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে এবং এটিকে দেশের মানবিক ও অর্থনৈতিক সংকট কমানোর ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
১৯৭৯ সালে তৎকালীন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট হাফেজ আল-আসাদের আমলে সিরিয়ার ওপর প্রথম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। তবে, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ শুরুর পর, বিশেষ করে ২০১১ সালে সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর দমন-পীড়ন চালানোর পরে এই নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করা হয়।
এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ছিল, বাশার আল-আসাদ সরকারের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দেশটির পুনর্গঠন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা। নিষেধাজ্ঞাগুলোর কারণে সিরিয়ার অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এবং দেশটির সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মানও নিম্নগামী হয়েছিল।
আহমেদ আল-শারা এর আগে তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় এরদোয়ানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। এছাড়াও, তিনি সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গেও দেখা করেছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সিরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে এই বৈঠকগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে সিরিয়ার ভবিষ্যৎ এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা