হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক, যিনি ব্যাঙের ভ্রুণ পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত, এখনো যুক্তরাষ্ট্রের হেফাজতে রয়েছেন। সম্প্রতি, আদালত তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিলেও, ফৌজদারি অভিযোগের কারণে তিনি মুক্তি পাননি।
ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে বোস্টন লোগান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৩৩ বছর বয়সী কসেনিয়া পেট্রোভাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি একজন রুশ নাগরিক এবং হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের গবেষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সীমান্ত শুল্ক বিভাগের কর্মকর্তাদের মিথ্যা তথ্য দেওয়া এবং জীববৈজ্ঞানিক উপাদান ঘোষণা না করার অভিযোগে তাকে আটক করা হয়।
আদালতের শুনানিতে জানা যায়, পেট্রোভা বিমানবন্দরে পরীক্ষার সময় ব্যাঙের ভ্রুণ সম্পর্কিত কিছু উপাদান সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছিলেন, যা তিনি ঘোষণা করেননি। এমনকি কর্মকর্তাদের কাছে বিষয়টি গোপন করার চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে, তার ফোন পরীক্ষা করে দেখা যায়, সহকর্মীরা তাকে বিমানবন্দরে মালামাল বহন করার বিষয়ে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করার জন্য সতর্ক করেছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও শুল্ক বিভাগ (ICE) সূত্রে জানা যায়, এই ঘটনার জেরে পেট্রোভার ভিসা বাতিল করা হয়েছে। তার আইনজীবীর দাবি, এই ঘটনার জন্য সাধারণত জরিমানা করা হয়, কিন্তু পেট্রোভার ক্ষেত্রে সরাসরি ভিসা বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে, তিনি লুইসিয়ানার একটি ডিটেনশন সেন্টারে বন্দী রয়েছেন।
এদিকে, পেট্রোভার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি এখন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আদালতে ফৌজদারি মামলার মুখোমুখি। প্রসিকিউটরদের মতে, পেট্রোভা ইচ্ছাকৃতভাবে কর্মকর্তাদের মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন এবং তার ভিসা একটি অধিকার ছিল না, বরং একটি বিশেষ সুবিধা ছিল।
অন্যদিকে, পেট্রোভার আইনজীবীরা বলছেন, এই ঘটনার সূত্রপাত সামান্য একটি ভুলের কারণে, যার ফলস্বরূপ তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো অতিরঞ্জিত। তারা আরও অভিযোগ করেছেন যে, সরকারের পক্ষ থেকে তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। পেট্রোভা আশঙ্কা করছেন, তাকে যদি রাশিয়াতে ফেরত পাঠানো হয়, তাহলে সেখানে তিনি রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার হতে পারেন। কারণ, তিনি অতীতে ইউক্রেন যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন।
পেট্রোভা তার গবেষণাগারে ফিরে যেতে আগ্রহী। সেখানে তিনি একটি বিশেষ মাইক্রোস্কোপ ব্যবহার করেন, যা ক্যান্সার এবং আলঝেইমার্সের মতো রোগের গবেষণা করতে সহায়ক। তিনি বিশ্বাস করেন, তার গবেষণা এই রোগগুলোর চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন