মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন কোম্পানির উপর তাদের ‘ডাইভারসিটি, ইক্যুইটি ও ইনক্লুশন’ (DEI) নীতিগুলি বাতিলের জন্য চাপ সৃষ্টি করছে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। এমনটাই জানা যাচ্ছে।
এই নীতির বিরোধিতা করে, বিশেষ করে মিডিয়া কোম্পানিগুলোর একত্রীকরণ বা অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে বাধা দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে ফেডারেল কমিউনিকেশনস কমিশন (FCC)।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্পোরেট জগৎ এক কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন DEI নীতিকে ‘অবৈধ ও অনৈতিক বৈষম্য’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
এর ফলস্বরূপ, যে সমস্ত কোম্পানি DEI নীতি অনুসরণ করে, তাদের একত্রীকরণ প্রক্রিয়া আটকে দেওয়া হতে পারে। এফসিসি চেয়ারম্যান ব্রেন্ডন ক্যার এই বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন এবং মিডিয়া কোম্পানিগুলিকে DEI নীতি থেকে সরে আসার জন্য উৎসাহিত করছেন।
তাঁর মতে, DEI নীতি জনস্বার্থের পরিপন্থী।
এই সিদ্ধান্তের ফলে, অনেক কোম্পানি তাদের DEI প্রোগ্রামগুলি পর্যালোচনা করতে বা পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছে। কারণ, তারা প্রশাসনের সম্ভাব্য কঠোর নজরদারি এড়াতে চাইছে।
যদিও, এই বিষয়ে আইনি বিশেষজ্ঞরা ভিন্নমত পোষণ করেছেন। তাদের মতে, এফসিসির এই ধরনের পদক্ষেপের আইনি ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, তারা মনে করেন, কোনো কোম্পানির DEI নীতির কারণে একত্রীকরণ প্রক্রিয়া আটকে দেওয়াটা সম্ভবত এফসিসির এখতিয়ারের বাইরে।
DEI নীতি মূলত কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন জাতি, লিঙ্গ, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, এবং অন্যান্য অনগ্রসর গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে কর্মী প্রশিক্ষণ, রিসোর্স নেটওয়ার্ক এবং নিয়োগের মতো বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত।
কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, এই ধরনের নীতি আসলে বৈষম্য তৈরি করে।
এই পরিস্থিতিতে, কোম্পানিগুলির মধ্যে এক ধরনের দ্বিধা তৈরি হয়েছে। তারা একদিকে DEI-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি বজায় রাখতে চাইছে, আবার প্রশাসনের সমালোচনার শিকার হওয়া থেকেও বাঁচতে চাইছে।
অনেক কোম্পানি ইতিমধ্যেই তাদের DEI নীতি পরিবর্তন করতে শুরু করেছে। যেমন – মেটা, অ্যামাজন, ম্যাকডোনাল্ডস, গোল্ডম্যান স্যাকস-এর মতো বৃহৎ সংস্থাগুলিও তাদের নীতিতে পরিবর্তন এনেছে।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রশাসনের এই পদক্ষেপের কারণে কোম্পানিগুলির মধ্যে এক ধরনের ভীতি তৈরি হয়েছে। তারা বুঝতে পারছে না, ঠিক কোন ধরনের DEI প্রোগ্রাম ‘অবৈধ’ এবং সরকার তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিতে পারে।
এই অনিশ্চয়তা কর্পোরেট জগৎকে আরও বেশি উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন