গেমস্টপের ভবিষ্যৎ: দোকান বন্ধের ঘোষণা ও বিটকয়েনে বিনিয়োগ।
বিশ্বজুড়ে পরিচিত ভিডিও গেম খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান গেমস্টপ তাদের ব্যবসা পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে বেশ কিছু দোকান বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা যায়, কোম্পানিটি ইতিমধ্যেই গত এক বছরে তাদের প্রায় এক চতুর্থাংশ দোকান বন্ধ করে দিয়েছে।
বিশ্বজুড়ে প্রায় ১০০০ টি দোকান বন্ধ হওয়ার পর, এবার আরও অনেকগুলো দোকান বন্ধ করার পরিকল্পনা করছে তারা।
কোম্পানি সূত্রে খবর, এই দোকানগুলো বন্ধ করার পেছনে প্রধান কারণ হলো, ক্রেতাদের অনলাইন গেম কেনার দিকে ঝোঁক বৃদ্ধি পাওয়া। বর্তমানে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে গেম খেলার প্রবণতা বাড়ছে, তাই গেমস্টপ-এর মতো ঐতিহ্যবাহী খুচরা দোকানগুলোর ব্যবসা কঠিন হয়ে পড়েছে।
এছাড়াও, বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি এবং অর্থনৈতিক চাপও তাদের ওপর প্রভাব ফেলেছে।
গেমস্টপ-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা তাদের নগদ অর্থ এবং ভবিষ্যতে ঋণ ও শেয়ার ইস্যু থেকে প্রাপ্ত অর্থ ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করবে। বিশেষ করে, তারা বিটকয়েনকে তাদের সম্পদ সংরক্ষণের একটি অংশ হিসেবে বিবেচনা করছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপ তাদের প্রাসঙ্গিকতা টিকিয়ে রাখার একটি কৌশল। গ্লোবালডাটা রিটেইল-এর বিশ্লেষক নীল সন্ডার্স-এর মতে, “বিটকয়েনে বিনিয়োগ মূলত অপ্রাসঙ্গিকতা থেকে বাঁচার চেষ্টা।”
এই ঘোষণার পর, বাজারে গেমস্টপের শেয়ারের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বুধবার প্রি-মার্কেট ট্রেডিংয়ে জিএমই শেয়ারের দাম ১৬% বৃদ্ধি পায়।
এই খবর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
গেমস্টপের এই সিদ্ধান্তের ফলে, বিশ্বজুড়ে তাদের দোকানের সংখ্যা আরও কমবে। এক দশক আগে তাদের প্রায় ৬০০০ দোকান ছিল, যা বর্তমানে কমে ৩,২০০-এর কাছাকাছি দাঁড়িয়েছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের ২,৯২৯টি দোকান ছিল, যা বর্তমানে ২,৩২৫টিতে এসে দাঁড়িয়েছে। ইউরোপ এবং কানাডা-অস্ট্রেলিয়াতেও দোকান বন্ধের সংখ্যা বাড়ছে।
গেমস্টপের এই পরিবর্তনের কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনলাইন গেমিংয়ের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি এবং খুচরা বাজারে টিকে থাকার জন্য নতুন কৌশল গ্রহণ করা অপরিহার্য।
এই পরিস্থিতিতে, বিটকয়েনে বিনিয়োগ তাদের ব্যবসার ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন