1. rajubdnews@gmail.com : adminb :
  2. babu.repoter@gmail.com : Babu : Nurul Huda Babu
July 18, 2025 7:23 AM
সর্বশেষ সংবাদ:
ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি কালুকে ৫ টি টিকিটসহ গ্রেফতার করেন, রেলওয়ে থানা পুলিশ এনসিপি নেতৃবৃন্দের উপর হামলার প্রতিবাদে মাদারীপুরে জামায়াতের বিক্ষোভ সমাবেশ কাপ্তাই প্রজেক্ট  শহীদ আলমগীর এর ৩৮তম মৃত্যু বার্ষিকী পালন  কাপ্তাইয়ে ২৪এর রঙে  গ্রাফিতি ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা  পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই যোদ্ধারা শোনালেন জুলাইয়ের দুঃসহ স্মৃতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাজেট কাটছাঁট: সিনেটের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত! লামিন ইয়ামালের জন্মদিনের পার্টি: বিতর্ক! বামনদের নিয়ে মন্তব্যে উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া ইরাকের কুতে বহুতল ভবনে আগুন, নিহত বহু! যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিক অধিকারের সঙ্কট: জরুরি অবস্থা ঘোষণা! গোপালগঞ্জে হামলার প্রতিবাদে মাদারীপুরে এনসিপির সমাবেশ স্থগিত

আমেরিকার স্বপ্ন কি সত্যিই শেষ?

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট হয়েছে : Thursday, March 27, 2025,

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির সোনালী দিনগুলো বহু দূরে চলে গেছে, এবং নিকট ভবিষ্যতে দেশটির জন্য ভালো কিছু আসার সম্ভাবনা কম। বিংশ শতাব্দীর ‘আমেরিকান ড্রিম’-এর ধারণা, যেখানে বিপুল সংখ্যক আমেরিকান মধ্যবিত্ত, ধনী বা এমনকি অত্যন্ত বিত্তশালী হতে পারতেন, একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে এসে অনেকটাই বিলুপ্তির পথে।

ফেব্রুয়ারিতে মুডি’স অ্যানালিটিক্সের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে, আমেরিকার শীর্ষ ১০ শতাংশ ধনী (যাদের বার্ষিক আয় কমপক্ষে ২,৫০,০০০ ডলার) দেশটির মোট ভোক্তা ব্যয়ের অর্ধেকটা (প্রায় ১০ ট্রিলিয়ন ডলার) করেছেন। এই তথ্য সত্যিই উদ্বেগজনক। কারণ, এটি এমন একটি অর্থনীতির ইঙ্গিত দেয়, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি থেকে মূলত সাধারণ আমেরিকানদের প্রয়োজন ও ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল ছিল।

তবে, ‘আমেরিকান ড্রিম’-এর অবসান নিয়ে সবচেয়ে বড় বিস্ময় হলো, কয়েক কোটি আমেরিকানের কাছে এটি কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা নয়। ১৯৪৫ সাল থেকে ২০০৮ সালের হাউজিং বা আবাসন সংকট পর্যন্ত, ভোক্তা-পুঁজিবাদ যে আমেরিকাকে সংজ্ঞায়িত করেছিল, তার অবক্ষয় শুরু হয়েছিল অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় আগে।

সরকার কর্তৃক সামাজিক কল্যাণ ও শিক্ষা কর্মসূচিতে কঠোরতা আরোপ, সেই সঙ্গে ধনী ও কর্পোরেটদের জন্য একাধিকবার কর হ্রাসের ফলে সামাজিক গতিশীলতা কমে গেছে, বিশেষ করে দরিদ্র আমেরিকানদের জন্য। উৎপাদন খাত থেকে পরিষেবা খাতে পরিবর্তন, অটোমেশন, আঞ্চলিক পরিবর্তন, কর্মী ছাঁটাই এবং অন্যান্য লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থান অন্য দেশে সরিয়ে নেওয়ার মতো ঘটনাগুলো ঘটেছে। স্বাস্থ্যসেবা ও উচ্চশিক্ষার ঋণের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে অনেক আমেরিকানদের ওপর। এই পরিবর্তনগুলো আমেরিকান মধ্যবিত্তকে সংগ্রামকারীর শ্রেণীতে পরিণত করেছে, সাফল্যের দিকে অগ্রসর হওয়ার পরিবর্তে তারা আজ কঠিন পরিস্থিতির শিকার। সবচেয়ে খারাপ বিষয় হলো, বিত্তশালী আমেরিকানরা কয়েক দশক ধরে ঠিক এটাই চেয়েছিল।

অধিকাংশ বিশেষজ্ঞের মতে, সাধারণ আমেরিকানদের অর্থনৈতিক ক্ষমতা সম্ভবত ১৯৭০ থেকে ১৯৭৪ সালের মধ্যে শীর্ষে ছিল। সেসময় ১০ জনের মধ্যে ৬ জনের বেশি আমেরিকান নিজেদের মধ্যবিত্ত হিসেবে দাবি করতে পারতেন। কৃষ্ণাঙ্গ, ল্যাটিন এবং অন্যান্য বর্ণের আমেরিকানরাও এই সময়ে বৃহত্তর সংখ্যায় মার্কিন মধ্যবিত্ত শ্রেণীতে প্রবেশ করতে শুরু করেছিলেন।

ধারণা করা হয়, ১৯৭৩ সালের ইয়ম কিপুর যুদ্ধে ইসরায়েলকে সমর্থন করার কারণে ওপেকের তেল সংকট এবং আমেরিকান মিডওয়েস্টের শিল্পায়নমুক্তির ফলে ১৯৭৩-৭৪ সাল থেকে মার্কিন অর্থনীতি দুর্বল হতে শুরু করে। উচ্চ বেকারত্ব এবং উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির সংমিশ্রণ (যাকে ‘স্ট্যাগফ্লেশন’ বলা হয়) আমেরিকার অর্থনৈতিক আধিপত্য ও সমৃদ্ধির তিন দশকের অবসান ঘটায়।

আসলে, ১৯৭০-এর দশকে বৃহৎ কর্পোরেশন, শীর্ষস্থানীয় ধনী এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকার দরিদ্রতা দূর করা এবং আমেরিকান শ্রমিক ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির জীবনযাত্রার মান বজায় রাখার পরিবর্তে সম্পদ সরিয়ে নিতে শুরু করে। প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসন ১৯৬৫ সালে দরিদ্রতা দূরীকরণের লক্ষ্যে ‘ওয়ার অন পভার্টি’ (War on Poverty) ও ‘গ্রেট সোসাইটি’ (Great Society) নামে যে কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলেন, তা নব্য-রক্ষণশীল আন্দোলনের জন্য চূড়ান্ত আঘাত ছিল। নব্য-রক্ষণশীল আন্দোলনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ইরভিং ক্রিস্টল তাঁর আত্মজীবনীতে ‘ওয়ার অন পভার্টি’-এর ‘অভিশাপ’ সম্পর্কে লিখেছিলেন, “তারা জানত যে দরিদ্র মানুষেরা রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় হয়ে দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পেতে পারে না।” ক্রিস্টল এবং তাঁর অনুসারীরা বিশ্বাস করতেন, উদারনৈতিক নীতি-নির্ধারকদের সমাজতাত্ত্বিক অনুপ্রেরণা ছিল, “শ্রেণী সংগ্রামের ফলস্বরূপ একটি ‘গ্রেট সোসাইটি’ আসতে পারে।” মূলত তারা জনসনের নীতি-নির্ধারকদের সোভিয়েত ইউনিয়নের ধনী কমিউনিস্ট এজেন্ট হিসেবে অভিযুক্ত করেছিলেন।

নব্য-রক্ষণশীলরা জনসনের দরিদ্রতা দূরীকরণ এবং সকল আমেরিকানকে সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য জনসাধারণের করের অর্থ ব্যবহারের ধারণাটিকে কমিউনিস্ট ও বিপজ্জনক হিসেবে বিবেচনা করত। ১৯৮০-এর দশকে প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগানের রক্ষণশীল বিপ্লবের সময়, ‘গ্রেট সোসাইটি’ এবং ‘ওয়ার অন পভার্টি’ কর্মসূচির অবশেষ এবং এমনকি ১৯৩০-এর দশকে ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট কর্তৃক নির্মিত সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা, উভয়ই আক্রমণের শিকার হয়।

যদিও ১৯৮২ সালে রেগান তাঁর ডায়েরিতে লিখেছিলেন, “মিডিয়া আমাকে নিউ ডিল বাতিল করার চেষ্টা করার মতো করে চিত্রিত করতে চাইছে। আমি তাদের মনে করিয়ে দিই যে আমি ৪ বার এফডিআরের জন্য ভোট দিয়েছি। আমি ‘গ্রেট সোসাইটি’ বাতিল করার চেষ্টা করছি।” তিনি শেষ পর্যন্ত সকল সামাজিক কল্যাণ ও সামাজিক গতিশীলতা নীতির প্রতি অবজ্ঞা দেখিয়েছেন। রেগান দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করেছেন যে, “ফ্যাসিবাদ ছিল নিউ ডিলের ভিত্তি।” তিনি আরও বলেন, রুজভেল্টের অধীনে কাজ করা নিউ ডিলের নীতি-পরিকল্পনাকারীরা “মুসোলিনি কীভাবে সময়মতো ট্রেন চালাতেন, তা দেখে মুগ্ধ হতেন।”

১৯৮৫ সালে কনজারভেটিভ পলিটিক্যাল অ্যাকশন কনফারেন্স (CPAC)-এর বার্ষিক নৈশভোজে রেগান ঘোষণা করেন, “এফডিআর এবং নিউ ডিল-এর পর থেকে, বিরোধী দল, বিশেষ করে উদারপন্থীরা রাজনৈতিক বিতর্কে আধিপত্য বিস্তার করেছে।” তিনি আরও যোগ করেন, “নতুন রক্ষণশীলরা অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মধ্যে পুনরায় সংযোগ স্থাপন করেছে” এবং তাদের জন্য “একটি ন্যায্য কর ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা এবং বিদ্যমান কর ব্যবস্থার পরিবর্তন করা অপরিহার্য।”

বিশেষ করে ১৯৮১ সাল থেকে কর্পোরেট লবিস্ট এবং রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক উভয় দলের বিভিন্ন আদর্শিক দৃষ্টিভঙ্গির সংমিশ্রণের মাধ্যমে, ধনী ও কর্পোরেশনদের জন্য একটি নতুন নিম্ন কর ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছিল।

১৯৫০-এর দশকে, দেশের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিরা ২,০০,০০০ ডলারের বেশি আয়ের ওপর ৯১ শতাংশ পর্যন্ত কর দিতেন এবং ১৯৭০-এর দশকে এই হার ছিল ৭০ শতাংশ। রেগান-যুগের কর হ্রাসের ফলে ১৯৮০-এর দশকে সর্বোচ্চ করের হার ৫০ শতাংশ থেকে ২৮ শতাংশের মধ্যে নেমে আসে। ১৯৯০-এর দশকে প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের আমলে সর্বোচ্চ আয়কর হারে সামান্য বৃদ্ধি ঘটলেও, সামাজিক কল্যাণ কর্মসূচিতে বিনিয়োগ প্রায় ২০ বছর ধরে মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে তাল মেলাতে পারেনি এবং কল্যাণ সংস্কারের কারণে তা আর পুনরুদ্ধার করা যায়নি।

ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে কর হ্রাসের ফলে কর্পোরেট কর ২১ শতাংশে নেমে আসে, যা সর্বকালের সর্বনিম্ন। এই নীতিগুলি মধ্যবিত্ত, শ্রমিক শ্রেণি, দরিদ্র এবং অভাবী আমেরিকানদের কাছ থেকে সম্পদ সরিয়ে ধনী ও বৃহৎ কর্পোরেশনদের দিকে স্থানান্তরিত করেছে।

২০২০ সালে, র‍্যান্ড কর্পোরেশনের কার্টার সি প্রাইস এবং ক্যাথরিন এডওয়ার্ডস একটি গবেষণা পত্রে অনুমান করেছেন যে, ১৯৭৫ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে, কর হ্রাস এবং সামাজিক কল্যাণে কঠোরতা আরোপের ফলে প্রায় $৫০ ট্রিলিয়ন (পঞ্চাশ লক্ষ কোটি) ডলার সম্পদ আমেরিকার নিচের দিকের ৯০ শতাংশ মানুষের কাছ থেকে উপরের দিকের ১০ শতাংশের কাছে স্থানান্তরিত হয়েছে। আরও খারাপ হলো, এই স্থানান্তর ২০১০-এর দশকে বার্ষিক গড়ে ২.৫ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল – এমনকি কোভিড-১৯ মহামারী শুরু হওয়ার আগেও।

অন্যদিকে, অর্থনীতির অন্যান্য ক্ষেত্রে সাধারণ আমেরিকানদের জন্য পরিস্থিতি হতাশাজনক। ২০০৯ সাল থেকে ফেডারেল সর্বনিম্ন মজুরি ৭.২৫ ডলারে অপরিবর্তিত রয়েছে (১৯৮০-এর দশকেও আট বছর ধরে সর্বনিম্ন মজুরি একই ছিল)। একচেটিয়া বাণিজ্য এবং কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণে অধিকাংশ আমেরিকান জীবিকা নির্বাহের মতো কাজ হারাচ্ছেন। অর্ধেকের বেশি আমেরিকান বছরে $50,000 (পঞ্চাশ হাজার ডলার) এর কম আয় করেন এবং এক-চতুর্থাংশ কর্মী বছরে $২৫,০০০ (পঁচিশ হাজার ডলার) এর কম আয় করেন।

সাবেক মার্কিন মুদ্রা নিয়ন্ত্রক ইউজিন লুডউইগ এই বছর পলিটিকোতে লিখেছেন, “যদি আপনি এই পরিসংখ্যানের সঙ্গে, এমন বেকারদের যুক্ত করেন যারা হয় খণ্ডকালীন কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন অথবা দারিদ্র্যের মজুরি পাচ্ছেন (প্রায় $২৫,০০০), তবে সেই হার আসলে ২৩.৭ শতাংশ। অন্য কথায়, আজকের আমেরিকায় প্রতি চারজন কর্মীর মধ্যে প্রায় একজন কার্যত বেকার – যা উদযাপনের মতো কোনো বিষয় নয়।

সুতরাং, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আবার তার মহামন্দা-পূর্ববর্তী অর্থনীতিতে ফিরে গেছে। তবে, ২০২৫ সালে এটি এমন একটি অর্থনীতি, যেখানে শীর্ষ ১০ শতাংশ ধনী মানুষের ভোক্তা আচরণের প্রভাব, নিচের দিকের ৩০০ মিলিয়ন (৩০ কোটি) আমেরিকানদের তুলনায় অনেক বেশি। যদি অধিকাংশ ভোক্তার বাড়ি ভাড়া করা বা কেনার মতো, অবকাশে যাওয়া বা এমনকি খাদ্য ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার খরচ বহন করার মতো যথেষ্ট অর্থ না থাকে, তবে সেখানে সত্যিকার অর্থে ভোক্তা-পুঁজিবাদ থাকতে পারে না। তবে, এটি ছিল ধনী আমেরিকানদের দীর্ঘদিনের লক্ষ্য, যা তারা উভয় রাজনৈতিক দলের সহায়তায় অর্জন করেছে। আমেরিকান স্বপ্নের অবশিষ্ট যা কিছু আছে, তা আজকাল কেবল একটি অলীক কল্পনা। কারণ মধ্যবিত্ত শ্রেণির সমৃদ্ধির দিকে যাওয়ার পথগুলো এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2019 News 52 Bangla
Theme Customized BY RASHA IT