1. rajubdnews@gmail.com : adminb :
  2. babu.repoter@gmail.com : Babu : Nurul Huda Babu
July 18, 2025 12:03 PM
সর্বশেষ সংবাদ:
জুলাই আহত যোদ্ধাদের সংবর্ধনা দিলো কাপ্তাই জামায়াতে ইসলামী  ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি কালুকে ৫ টি টিকিটসহ গ্রেফতার করেন, রেলওয়ে থানা পুলিশ এনসিপি নেতৃবৃন্দের উপর হামলার প্রতিবাদে মাদারীপুরে জামায়াতের বিক্ষোভ সমাবেশ কাপ্তাই প্রজেক্ট  শহীদ আলমগীর এর ৩৮তম মৃত্যু বার্ষিকী পালন  কাপ্তাইয়ে ২৪এর রঙে  গ্রাফিতি ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা  পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই যোদ্ধারা শোনালেন জুলাইয়ের দুঃসহ স্মৃতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাজেট কাটছাঁট: সিনেটের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত! লামিন ইয়ামালের জন্মদিনের পার্টি: বিতর্ক! বামনদের নিয়ে মন্তব্যে উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া ইরাকের কুতে বহুতল ভবনে আগুন, নিহত বহু! যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিক অধিকারের সঙ্কট: জরুরি অবস্থা ঘোষণা!

মাছের সস: জলবায়ু পরিবর্তনের থাবায় ঐতিহ্য রক্ষার লড়াই!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট হয়েছে : Thursday, March 27, 2025,

শিরোনাম: জলবায়ু পরিবর্তন ও অতিরিক্ত মাছ ধরা: ভিয়েতনামের ঐতিহ্যবাহী মাছের সস তৈরির পথে সঙ্কট

গত পঞ্চাশ বছর ধরে ভিয়েতনামের খাদ্য সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ ‘নুয়ক মাম’ বা মাছের সস। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন আর অতিরিক্ত মাছ ধরার কারণে এই ঐতিহ্য আজ হুমকির মুখে। খবরটা ভিয়েতনামের হলেও, এর গভীরতা অনেক। পরিবেশগত পরিবর্তনের প্রভাব যে সীমান্ত মানে না, এই ঘটনা তারই প্রমাণ।

ভিয়েতনামের ডা নাং প্রদেশের বাসিন্দা বুই ভ্যান ফু, তাঁর পরিবারের চতুর্থ প্রজন্মের একজন, যারা এই মাছের সস তৈরির ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তিনি বলেন, “মাছের সস শুধু একটি খাদ্য উপাদান নয়, এটি একটি ঐতিহ্য, যা আমাদের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ।” কিন্তু এই ঐতিহ্য আজ হুমকির সম্মুখীন।

আঞ্চলিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের তাপমাত্রা বাড়ছে, ফলে সমুদ্রের পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ কমছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে ছোট আকারের মাছ, বিশেষ করে অ্যাঙ্কোভির ওপর। এই অ্যাঙ্কোভি মাছই ‘নুয়ক মাম’ তৈরির প্রধান উপাদান। জার্মানির কিয়েল-এর ক্রিশ্চিয়ান-আলব্রেখট ইউনিভার্সিটির মৎস্য বিশেষজ্ঞ রেনাতো সালভাত্তেসি বলছেন, “আমরা যদি এই হারে অক্সিজেন হ্রাস হতে দেখি, তাহলে অ্যাঙ্কোভি মাছের জন্য তা ভালো হবে না। প্রতিটি প্রজাতিরই একটা সীমা আছে।”

শুধু জলবায়ু পরিবর্তনই নয়, অতিরিক্ত মাছ ধরাও একটা বড় সমস্যা। দক্ষিণ চীন সাগরে, যেখানে বিশ্বের প্রায় ১২ শতাংশ মাছ ধরা হয়, সেখানে মাছ ধরার ক্ষেত্রে অস্থিরতা চলছে। গভীর সমুদ্র থেকে বড় জাল টেনে মাছ ধরার কারণে সমুদ্রের তলদেশের বাস্তুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, যদি পৃথিবীর তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখা যায় এবং মাছ ধরা কমানো যায়, তাহলেও দক্ষিণ চীন সাগরে মাছের মজুত এক-পঞ্চমাংশ কমে যাবে। তাপমাত্রা ৪.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়লে সেখানকার প্রায় সব মাছ বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।

ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতিতে মাছের সস তৈরি করা একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। অ্যাঙ্কোভি মাছ সাধারণত জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে ডা নাং উপকূলের কাছাকাছি পাওয়া যায়। এই মাছ সংগ্রহ করে লবণ এবং অন্যান্য উপাদানের সঙ্গে মিশিয়ে মাটির পাত্রে সংরক্ষণ করা হয়। প্রায় ১৮ মাস ধরে এই মিশ্রণটি নাড়াচাড়া করার পর, তা ছেঁকে বোতলজাত করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত লবণের ধরন ও সময়ের তারতম্যের কারণে স্বাদে ভিন্নতা আসে।

কিন্তু এখন আগের মতো পর্যাপ্ত অ্যাঙ্কোভি মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে অনেক পরিবার এই ব্যবসা থেকে সরে যেতে বাধ্য হচ্ছে। ভিয়েতনামের এই ঐতিহ্যবাহী মাছের সসের বাজার বর্তমানে প্রায় ১৮.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের (প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকার বেশি) এবং ২০৩২ সাল নাগাদ তা ২৯ বিলিয়ন ডলারে (প্রায় ৩ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকার বেশি) পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। ভিয়েতনাম এবং থাইল্যান্ড উভয় দেশই মাছের সসের প্রধান রপ্তানিকারক। তারা খাদ্য সুরক্ষার মান উন্নত করে আন্তর্জাতিক বাজারে নিজেদের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করতে চাইছে।

ভিয়েতনামের মানুষের কাছে মাছের সস শুধু একটি খাদ্য উপাদান নয়, বরং এটি তাদের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রবাসে থাকা ছাত্রছাত্রীরা এই সসের স্বাদকে তাদের শৈশবের স্মৃতি হিসেবে বর্ণনা করেন। একজন শীর্ষস্থানীয় শেফ বলেন, এটি ভিয়েতনামের রান্নার ভিত্তি।

বুই ভ্যান ফু চান তাঁর পরিবারের ঐতিহ্য ধরে রাখতে, কিন্তু পর্যাপ্ত অ্যাঙ্কোভি মাছের সরবরাহ নিশ্চিত না হলে, তাঁর পক্ষে এই ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া কঠিন হবে। “মাছের সস আমার কাছে শুধু রান্নার উপকরণ নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের ঐতিহ্য, যা সংরক্ষণ করা প্রয়োজন,” তিনি বলেন।

এই সংকট শুধু ভিয়েতনামের একার নয়। জলবায়ু পরিবর্তন এবং অতিরিক্ত মাছ ধরার কারণে বিশ্বজুড়ে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলেও একই ধরনের সমস্যা দেখা যায়, যেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে মাছের উৎপাদন কমে যাচ্ছে। তাই এই সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও পরিবেশ সুরক্ষার উপর জোর দেওয়া জরুরি।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2019 News 52 Bangla
Theme Customized BY RASHA IT