ইলন মাস্কের ১ মিলিয়ন ডলার প্রদানের সিদ্ধান্তে উইসকনসিনের বিচারকের বাধা নেই, আপিল করলেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যে আসন্ন সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচনের আগে, ভোটারদের অর্থ প্রদানের বিষয়ে বড় ধরনের বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। রাজ্যের একজন বিচারক বিলিয়নেয়ার ইলন মাস্ককে দুজন ভোটারের প্রত্যেককে ১ মিলিয়ন ডলার করে প্রদানের অনুমতি দিয়েছেন। তবে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ভাবে আপিল করেছেন রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল।
জানা গেছে, মাস্ক উইসকনসিনের কিছু ভোটারের জন্য একটি অনলাইন পিটিশনে স্বাক্ষর করার শর্তে এই অর্থ প্রদানের প্রস্তাব করেছিলেন। এই পিটিশনটি “অ্যাক্টিভিস্ট” বিচারকদের বিরুদ্ধে ছিল। শুধু তাই নয়, পিটিশনে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে আরো অনেককে তিনি ১০০ ডলার করে প্রদানের প্রস্তাব দেন। মাস্কের এই পদক্ষেপকে রাজ্যের আইন লঙ্ঘনের শামিল বলে মনে করছেন অ্যাটর্নি জেনারেল। তাঁর মতে, ভোটের বিনিময়ে ভোটারদের কিছু দেওয়া রাজ্যের আইনে অপরাধ।
উইসকনসিনের কলম্বিয়া কাউন্টি সার্কিট আদালতের বিচারক অ্যান্ড্রু ভয়েগট মাস্কের অর্থ প্রদানের ওপর স্থগিতাদেশ দিতে রাজি হননি। এরপরই রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করেন।
এই নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে মাস্ক ও তাঁর সমর্থিত বিভিন্ন সংস্থা ইতোমধ্যেই নির্বাচনে ২ কোটির বেশি ডলার বিনিয়োগ করেছেন। অন্যদিকে, ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রভাবশালী ব্যক্তি জর্জ সরোস সহ আরো অনেকে সুসান ক্রফোর্ডকে সমর্থন করছেন। এই নির্বাচনের ফল উইসকনসিনের বিচার বিভাগের রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ নির্ধারণ করবে। বর্তমানে, এখানে ৪-৩ ব্যবধানে উদারপন্থীদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। তবে, এই বছর একজন বিচারকের পদত্যাগের কারণে সংখ্যাগরিষ্ঠতার পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী মঙ্গলবার এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
ইলন মাস্ক এর আগে তাঁর সামাজিক মাধ্যম, ‘এক্স’ -এ ঘোষণা করেছিলেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে দুজন ভোটারকে ২ মিলিয়ন ডলার দেবেন, যারা ইতিমধ্যে নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন। অ্যাটর্নি জেনারেলের দাবি, মাস্ককে এই ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করতে এবং ভবিষ্যতে উইসকনসিনের ভোটারদের কোনো প্রকার অর্থ প্রদান করা থেকে বিরত রাখতে আদালত নির্দেশ দিক।
উল্লেখ্য, গত বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে মাস্ক অনুরূপ একটি কৌশল অবলম্বন করেছিলেন। তিনি উইসকনসিন সহ আরও ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে ভোটারদের প্রথম ও দ্বিতীয় সংশোধনী সমর্থনকারী একটি পিটিশনে স্বাক্ষর করার জন্য দৈনিক ১ মিলিয়ন ডলার করে প্রদানের প্রস্তাব করেছিলেন।
উইসকনসিন সুপ্রিম কোর্টের এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই আদালত গর্ভপাতের অধিকার, কংগ্রেসনাল পুনর্গঠন, শ্রমিক সংগঠনগুলোর ক্ষমতা এবং নির্বাচনের নিয়মাবলী সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এই সিদ্ধান্তগুলো ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচন এবং ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস