ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার ড্রোন হামলায় অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। দেশটির গুরুত্বপূর্ণ শহর ডিনিপ্রোতে চালানো এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও ২১ জন।
রাশিয়ার পক্ষ থেকে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে কিছু এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ারও দাবি করা হয়েছে। খবর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে।
শনিবার (আজ) ভোরে ডিনিপ্রোতে রাশিয়ার পাঠানো একাধিক ড্রোন আঘাত হানে। ডিনিপ্রোপেট্রোভস্ক অঞ্চলের গভর্নর সের্গেই লিসাক জানান, রাশিয়ার ছোড়া ‘দুই ডজনের বেশি’ ড্রোন হামলায় একটি হোটেল, একটি রেস্টুরেন্ট এবং ১১টি আবাসিক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এছাড়াও, গ্যারেজ ও একটি সার্ভিস স্টেশনে আগুন ধরে যায়। হামলায় বহুতল ভবন ও কয়েকটি গাড়িও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওতে ধোঁয়ার কুণ্ডলী এবং ধ্বংসস্তূপ দেখা গেছে।
এদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়া গত রাতে ১৭০টির বেশি ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছে। কিয়েভ, সুমি, খারকিভ এবং খমেলনিৎস্কি অঞ্চলেও আঘাত হেনেছে ড্রোনগুলো।
অন্যদিকে, রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্ক অঞ্চলের পান্তেলেইমোনোভকা এবং জাপোরিঝিয়া অঞ্চলের শেরবাকি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।
এছাড়া, সুমি অঞ্চলের ভেসেলোভকাও তাদের দখলে এসেছে বলে দাবি করা হয়েছে। তবে, এই খবরগুলোর সত্যতা যাচাই করা যায়নি।
অন্যদিকে, রাশিয়া অভিযোগ করেছে, ইউক্রেন তাদের জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা চালিয়েছে। বেলগোরোদ অঞ্চলের বিদ্যুৎ গ্রিডে কয়েকবার আঘাত হানার ফলে প্রায় ৯ হাজার মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উভয় পক্ষকে যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ দিচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়া এবং ইউক্রেন উভয় দেশই আকাশপথে হামলা জোরদার করেছে।
ইউক্রেন সরকার ও সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়া আসন্ন বসন্তে কিয়েভের ওপর চাপ বাড়াতে এবং যুদ্ধবিরতি আলোচনার জন্য নিজেদের অবস্থানকে শক্তিশালী করতে নতুন সামরিক অভিযান শুরু করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
শুক্রবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে একটি ‘অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন’ গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি ইউক্রেনীয় সৈন্যদের ‘ধ্বংস’ করারও অঙ্গীকার করেন।
জেলেনস্কি পুতিনের এই আহ্বানকে শান্তি আলোচনার বিলম্বিত করার কৌশল হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া বিশ্বজুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাকে উপহাস করছে। তারা এখনো কোনো চাপ অনুভব না করায় যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করছে এবং সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে।’
বর্তমানে, যুক্তরাষ্ট্র কৃষ্ণসাগরে যুদ্ধবিরতি এবং উভয় দেশের জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর হামলা বন্ধের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। উভয় পক্ষ নীতিগতভাবে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলেও, এর বাস্তবায়ন এখনো অনিশ্চিত।
রাশিয়া ও ইউক্রেন একে অপরের বিরুদ্ধে চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ করছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা