মিয়ানমারে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ১,৬০০ ছাড়িয়েছে, আহত কয়েক হাজার, সহায়তার আবেদন জান্তা সরকারের।
মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ১,৬০০ ছাড়িয়েছে। দেশটির বৃহত্তম শহর মান্ডালায় ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল এবং এর কাছাকাছি এলাকাগুলোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়া মানুষের সন্ধানে এখনো উদ্ধারকর্মীরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ভূমিকম্পের পর দফায় দফায় পরাঘাত (আফটার শক) অনুভূত হওয়ায় উদ্ধার কাজ ব্যাহত হচ্ছে।
শুক্রবার দুপুরের দিকে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এর কিছু সময় পরেই ৬.৭ মাত্রার একটি আফটার শক অনুভূত হয়।
ভূমিকম্পের কারণে বহু ভবন ধসে পড়েছে, রাস্তাঘাট এবং সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মান্ডালয় শহরে উদ্ধার কাজ স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের সমন্বয়ে চলছে, কারণ তাদের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং পর্যাপ্ত জনবল নেই।
ভূমিকম্পের ভয়াবহতা এতটাই বেশি যে, মৃতের সংখ্যা আরও অনেক বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো বহু মানুষ আটকা পড়ে আছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় দুর্গত এলাকার প্রকৃত চিত্র পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
সামরিক শাসনের অধীনে থাকা দেশটির সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে জরুরি ভিত্তিতে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে। মিয়ানমারের সেনা প্রধান মিন অং হ্লাইং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সামরিক ও বেসামরিক হাসপাতালগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
ভূমিকম্পের কারণে সৃষ্ট মানবিক সংকটের মধ্যে দেশটির চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। সরকার বিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত এলাকাগুলোতে দুই সপ্তাহের জন্য যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে।
অন্যদিকে, ভূমিকম্পের কারণে প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ডেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রাজধানী ব্যাংককে একটি নির্মাণাধীন বহুতল ভবন ধসে পড়ার ঘটনায় বহু মানুষ হতাহত হয়েছে।
এখন পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, ভবন ধসে আহত হয়েছেন ৩২ জন এবং ৮৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিতদের উদ্ধারের জন্য উদ্ধারকর্মীরা আধুনিক সরঞ্জাম ব্যবহার করছেন।
আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো জানিয়েছে, মিয়ানমারের দুর্যোগ মোকাবিলা করার মতো পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেই। জরুরি চিকিৎসা সামগ্রীর অভাব এবং রাস্তাঘাটের ক্ষতির কারণে ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে সরকারি সাহায্যও এখনো পর্যাপ্ত পরিমাণে পৌঁছায়নি।
এই কঠিন সময়ে ভারত, চীন ও সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশ মিয়ানমারকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। ভারত এরই মধ্যে উদ্ধারকারী দল ও ত্রাণ সামগ্রী পাঠিয়েছে।
চীনের উদ্ধারকর্মীরাও সেখানে পৌঁছেছে। সিঙ্গাপুরের একটি দল উদ্ধারকাজে সহায়তা করছে।
তথ্যসূত্র: বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম।