যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচনে জর্জিয়ার ডেমোক্রেট সিনেটর জন অসফের পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে জোর আলোচনা। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি তীব্র বিরোধিতা এবং তাঁর নীতিগুলোর কড়া সমালোচনা করেই আগামী নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরিকল্পনা করছেন তিনি।
অসফের মতে, ট্রাম্পের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড মূলত যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্বাধীন’ ভোটারদের দূরে সরিয়ে দেবে, যা নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।
আসন্ন নির্বাচনে জয়লাভের জন্য অসফ এমন একটি কৌশল বেছে নিয়েছেন, যা কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
সাধারণত, গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনের আগে নীতিনির্ধারকরা মধ্যপন্থী ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা করেন এবং তাঁদের পক্ষে কথা বলেন। কিন্তু অসফ এক্ষেত্রে ভিন্ন পথে হাঁটছেন। তাঁর বিশ্বাস, ট্রাম্পের ক্ষমতা বিস্তারের চেষ্টা এবং তাঁর বিভিন্ন বিতর্কিত পদক্ষেপের কারণে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হবে।
সিএনএন-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অসফ বলেন, “আমি মনে করি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের কারণে ভোটাররা তাঁর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।” তিনি আরও যোগ করেন যে, ট্রাম্প “গণতন্ত্রকে বিষাক্ত করছেন।
উল্লেখ্য, জর্জিয়া রাজ্যে ট্রাম্প এর আগে জয়লাভ করেছিলেন।
তাই অসফের এই রাজ্যে পুনরায় নির্বাচিত হওয়াটা বেশ কঠিন। বর্তমানে সিনেটে রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে (৫৩-৪৭)। আগামী নির্বাচনে ডেমোক্রেটদের জন্য সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ফিরে পাওয়া বেশ কঠিন হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, অসফের এই কৌশল কতটা সফল হবে, তা সময়ই বলবে।
কারণ, জর্জিয়ার রিপাবলিকান শিবিরেও আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে। অনেকেই মনে করছেন, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আবারও নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।
রিপাবলিকান দল থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে গভর্নর ব্রায়ান কেম্পের নাম শোনা যাচ্ছে। এছাড়াও, রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান বাডি কার্টারও এই দৌড়ে নাম লেখানোর কথা ভাবছেন।
তবে অসফ এখনই তাঁর প্রচারণার গতি কমাচ্ছেন না। সম্প্রতি তিনি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা করে একটি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।
তিনি অভিযোগ করেন, ট্রাম্প “ইতিহাসের নজিরবিহীনভাবে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করছেন” এবং “ভয় ও ভীতির মাধ্যমে আমাদের গণতন্ত্রকে কলুষিত করছেন।
ইমিগ্রেশন ইস্যুতেও অসফ তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।
যদিও তিনি রিপাবলিকানদের একটি আইনের পক্ষে ভোট দিয়েছেন, যেখানে কিছু অপরাধের জন্য অভিযুক্ত অভিবাসীদের আটকের কথা বলা হয়েছে, তবে ট্রাম্পের অভিবাসন নীতিকে তিনি “জবরদস্তিমূলক” হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জন অসফের এই নির্বাচনী কৌশল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কারণ, এর মাধ্যমে তিনি একদিকে যেমন ট্রাম্প বিরোধী ভোটারদের আকৃষ্ট করতে চাইছেন, তেমনই নিজের দলের মধ্যে সমর্থন ধরে রাখতে চাইছেন। এখন দেখার বিষয়, এই কৌশল নির্বাচনে কতটা ফলপ্রসূ হয়।
তথ্য সূত্র: সিএনএন