শিরোনাম: প্রতিশোধের রাজনীতি: ট্রাম্পের ক্ষমতা ফিরে আসার পর প্রতিশোধের নেশা
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা হারানোর পর থেকেই যেন প্রতিশোধের নেশায় মত্ত ছিলেন। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি বইয়ে ট্রাম্পের এই প্রতিশোধের রাজনীতি এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সঙ্গে তার সম্পর্কগুলো বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
অ্যালেক্স আইজেনস্টাডটের লেখা ‘রিভেঞ্জ: দ্য ইনসাইড স্টোরি অফ ট্রাম্পস রিটার্ন টু পাওয়ার’ বইটিতে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে (কাল্পনিক) ক্ষমতা গ্রহণের পর তার বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং রাজনৈতিক বিরোধীদের সঙ্গে তার সম্পর্কের বিবরণ দেওয়া হয়েছে।
বইটিতে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠমহলের বিভিন্ন ব্যক্তির মন্তব্য এবং ঘটনার বর্ণনা রয়েছে। যেমন, ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিসান্তিসের সঙ্গে তার তিক্ত সম্পর্ক, যা ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় থেকেই স্পষ্ট ছিল।
ডিসান্তিসকে তিনি কিভাবে কোণঠাসা করতে চেয়েছেন, সে সম্পর্কে বইটিতে বিস্তারিত তথ্য রয়েছে। আইজেনস্টাডটের ভাষ্যমতে, ট্রাম্প নাকি একবার বলেছিলেন, ডেসান্তিসকে তিনি “ফ্লোরের উপর হাঁটু গেড়ে বসতে” বলতে পারতেন।
বইটিতে রুপার্ট মারডকের সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক নিয়েও আলোকপাত করা হয়েছে। একসময় মারডকের মালিকানাধীন মিডিয়া ট্রাম্পকে সমর্থন দিলেও, পরবর্তীতে তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়।
ট্রাম্প নাকি মারডককে ‘একটি অযোগ্য লোক’ হিসেবেও উল্লেখ করেছেন। এছাড়া, মারডকের ছেলে জেমস মারডককে তিনি ‘উগ্র বামপন্থী’ বলেও মন্তব্য করেছেন।
বইটিতে মাইকেল উল্ফের লেখা ‘ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি’ এবং ‘দ্য ফল’ বইয়ের উদ্ধৃতিও ব্যবহার করা হয়েছে, যেখানে মারডকের ট্রাম্পকে নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য তুলে ধরা হয়েছে।
ট্রাম্প তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আইনি পদক্ষেপ নিতেও পিছপা হননি। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতা গ্রহণের পর কিছু বিতর্কিত ক্ষমা ঘোষণা করেন, যা ট্রাম্পের সমালোচকদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করে।
এছাড়া, ট্রাম্পের নির্দেশে তার বিরোধীদের বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য চাপ সৃষ্টি করা হয়।
বইটিতে প্রাক্তন কংগ্রেস সদস্য লিজ চেনেকে নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। ৬ জানুয়ারির তদন্ত কমিটির সঙ্গে কাজ করার কারণে রিপাবলিকানদের একাংশ তার ওপর ক্ষিপ্ত হন।
ট্রাম্পের ক্ষমতা ফিরে আসার পর প্রতিশোধের এই রাজনীতি কিভাবে নতুন করে শুরু হয়েছে, তা বইটিতে স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
আইজেনস্টাডটের বইয়ের তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্প ক্ষমতা ফিরে আসার পর প্রতিশোধের নেশায় এতটাই মত্ত ছিলেন যে, তার বিরোধীদের কোনঠাসা করতে কোনো কসুর করেননি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, ট্রাম্পের এই প্রতিশোধের রাজনীতি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে গভীর প্রভাব ফেলবে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান