ইয়েমেনের কাছ থেকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করার দাবি করেছে ইসরায়েল। একই সময়ে, যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনে হাউছি বিদ্রোহীদের বিভিন্ন অবস্থানে ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করেছে।
খবর অনুযায়ী, গত কয়েক দিন ধরেই উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে।
সম্প্রতি, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা ইয়েমেন থেকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্রকে তাদের দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করার আগেই প্রতিহত করেছে।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র হাউছি বিদ্রোহীদের ঘাঁটিগুলোতে বিমান হামলা চালাচ্ছে, যা মূলত তাদের সামরিক সক্ষমতাকে দুর্বল করার উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে।
গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই, অর্থাৎ ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে, হাউছি বিদ্রোহীরা নিয়মিতভাবে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ছে।
তারা ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে এই কাজ করছে বলে দাবি করেছে।
শুধু তাই নয়, লোহিত সাগর এবং এডেন উপসাগরে বাণিজ্যিক জাহাজের ওপরও হামলা চালাচ্ছে তারা।
বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, গাজায় যুদ্ধবিরতি চলাকালীন সময়ে হাউছিরা তাদের আক্রমণ বন্ধ রেখেছিল, যা ১৮ মার্চ শেষ হয়।
এরপর থেকেই পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েল জানিয়েছিল যে তারা ইয়েমেন থেকে আসা দুটি ক্ষেপণাস্ত্রকে তাদের ভূখণ্ডে আঘাত হানার আগেই প্রতিহত করেছে।
যদিও হাউছিরা এখনো পর্যন্ত ইসরায়েলের এই দাবির কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি, তবে তারা জানিয়েছে যে, তেল আবিবের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর এবং একটি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে তারা দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছিল, যার মধ্যে একটি ছিল শব্দের চেয়ে দ্রুতগামী।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ১৫ মার্চ থেকে ইয়েমেনে বিমান হামলা শুরু করেছে।
তাদের দাবি, আন্তর্জাতিক নৌপথ সুরক্ষিত রাখতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এসব হামলায় বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছে।
রাজধানী সানার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত একটি সামরিক ঘাঁটিতেও হামলা চালানো হয়েছে, যা হাউছিদের নিয়ন্ত্রণে ছিল।
মার্কিন হামলায় বেসামরিক হতাহতেরও খবর পাওয়া গেছে।
ইয়েমেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, শুক্রবারের হামলায় সাতজন আহত হয়েছে, যাদের মধ্যে দুজন শিশুও রয়েছে।
এর আগে, হাউছিরা জানিয়েছিল যে, মার্কিন হামলায় তাদের দুইজন যোদ্ধা নিহত এবং আরও দুইজন আহত হয়েছে।
জবাবে, হাউছিরা লোহিত সাগরে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ, বিশেষ করে ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যানকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য এই হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করেছে।
আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই অঞ্চলে উত্তেজনা কমানো না গেলে, তা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।
বিশেষ করে, লোহিত সাগরের গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ বন্ধ হয়ে গেলে, তা বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা তৈরি করবে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা