যুক্তরাষ্ট্রের কুখ্যাত ফাইনান্সার জেফরি এপস্টাইনের যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া এবং ব্রিটিশ প্রিন্স অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ আনা ভার্জিনিয়া জিউফ্রে সম্প্রতি এক মারাত্মক সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন। তার শারীরিক অবস্থা এতটাই খারাপ যে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তিনি সম্ভবত আর বেশি দিন বাঁচবেন না।
জানা গেছে, একটি স্কুল বাসের সঙ্গে তার গাড়ির সংঘর্ষ হয়, যার ফলে তার কিডনি বিকল হয়ে গেছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক পোস্টে জিউফ্রে জানিয়েছেন, চিকিৎসকেরা তাকে বাঁচতে আর মাত্র চার দিন সময় দিয়েছেন। তিনি বর্তমানে একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
তিনি তার সন্তানদের সঙ্গে শেষবারের মতো দেখা করতে চান এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
জিউফ্রের বাবা স্কাই রবার্টস তার মেয়ের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে আবেগঘন মন্তব্য করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তিনি সবসময় তার মেয়ের পাশে আছেন এবং মেয়ের জন্য সুস্থ জীবন কামনা করেন।
জিউফ্রের প্রতিনিধি দিনি ভন মিউফলিং নিশ্চিত করেছেন যে, জিউফ্রে একটি গুরুতর দুর্ঘটনায় পড়েছেন এবং হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি সকলের সমর্থন ও শুভেচ্ছার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
উল্লেখ্য, ভার্জিনিয়া জিউফ্রে জেফরি এপস্টাইনের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগকারী অন্যতম প্রধান ব্যক্তি। তিনি ব্রিটিশ প্রিন্স অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধেও যৌন নির্যাতনের অভিযোগ এনেছিলেন।
এর আগে, ২০২১ সালে তিনি প্রিন্স অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে নিউ ইয়র্কের একটি ফেডারেল আদালতে মামলা করেন। জিউফ্রে অভিযোগ করেছিলেন, ১৭ বছর বয়সে প্রিন্স অ্যান্ড্রু তাকে তিনবার যৌন নির্যাতন করেছেন। যদিও প্রিন্স অ্যান্ড্রু বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ২০০১ সালে এপস্টাইন ও তার সহযোগী ঘিসলেইন ম্যাক্সওয়েল জিউফ্রেকে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। এরপর ম্যাক্সওয়েল জিউফ্রেকে অ্যান্ড্রুর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে বাধ্য করেন।
পরে, ২০২২ সালে প্রিন্স অ্যান্ড্রু ও জিউফ্রের মধ্যে একটি আপস-মীমাংসা হয়, যেখানে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ প্রকাশ করা হয়নি। অন্যদিকে, ঘিসলেইন ম্যাক্সওয়েলকে যৌন পাচার ও শিশুদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
জেফরি এপস্টাইন ২০১৯ সালে গ্রেফতার হওয়ার পর বিচার শুরুর আগেই আত্মহত্যা করেন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান