মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য নতুন শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়ায় প্রস্তুত হচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। সম্প্রতি এক শীর্ষ কর্মকর্তার মন্তব্যে এমনটাই জানা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য নতুন শুল্ক ঘোষণার প্রেক্ষিতে ইইউ পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
জানা গেছে, ট্রাম্পের প্রশাসন বাণিজ্য নীতিতে কিছু পরিবর্তন আনতে চাইছে, যার ফলস্বরূপ বেশ কিছু পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়ানো হতে পারে।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডেয়ার লিয়েন এক ভাষণে বলেছেন, “আমরা এই বিতর্কের সূত্রপাত করিনি। প্রতিশোধ নেওয়ার কোনো ইচ্ছা আমাদের নেই, তবে প্রয়োজন হলে এর উপযুক্ত জবাব দিতে আমরা প্রস্তুত।” তিনি আরও জানান, আলোচনা করার জন্য ইউরোপের দরজা খোলা রয়েছে।
তবে বাণিজ্য, প্রযুক্তি এবং বাজারের আকারের দিক থেকে ইউরোপ একটি শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে এবং সেই শক্তি বজায় রেখেই তারা আলোচনায় বসতে চায়।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট সোমবার জানিয়েছেন, ট্রাম্প বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে শুল্ক পরিকল্পনা প্রকাশ করবেন। যদিও তিনি বিস্তারিত কিছু জানাননি, তবে ধারণা করা হচ্ছে, অন্যান্য দেশের মতো যুক্তরাষ্ট্রও পাল্টা শুল্ক আরোপ করতে পারে।
এই বাণিজ্য বিরোধে ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিশাল অঙ্কের বাণিজ্যের সম্পর্ক জড়িত। উভয় পক্ষেরই এতে অনেক কিছু হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, ইউরোপীয় ইউনিয়নের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ছিল ইউরোপীয় পণ্য রপ্তানির সবচেয়ে বড় বাজার। অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হিসাবে, ইইউ ছিল তাদের পণ্যের বৃহত্তম উৎস। এই পরিস্থিতিতে, উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বাড়লে তা বিশ্ব অর্থনীতির উপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।
ইতিমধ্যেই, ২০১৬ সালে ট্রাম্পের স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়ায় ইইউ প্রায় ২৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন পণ্যের ওপর পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছিল, যার মধ্যে বোরবন ও মোটরসাইকেলের মতো পণ্যও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
ইউরোপীয় কমিশন অতীতে মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর উপর বড় অঙ্কের জরিমানা করেছে এবং ভবিষ্যতে এমন পদক্ষেপ নিতে তারা দ্বিধা করবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ-এর মধ্যে চলমান এই বাণিজ্য উত্তেজনা বাংলাদেশের জন্য সরাসরি ক্ষতির কারণ না হলেও, বিশ্ব বাজারে এর প্রভাব পড়তে পারে। এর ফলে কিছু পণ্যের দাম বাড়তে পারে, অথবা রপ্তানি বাজারেও চাহিদা কমতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন