**ক্লোয়ে কেলির প্রত্যাবর্তনে উচ্ছ্বসিত, ইংল্যান্ডের জার্সিতে ঝলক দেখানোর স্বপ্ন**
ফুটবল বিশ্বে, উত্থান-পতন যেন একটি স্বাভাবিক ঘটনা। খেলোয়াড়দের জীবনেও আসে কঠিন সময়, আবার সাফল্যের আলো ঝলমলে করে তোলে তাদের পথচলা।
তেমনই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলেন ইংলিশ ফুটবলার ক্লোয়ে কেলি। সম্প্রতি তিনি আবার ফিরে এসেছেন ইংল্যান্ডের নারী ফুটবল দল ‘দ্য লায়নেস’-এ।
মাঠে ফিরে আসার এই আনন্দ তার চোখে-মুখে স্পষ্ট। কয়েক সপ্তাহ আগেও দলে জায়গা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল, কিন্তু এখন তিনি যেন নতুন উদ্যমে ছুটছেন।
ক্লোয়ে কেলির এই মুহূর্তে হাসিখুশি থাকার অনেক কারণ রয়েছে। গত মাসে আর্সেনালের হয়ে আট দিনের মধ্যে তিনটি ম্যাচে তিনি প্রথম একাদশে ছিলেন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য পারফরম্যান্সের কারণে আর্সেনাল মহিলা সুপার লিগে (Women’s Super League – WSL) দ্বিতীয় স্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। তাছাড়াও, রিয়াল মাদ্রিদের বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে উঠতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তিনি।
এই ধরনের পারফরম্যান্স আসন্ন ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে খেলার সম্ভাবনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
আর্সেনালে যোগ দেওয়ার আগে, কেলি ম্যানচেস্টার সিটিতে খুব বেশি খেলার সুযোগ পাচ্ছিলেন না। শীতকালীন বিরতির আগে মাত্র চারবার প্রথম একাদশে সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি।
এরপর তিনি দলবদলের জন্য সামাজিক মাধ্যমে নিজের ইচ্ছের কথা জানান। তাঁর এই ইচ্ছের ফলস্বরূপ, তিনি আর্সেনালে ধারে খেলার সুযোগ পান, যেখানে তিনি ১২ বছর বয়সে যোগ দিয়েছিলেন।
“আমি এখন ভালো অনুভব করছি,” কেলি বলেন।
ইংল্যান্ডের জার্সি পরে খেলতে পারাটা দারুণ একটা অনুভূতি, যা কখনো হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। আমি জানতাম, খেলার সুযোগ তৈরি করতে হবে, এবং আমি অবশ্যই সেটা করেছি।
আমার মনে হয়, মুখে হাসি রাখাটা খুব জরুরি। এটা শুধু ফুটবলার হিসেবে নয়, একজন মানুষ হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ।
আর্সেনালে খেলার সময় কেলি সতীর্থ অ্যালেসিয়া রুসো এবং বেথ মিড-এর সঙ্গে মাঠের ভেতরে ও বাইরের সম্পর্ক আরও গভীর করেছেন।
তাঁদের সঙ্গে বোঝাপড়াটা এখন খুবই ভালো। তাঁর মতে, মাঠের বাইরের এই সংযোগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সম্প্রতি, তিনি বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডের আসন্ন দুটি ম্যাচের দিকে তাকিয়ে আছেন। এই ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে শুক্রবার অ্যাস্টন গেটে এবং আগামী মঙ্গলবার ল্যুভেনে।
কেলি মনে করেন, “এত ভালো খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেলাটা শেখার এবং নিজেকে আরও উন্নত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।”
২০২২ সালের ইউরো কাপে জার্মানির বিরুদ্ধে জয়সূচক গোলটি করে কেলি আলোচনায় এসেছিলেন।
সেই সাফল্যের স্মৃতি এখনো উজ্জ্বল। তবে কেলি বাইরের আলোচনা থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পছন্দ করেন।
তিনি বলেন, “আমি সামাজিক মাধ্যম বা সংবাদমাধ্যমে খুব বেশি নজর দিই না। মাঠের বাইরে আমি আমার পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাই।
এতে আমি ভালো থাকতে পারি।”
ভবিষ্যতের বিষয়ে জানতে চাইলে কেলি বলেন, “আমি প্রতিদিনের কাজ ভালোভাবে করি এবং নিজেকে আগামী দিনের জন্য প্রস্তুত করি।
ভবিষ্যতের বিষয়ে আমি খুব বেশি চিন্তা করি না। আমি শুধু মজা করতে চাই। বর্তমানে আমি আমার পরিবারের সঙ্গে লন্ডনে আছি এবং জীবনের ছোট ছোট জিনিসগুলো উপভোগ করছি।
ক্লোয়ে কেলির এই প্রত্যাবর্তন এবং তার সাফল্যের গল্প বাংলাদেশের ক্রীড়ামোদী মানুষের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে।
কঠোর পরিশ্রম ও একাগ্রতা থাকলে যে কোনো কিছুই জয় করা সম্ভব, কেলির জীবন তারই প্রমাণ।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান