ক্রিকেট বিশ্বে প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় ডার্বিশায়ারের প্যাট ব্রাউন। একদা ইংল্যান্ডের হয়ে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে আলো ছড়ানো এই পেসার এখন কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে নিজের সেরাটা দিতে মুখিয়ে আছেন।
কয়েক বছর আগেও যিনি ছিলেন ইংল্যান্ডের হয়ে খেলা অন্যতম পরিচিত মুখ, ফিরে আসার লড়াইয়ে তিনি কতটা প্রস্তুত, সেই গল্পই শোনা যাচ্ছে।
২০১৯ সালে ইংল্যান্ডের জার্সিতে চারটি সীমিত ওভারের ম্যাচ খেলেছিলেন প্যাট ব্রাউন। এরপর চোট এবং ফর্মের কারণে জাতীয় দলের বাইরে চলে যান তিনি।
তবে সম্প্রতি তিনি ফিরেছেন পুরোনো ছন্দে। বর্তমানে তিনি ডার্বিশায়ারের হয়ে খেলছেন এবং আসন্ন মৌসুমের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছেন।
শীতকালে তিনি অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফের অধীনে ‘ইংল্যান্ড লায়ন্স’ দলের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন। এই সময়টা তার জন্য খুবই ইতিবাচক ছিল।
ব্রাউন মনে করেন, এখন তিনি একজন পরিণত ক্রিকেটার এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলার জন্য আগের চেয়ে অনেক বেশি প্রস্তুত।
আবেগপূর্ণ এক বক্তব্যে ব্রাউন বলেন, “আমি কখনোই নিজেকে ‘এক-ট্রিক পনি’ হিসেবে দেখি না। তবে সত্যি বলতে, একসময় আমার বোলিং ছিল মূলত একটি বিশেষ ধরনের ডেলিভারির ওপর নির্ভরশীল।
এখন আমি একজন ভালো অলরাউন্ডার এবং পরিণত ক্রিকেটার। এখন যদি ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার সুযোগ আসে, তাহলে আমি প্রস্তুত।”
প্যাট ব্রাউনের উত্থান বেশ দ্রুত হয়েছিল। তার প্রধান অস্ত্র ছিল ‘নাকলবল’, যা ব্যাটসম্যানদের জন্য ছিল এক বিভীষিকা।
এই ডেলিভারি দিয়ে তিনি দ্রুত পরিচিতি লাভ করেন। তবে চোটের কারণে তিনি কিছু সময়ের জন্য মাঠের বাইরে ছিলেন।
এরপর ধীরে ধীরে তিনি তার বোলিংয়ে আরও বৈচিত্র্য আনেন। বর্তমানে তার গতিও বেড়েছে, যা তাকে আরও কার্যকর করে তুলছে।
ডার্বিশায়ারের হয়ে খেলার আগে ব্রাউন ওয়ারউইকশায়ারের হয়ে খেলেছিলেন। সেখানে তিনি নিয়মিত ভালো পারফর্ম করতে পারেননি।
এরপর তিনি ডার্বিশায়ারে যোগ দেন এবং দলের হয়ে ভালো পারফর্ম করার জন্য মুখিয়ে আছেন।
ব্রাউন মনে করেন, অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফের মতো কিংবদন্তীর সান্নিধ্য তাকে অনেক সাহায্য করেছে। ফ্লিনটফ তরুণ ক্রিকেটারদের আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছেন এবং খেলার মানসিকতা তৈরিতে সাহায্য করেছেন।
এই কঠিন সময়ে ব্রাউন তার বন্ধু ও সতীর্থ জশ বেকারের অকাল প্রয়াণে গভীরভাবে শোকাহত। জশ ছিলেন তার খুবই কাছের বন্ধু।
বেকারের মৃত্যু ব্রাউনের জীবন এবং ক্রিকেটের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিয়েছে। তিনি বলেন, “জীবনে দুঃখ-কষ্ট অনেক আছে।
তাই খেলার ভালো-মন্দ নিয়ে বেশি চিন্তা করি না। আমি এখন প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করতে চাই।”
প্যাট ব্রাউনের প্রত্যাবর্তনের এই গল্প নিঃসন্দেহে ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক। তিনি আবারও প্রমাণ করতে চান যে, কঠোর পরিশ্রম ও আত্মবিশ্বাসের মাধ্যমে যেকোনো বাধা অতিক্রম করা সম্ভব।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান