গাজায় খাদ্য সংকট তীব্র, উদ্বাস্তু ফিলিস্তিনিদের দুরাবস্থা; বৈরুতে ইসরায়েলি বিমান হামলা, নিহত অন্তত ৪।
মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত নতুন করে তীব্র আকার ধারণ করেছে। গাজায় খাদ্য সংকট চরম আকার ধারণ করেছে, যেখানে ফিলিস্তিনিরা খাবার খুঁজে বের করতে রীতিমতো সংগ্রাম করছে। একই সময়ে, লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে চারজন নিহত হয়েছে।
মঙ্গলবার ভোরে হওয়া এই হামলায় হিজবুল্লাহর এক সদস্যকে লক্ষ্য করা হয়েছিল বলে ইসরায়েল দাবি করেছে।
গাজায় খাদ্য সংকটের মূল কারণ হলো সেখানকার বেকারিগুলোর বন্ধ হয়ে যাওয়া। ইসরায়েলি অবরোধের কারণে খাদ্য, জ্বালানি এবং মানবিক সহায়তা সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য কর্মসূচি (World Food Programme – WFP) জানিয়েছে, তাদের মজুত প্রায় শেষ হয়ে আসায় গাজায় থাকা বেকারিগুলো বন্ধ করতে হচ্ছে। এর ফলে, সেখানকার সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে শিশুদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
অনেক পরিবারে দিনের পর দিন খাবার জোটে না। ১২ জন সন্তানের জনক মোহাম্মদ আল-কুরদ জানিয়েছেন, তার সন্তানদের রাতে না খেয়ে ঘুমাতে যেতে হয়।
অন্যদিকে, ইসরায়েল দাবি করছে, হামাসের সঙ্গে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির সময় গাজায় পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহ করা হয়েছিল, যা সেখানকার প্রায় ২০ লাখ মানুষের জন্য যথেষ্ট ছিল। তবে, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা জানিয়েছে, খাদ্য ফুরিয়ে আসছে এবং সেখানকার বাজারগুলো প্রায়empty হয়ে গেছে।
গাজায় খাদ্য সরবরাহ বন্ধের প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো দ্রুত সেখানে খাদ্য ও ত্রাণ সরবরাহের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে, ইসরায়েলের কঠোর অবরোধের কারণে তাদের কাজ কঠিন হয়ে পড়েছে।
বৈরুতে ইসরায়েলি বিমান হামলার ঘটনা সংঘাতকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে হামলা চালানোর মাধ্যমে ইসরায়েল কার্যত যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এর আগে, গত নভেম্বরে যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে ইসরায়েল কয়েক দফা হামলা চালিয়েছে।
এদিকে, ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থার প্রধান নিয়োগ নিয়েও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রস্তাবিত প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিতে হয়েছে সমালোচনার মুখে। জানা গেছে, ওই ব্যক্তি অতীতে নেতানিয়াহু সরকারের নীতির বিরোধিতা করেছিলেন।
অন্যদিকে, গাজা থেকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করার দাবি করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। গত মাসে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা বিক্ষিপ্তভাবে কিছু রকেট ছুঁড়েছে।
সংঘাতের কারণে উভয় পক্ষেরই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় ৫০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। তবে, নিহতদের মধ্যে কতজন বেসামরিক নাগরিক, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস