মহাকাশে দীর্ঘ সময় কাটিয়ে আসা দুই নভোচারীর মুখে আবারও বোয়িং স্টারলাইনারে চড়ার কথা শোনা গেল। সম্প্রতি, নাসা’র নভোচারী বুচ উইলমোর এবং সুনি উইলিয়ামস আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (International Space Station) তাদের দীর্ঘ ৯ মাসের মিশন শেষে ফিরে এসেছেন।
তাদের এই প্রত্যাবর্তনের পরেই এক সংবাদ সম্মেলনে (press conference) তারা জানান, স্টারলাইনারে তাদের অভিজ্ঞতা সত্ত্বেও, তারা পুনরায় এই মহাকাশযানে চড়তে প্রস্তুত।
নভোচারীরা তাদের এই মিশনের ব্যর্থতার জন্য নিজেদেরও দায়ী করেছেন। উইলমোর জানান, “আমিই বরং প্রথমে নিজের ভুল স্বীকার করব। কিছু প্রশ্ন করলে হয়তো পরিস্থিতি অন্যরকম হতে পারত।”
তাদের মতে, এই মিশনের সঙ্গে জড়িত সবাই এর জন্য দায়ী।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বোয়িং-এর স্টারলাইনার মহাকাশযানটি বেশ কয়েকবার তাদের নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছতে ব্যর্থ হয়েছিল। উৎক্ষেপণের সময় ত্রুটি দেখা দেওয়ায় এবং হিলিয়াম গ্যাস লিক করার কারণে এই সমস্যা সৃষ্টি হয়।
অবশেষে, তাদের স্পেসএক্স (SpaceX) এর মাধ্যমে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হয়।
উইলিয়ামস সংবাদ সম্মেলনে বলেন, স্টারলাইনারের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে এবং তিনি এর সাফল্য দেখতে চান। উইলমোর আরও যোগ করেন, তারা এই সমস্যাগুলো সমাধানে কাজ করবেন এবং “এক মুহূর্তের মধ্যে” আবার মহাকাশে যেতে প্রস্তুত।
নভোচারীরা বুধবার বোয়িং কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাদের ফ্লাইট এবং সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করবেন। উইলমোর বলেন, “এখানে কাউকে দোষারোপ করার কিছু নেই।
বরং আমরা কিভাবে এগিয়ে যাব, সেই পথটা আরও পরিষ্কার করতে চাই।”
দীর্ঘদিনের এই নভোচারীদ্বয় প্রায় ২৮৬ দিন মহাকাশে ছিলেন, যেখানে তাদের প্রথমে নির্ধারিত সময়ের থেকে অনেক বেশি দিন থাকতে হয়।
উল্লেখ্য, তাদের মহাকাশ যাত্রা শুরু হয়েছিল গত ৫ই জুন। তাদের এই দীর্ঘ সময় মহাকাশে থাকার কারণে মিশন পরিচালনাকারীদের অনেক হিসাব মেলাতে হয়েছে।
নাসা জানিয়েছে, স্টারলাইনারের থ্রাস্টার কেন কাজ করেনি, তা এখনো তারা জানতে পারেনি।
গ্রীষ্মকালে এর উপর আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হবে।
প্রকৌশলীরা যদি এই সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারে, তাহলে স্টারলাইনার পুনরায় যাত্রা করতে পারবে।
নাসার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্টারলাইনারের যাত্রা কঠিন হলেও, তারা মহাকাশ স্টেশনে যাত্রী পরিবহনের জন্য দুটি মার্কিন কোম্পানির (Boeing এবং SpaceX) ওপর আস্থা রেখেছেন।
তবে, তাদের হাতে সময় খুব বেশি নেই, কারণ আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে মহাকাশ স্টেশনটি পরিত্যক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এরপর সম্ভবত বেসরকারিভাবে পরিচালিত পরীক্ষাগার স্থাপন করা হবে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস