যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ডেমোক্রেটদের করা একটি মামলার ভুল ব্যাখ্যা নিয়ে আলোচনা চলছে। খবরটি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এপি।
তাদের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে মিথ্যাভাবে প্রচার করছেন যে ডেমোক্রেটরা নাকি অ-নাগরিকদের নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দিতে এই মামলা করেছেন।
আসলে, ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কমিটি (DNC), ডেমোক্রেটিক গভর্নরস অ্যাসোসিয়েশন এবং সিনেট ও হাউসের ডেমোক্রেটিক নেতাদের করা এই মামলার মূল বিষয় হলো, ট্রাম্পের একটি নির্বাহী আদেশ, যা নির্বাচনের নিয়ম পরিবর্তনের চেষ্টা করছে। ডেমোক্রেটদের অভিযোগ, এই আদেশটি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের পরিপন্থী।
গত ২৫শে মার্চ, ট্রাম্প “যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের অখণ্ডতা সংরক্ষণ ও সুরক্ষার” জন্য একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেন। এই আদেশে ভোটার নিবন্ধনের জন্য নাগরিকত্বের প্রমাণ দাখিল করা এবং ফেডারেল সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বিতভাবে ভোটারদের যোগ্যতা যাচাই করার কথা বলা হয়েছে।
এছাড়া, নির্বাচনের সঙ্গে সম্পর্কিত অপরাধের তদন্তের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
কিন্তু ডেমোক্রেটদের করা মামলার মূল বিষয় হলো, এই নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা অতিরিক্তভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে কিনা। তাদের যুক্তি হলো, প্রেসিডেন্ট চাইলেই নির্বাচনের নিয়ম তৈরি করতে পারেন না, কারণ এটি কংগ্রেসের ক্ষমতা।
তাছাড়াও, এই আদেশের কারণে বৈধ ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।
ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটির নির্বাচন আইন বিভাগের অধ্যাপক মাইকেল মorলে নিশ্চিত করেছেন যে, এই মামলাটি অ-নাগরিকদের ভোট দেওয়ার অধিকারের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। বরং, এটি ক্ষমতার বিভাজন (separation of power) বিষয়ক একটি বিষয়।
যুক্তরাষ্ট্রের আইনে অ-নাগরিকদের ফেডারেল নির্বাচনে ভোট দেওয়া সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ।
অন্যদিকে, রিপাবলিকান সিনেটর মাইক লি’র একজন মুখপাত্রের মতে, ডেমোক্রেটরা নির্বাচনে অ-নাগরিকদের হস্তক্ষেপ করতে দিতে চান এবং এই মামলাটি সেই লক্ষ্যের দিকেই একটি পদক্ষেপ।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রায়ই নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও ভোটাধিকার নিয়ে বিতর্ক দেখা যায়। এই মামলার মাধ্যমে সেই বিতর্কের একটি নতুন দিক উন্মোচিত হয়েছে, যেখানে একদিকে ক্ষমতার বিভাজন এবং অন্যদিকে, নির্বাচনের নিয়ম নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করা প্রায় ২১.৩ মিলিয়ন নাগরিকের, যাদের ভোট দেওয়ার বয়স হয়েছে, তাদের নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র নেই। এই প্রেক্ষাপটে, ডেমোক্রেটদের এই মামলাটি বিভিন্ন মহলে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
মামলাটিতে ডেমোক্রেটরা ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে “ক্ষমতার অবৈধ প্রয়োগ” হিসেবে অভিহিত করেছেন।
তথ্য সূত্র: