**মিয়ানমারে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি, ত্রাণ কার্যক্রমে বাধা বৃষ্টি**
গত ২৮শে মার্চ, ২০২৩ তারিখে মিয়ানমারে আঘাত হানা ৭.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে।
সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩,৪৭২ জনে।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল মিয়ানমারের সাগাইং অঞ্চলের কাছাকাছি এলাকায় বৃষ্টি এবং তীব্র গরমের কারণে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, এই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে কলেরা সহ বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে।
ক্ষতিগ্রস্ত অনেক মানুষ খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে, ফলে তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে।
জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির একজন বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, আবহাওয়া পরিস্থিতি খুবই চরম আকার ধারণ করেছে।
ভূমিকম্পের ফলে মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোসহ ছয়টি রাজ্য ও অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
বিদ্যুত ও টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় দুর্গত এলাকার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
রাস্তাঘাট ও সেতু ভেঙে যাওয়ায় ত্রাণ সামগ্রী দুর্গতদের কাছে পৌঁছানো যাচ্ছে না।
ভূমিকম্পের পাশাপাশি, দেশটিতে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর থেকেই দেশটিতে গৃহযুদ্ধ চলছে, যার কারণে ইতিমধ্যেই কয়েক লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং প্রায় ২ কোটি মানুষের মানবিক সহায়তা প্রয়োজন।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পের আগে থেকেই মানবিক সংকট তীব্র ছিল।
সামরিক সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভূমিকম্পে ৫,২২৩টি ভবন, ১,৮২৪টি স্কুল, ৪,৮১৭টি প্যাগোডা ও মন্দির, ১৬৭টি হাসপাতাল ও ক্লিনিক, ১৬৯টি সেতু, ১৯০টি বাঁধ এবং প্রধান সড়কের ১৮৪টি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাগাইং এবং ম্যান্ডালয় শহর।
জাতিসংঘের ত্রাণ বিষয়ক প্রধান টম ফ্লেচার ম্যান্ডালয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে এই ধ্বংসযজ্ঞকে ‘অভূতপূর্ব’ বলে উল্লেখ করেছেন।
তিনি জানান, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষেরা তীব্র মানসিক আঘাতের শিকার এবং তাদের খাদ্য, পানি, আশ্রয় ও বিদ্যুতের জরুরি প্রয়োজন।
ভূমিকম্পের পর প্রতিবেশী দেশ চীন, ভারত এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো ত্রাণ ও উদ্ধারকর্মী পাঠিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রও ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য কমপক্ষে ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (৯৪ কোটি টাকার বেশি) প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে।
এদিকে, থাইল্যান্ডে ভূমিকম্পের কারণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ জনে।
এর মধ্যে ১৭ জন ব্যাংককের একটি নির্মাণাধীন বহুতল ভবনে নিহত হয়েছেন এবং ৭৭ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা