মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যায় অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা দেশটির দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ঘটিয়েছে। খবর অনুযায়ী, গত কয়েক দিনের অবিরাম বৃষ্টিপাতের কারণে বিভিন্ন রাজ্যে বন্যা দেখা দিয়েছে, যার ফলস্বরূপ বহু মানুষ তাদের ঘরবাড়ি হারাতে বাধ্য হয়েছে।
বৃষ্টির কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে টেনিসি এবং কেনটাকি অঙ্গরাজ্য। এখানে মৃতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, শুধু টেনিসিতেই ১০ জন মারা গেছে। এছাড়াও, আরকানসাস, জর্জিয়া এবং ওহাইও-সহ আরো কয়েকটি রাজ্যে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, আরকানসাসে ৫ বছর বয়সী এক শিশু এবং কেনটাকিতে ৯ বছর বয়সী এক বালক বন্যায় প্রাণ হারিয়েছে। জর্জিয়ার একটি গল্ফ কোর্সে আশ্রয় নেওয়া এক পিতা ও পুত্রের উপর গাছ ভেঙে পড়লে তাদের মৃত্যু হয়।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদন অনুসারে, গত কয়েকদিনে এই অঞ্চলে অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হয়েছে। কোনো কোনো স্থানে এক ফুটের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। শনিবার আরকানসাস এবং টেনিসিতে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে, যার ফলে সেখানকার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
মেমফিসে একদিনে ৫.৪৭ ইঞ্চি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা এপ্রিল মাসের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড।
প্রবল বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি টর্নেডোর কারণেও ক্ষতি হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তর অন্তত ৩১টি টর্নেডোর খবর নিশ্চিত করেছে, যার মধ্যে তিনটি ছিল মারাত্মক শক্তিশালী।
বন্যার কারণে কেনটাকির বিভিন্ন অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানকার ফ্রাঙ্কফোর্টে কেনটাকি নদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি চলে এসেছে, যা শহরটির জন্য উদ্বেগের কারণ।
স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শহরের বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা প্রায় ৫০ ফুট উচ্চতার জল সহ্য করতে পারে, তবে পানির স্তর যদি এর উপরে উঠে যায়, তবে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
বন্যার কারণে অনেক মানুষকে তাদের ঘরবাড়ি ছাড়তে হয়েছে। জরুরি বিভাগের কর্মীরা এখনো উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
বাটলারে একটি ট্রাক গ্যারেজে তেল ও ডিজেল ছড়িয়ে পড়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
ওহাইও নদীর পানিও দ্রুত বাড়ছে, যার ফলে সিনসিনাটির কিছু অংশে বন্যা দেখা দিয়েছে। সেখানকার মেয়র সেখানকার বাসিন্দাদের সতর্ক করেছেন এবং জরুরি অবস্থার মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিতে বলেছেন।
এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সেখানকার মানুষের জীবনযাত্রা সম্পূর্ণভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অনেক এলাকার রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, স্কুল ও সরকারি অফিসগুলোও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন