যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে সংশয়।
কিয়েভ, ইউক্রেন – ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে চলমান যুদ্ধ বন্ধের উদ্দেশ্যে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে ইউক্রেনীয় জনগণের মধ্যে সন্দেহ বাড়ছে। সম্প্রতি আল জাজিরায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
যুদ্ধ পরিস্থিতি: ধ্বংসস্তূপের মাঝে জীবন।
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে যুদ্ধের ভয়াবহতা এখনো বিদ্যমান। রাশিয়ার ড্রোন হামলার কারণে এখানকার পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সামরিক কর্মকর্তা ওলেহ আল জাজিরাকে জানান, “ড্রোনগুলো ধ্বংস করার জন্য তারগুলি কেটে ফেলা প্রয়োজন।”
যুদ্ধ বন্ধের আলোচনা: ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে শান্তি আলোচনার তেমন কোনো ফল পাওয়া যায়নি। ওলেহ বলেন, “প্রথমে আমরা ট্রাম্পের ওপর কিছু আশা রেখেছিলাম, কিন্তু যখন কোনো ফল হলো না, তখন আমরা মনোযোগ দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছি।”
সামরিক বাহিনীর সংকট।
যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ায় ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীতে লোকবল সংকট দেখা দিয়েছে। অনেকেই স্বেচ্ছায় যুদ্ধে যেতে চাইছে না। যারা যোগ দিচ্ছে, তাদের স্বল্পকালীন প্রশিক্ষণের পরেই যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো হচ্ছে, যেখানে তাদের টিকে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম।
ড্রোন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র: উদ্বেগ বাড়ছে।
কিয়েভে ড্রোন অপারেটর তৈরির একটি স্কুলের প্রধান আন্দ্রি প্রোনিন আল জাজিরাকে বলেন, “এখন খুব কম সংখ্যক বেসামরিক ছাত্র আসছে। সবাই মনে করছে যুদ্ধ শীঘ্রই শেষ হয়ে যাবে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ভাষ্য।
একজন ইউক্রেনীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষক, যিনি বর্তমানে সেনাবাহিনীতে কাজ করছেন, তিনি মনে করেন, ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার কারণ হলো পুতিনের ইউক্রেন ভূখণ্ড দখলের চূড়ান্ত বাসনা। তিনি বলেন, পুতিন সম্ভবত শরৎকাল পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চান, যাতে তিনি ইউক্রেনীয় ভূমি দখলের কৃতিত্ব দাবি করতে পারেন।
সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ।
যুদ্ধ ইউক্রেনের সাধারণ মানুষের জীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। খারকিভে একটি অ্যাপার্টমেন্টে রাশিয়ান ড্রোন হামলায় এক ১২ বছর বয়সী মেয়ে, তার বাবা-মা এবং প্রতিবেশী নিহত হয়েছে। এতে আরও ৩৪ জন আহত হয়েছে। হালিনা ভ্যানিতিনা নামে এক নারী আল জাজিরাকে বলেন, “ট্রাম্প এবং ইউক্রেন ভিন্ন জগতে বাস করে। তিনি (পুতিনের) সঙ্গে বন্ধুত্বের কথা বলেন, আর আমরা রাতে পোশাক পরে ঘুমাই এবং আমাদের কাগজপত্র অগ্নি-প্রতিরোধী বাক্সে রাখি।”
অর্থনৈতিক প্রভাব।
যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি ১৮৫টি দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করেছে, তবে রাশিয়া ও তার মিত্র দেশগুলোকে এর বাইরে রাখা হয়েছে।
উপসংহার।
ইউক্রেনের সেনারা বলছেন, দেশকে রক্ষা করতে তারা লড়াই চালিয়ে যাবেন। তাদের একমাত্র লক্ষ্য হলো রাশিয়ার সেনাদের প্রতিহত করা।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা