মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যনীতি নিয়ে বিশ্বজুড়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়। বিভিন্ন দেশ যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে, যা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য এক উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে অনেক দেশই আমেরিকার সঙ্গে আলোচনা করে একটি সমাধানে আসার চেষ্টা করছে। খবর অনুযায়ী, চীন যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপকে একতরফা বাণিজ্য নীতি এবং অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টির কৌশল হিসেবে বর্ণনা করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র সরকার বিভিন্ন দেশের উপর নতুন করে শুল্কের বোঝা চাপানোয়, আন্তর্জাতিক বাজারে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। হংকংয়ের শেয়ার বাজারে ব্যাপক দরপতন হয়েছে, যা বাজারের অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশ তাদের উদ্বেগের কথা জানাতে শুরু করেছে। দক্ষিণ কোরিয়া তাদের বাণিজ্য বিষয়ক প্রধানকে ওয়াশিংটনে পাঠাচ্ছে, যাতে তারা এই শুল্কের কারণে দেশটির ব্যবসায়ীদের ক্ষতির বিষয়টি তুলে ধরতে পারে।
অন্যদিকে, পাকিস্তানও তাদের রপ্তানির উপর আরোপিত শুল্ক নিয়ে আলোচনার জন্য একটি প্রতিনিধি দল পাঠাতে চাইছে। পাকিস্তানের অর্থনীতি যেহেতু আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের উপর নির্ভরশীল, তাই এই শুল্ক তাদের জন্য একটি উদ্বেগের বিষয়।
তবে, জার্মানির অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী রবার্ট হাবেক এই শুল্ক নীতির বিরোধিতা করে বলেছেন, এর কোনো ভিত্তি নেই। তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে ইন্দোনেশিয়া জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আরও বেশি পরিমাণে গম, তুলা, তেল এবং গ্যাস আমদানি করতে চায়। ইন্দোনেশিয়ার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানির ওপর নতুন করে আরোপিত শুল্কের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেবে না, বরং দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবে।
অন্যদিকে, মালয়েশিয়াও এই বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর সঙ্গে মিলে একটি যৌথ পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছে। মালয়েশিয়া সরকার জানিয়েছে, তারা এই বিষয়ে আলোচনা করার জন্য দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর সংগঠন (আসিয়ান)-এর একটি বৈঠকের আয়োজন করতে যাচ্ছে।
এই বৈঠকে আঞ্চলিক বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের উপর শুল্কের প্রভাব নিয়ে আলোচনা করা হবে।
এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও এর কিছু প্রভাব পড়তে পারে। বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ব অর্থনীতির এই অস্থিরতা বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যে কিছু চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।
তবে, সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস