গ্রিসের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ইয়র্গোস লান্থিমোসের নতুন সিনেমার শুটিং এবার অ্যাক্রোপলিসের মতো ঐতিহাসিক স্থানে করার অনুমতি পেলেন না। গ্রিক সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কারণ নির্মাতার প্রস্তাবিত দৃশ্যগুলি এই স্থানের ঐতিহাসিক গুরুত্বের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
জানা গেছে, লান্থিমোস তাঁর নতুন সিনেমা ‘বোগোনিয়া’র কিছু দৃশ্য ধারণ করতে চেয়েছিলেন প্রাচীন এথেন্সের এই গুরুত্বপূর্ণ স্থানে।
এপ্রিল মাসে ছবিটির শুটিংয়ের জন্য আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, অ্যাক্রোপলিসের ‘প্রতীকী তাৎপর্য’ এবং এর ‘মূল্যবোধের’ সঙ্গে প্রস্তাবিত দৃশ্যগুলির মিল নেই।
ছবিটিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করছেন এমা স্টোন। ২০২৩ সালে লান্থিমোসের ‘পুওর থিংস’ ছবিতে অনবদ্য অভিনয়ের জন্য তিনি সেরা অভিনেত্রীর অস্কার জিতেছিলেন।
‘বোগোনিয়া’ ছবিতে এমা স্টোন এক বৃহৎ ওষুধ কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার ভূমিকায় অভিনয় করছেন। ছবিতে দেখা যাবে, তাঁকে অপহরণ করেন একজন ষড়যন্ত্র তত্ত্ববিদ মৌমাছি পালনকারী, যার চরিত্রে অভিনয় করেছেন জেসি প্লেমন্স।
আসল সমস্যা তৈরি হয়েছে দৃশ্যগুলো নিয়ে। প্রস্তাবিত দৃশ্যগুলিতে দেখা যাওয়ার কথা ছিল, গ্রিক দুর্গের গুরুত্বপূর্ণ দুটি স্থান – প্রবেশপথ প্রোপ্রিলায়া এবং দেবী এথেনার মন্দির পার্থেননের মাঝে প্রায় ৭০টি মৃতদেহ রাখা হয়েছে।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় প্রাথমিকভাবে অ্যাক্রোপলিসে শুটিংয়ের জন্য অনুমতি দিতে রাজি হয়েছিল এবং দৈনিক প্রায় ১,৯৮৪ ইউরোর (বর্তমান বিনিময় হারে প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার টাকার কাছাকাছি) সাধারণ শুটিং ফি মওকুফ করারও প্রস্তাব ছিল।
তবে, অ্যাক্রোপলিসের তত্ত্বাবধানে থাকা কেন্দ্রীয় প্রত্নতাত্ত্বিক পরিষদ এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। তাদের মতে, দৃশ্যগুলি উপযুক্ত নয় এবং স্থানের প্রতি শ্রদ্ধাশীলও নয়।
পরিবর্তে, তারা লান্থিমোসকে কাছাকাছি অন্য কোনো স্থানে শুটিং করার পরামর্শ দিয়েছে।
জানা গেছে লান্থিমোসের দল তাদের পূর্বের প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার জন্য সংস্কৃতি মন্ত্রীর কাছে পুনরায় আবেদন জানালেও, প্রত্নতাত্ত্বিক পরিষদকে রাজি করানোর মতো যথেষ্ট কারণ দেখাতে পারেনি।
উল্লেখ্য, অ্যাক্রোপলিস বিশ্বজুড়ে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃত। অতীতেও এখানে বিভিন্ন সিনেমার শুটিং হয়েছে।
ইয়র্গোস লান্থিমোস একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরিচালক। তাঁর কাজের মধ্যে রয়েছে ‘ডগটুথ’, ‘দ্য ফেভারিট’, ‘দ্য লবস্টার’-এর মতো চলচ্চিত্র, যা দর্শক ও সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে।
লান্থিমোসের সিনেমায় প্রায়ই সমাজের প্রচলিত ধারণার বাইরে গিয়ে কিছু গল্প বলার চেষ্টা থাকে।
তথ্যসূত্র: গার্ডিয়ান