শিরোনাম: সুইডেনে পরিবেশ-বান্ধব রিসোর্ট খুলে পালালেন দম্পতি, রেখে গেলেন বিপুল পরিমাণ বর্জ্য।
ডেনমার্কের এক দম্পতি, যারা সুইডেনে একটি পরিবেশ-বান্ধব রিসোর্ট তৈরি করে আন্তর্জাতিক মহলে পরিচিতি লাভ করেছিলেন, কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে গুয়াতেমালায় পালিয়ে গিয়েছেন। সুইডিশ সংবাদমাধ্যম দৈনিক নাখতের খবর অনুযায়ী, এই দম্পতি তাদের রিসোর্টে ১৫৮ ব্যারেল মানব বর্জ্য ফেলে যান, যা পরিবেশ দূষণের গুরুতর অভিযোগের জন্ম দিয়েছে।
ফ্লেমিং হ্যানসেন এবং মেত্তে হেলব্যাক নামক এই দম্পতি কোপেনহেগেনে একটি জনপ্রিয় রুফটপ রেস্টুরেন্ট চালাতেন। পরে তারা “প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে” সুইডেনের হল্যান্ডে ‘স্টেডসানস’ নামে একটি ইকো-রিসোর্ট খোলেন। কাঠের তৈরি ১৬টি কুটির নিয়ে গঠিত এই রিসোর্টটি তার মনোমুগ্ধকর পরিবেশের জন্য পর্যটকদের কাছে খুব দ্রুত পরিচিতি লাভ করে। ভ্রমণ বিষয়ক ব্লগার এবং পর্যটকদের চোখে এটি ছিল “জাদুকরী” এবং “আকর্ষণীয় বিলাসবহুল” একটি স্থান।
কিন্তু কয়েক মাস আগে জানা যায়, এই দম্পতি হঠাৎ করেই উধাও হয়ে গিয়েছেন। যাওয়ার আগে তারা রিসোর্টের অনেকগুলো প্রাণী, যেমন হাঁস-মুরগি, সেখানে ফেলে যান। দৈনিক নাখতের অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, তারা তাদের রিসোর্টের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজটিও সঠিকভাবে করেননি। বর্জ্যগুলো সরাসরি জঙ্গলে ফেলার কারণে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।
২০১৬ সালে এই দম্পতি ডেনমার্ক থেকে সুইডেনে আসেন। ডেনিশ কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের কোটি কোটি ক্রোনার ঋণ ছিল। সুইডেনে এসেও তারা ৬ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনা (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫ কোটি টাকার বেশি) ঋণী হয়ে পড়েন। বর্তমানে তারা গুয়াতেমালায় নতুন একটি হোটেল ব্যবসা শুরু করেছেন।
তাদের ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বার্তায় তারা বলেন, “আমরা স্টেডসানস নিয়ে অনেক দূর এগিয়েছিলাম, কিন্তু বুঝতে পারলাম, উচ্চ কর এবং কঠোর নিয়ম-কানুনের মধ্যে থেকে কাজ করাটা প্রায় অসম্ভব।”
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মতে, এই দম্পতির কাজ “পরিবেশগত অপরাধ”। স্থানীয় হাইল্টে কাউন্টির পরিবেশ ও নির্মাণ বিভাগের প্রধান ড্যানিয়েল হেলসিং দৈনিক নাখতকে বলেন, “দেখা গেল, এখানে ১৫০টির বেশি ব্যারেল মানব বর্জ্য!”
সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় হ্যানসেন সুইডিশ ট্যাক্স কর্তৃপক্ষকে “আত্ম-প্রীতিপূর্ণ” হিসেবে বর্ণনা করেন এবং তাদের কাছে তার ৭ মিলিয়নের বেশি সুইডিশ ক্রোনা (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬ কোটি টাকার বেশি) ঋণ রয়েছে বলে জানান। তিনি আরও দাবি করেন, বর্তমানে তিনি “দারিদ্র্যের অভিশাপ” নিয়ে জীবন যাপন করছেন।
তথ্যসূত্র: দৈনিক নাখত ও পলিটিকেন।