মহাকাশে ঘুরে বেড়ানো একটি গ্রহাণু, যা আগে পৃথিবীর বুকে আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল, সেটি আসলে একটি ‘হকি পা্ঁকের’ মতো দেখতে। বিজ্ঞানীরা নতুন পর্যবেক্ষণে এই তথ্য জানিয়েছেন।
সম্প্রতি আবিষ্কৃত এই গ্রহাণুটি নিয়ে নতুন করে গবেষণা চলছে এবং এর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
২০২৪ YR4 নামক এই গ্রহাণুটি নিয়ে শুরুতে বিজ্ঞানীরা ধারণা করেছিলেন, ২০৩২ সালে এর পৃথিবীতে আঘাত হানার সম্ভাবনা ৩ শতাংশ। তবে, নতুন পর্যবেক্ষণে সেই আশঙ্কা প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে।
বিজ্ঞানীরা চিলিতে অবস্থিত জেমিনি সাউথ অবজারভেটরি ব্যবহার করে ফেব্রুয়ারি মাসে গ্রহাণুটির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করেন। তাঁদের পর্যবেক্ষণে ধরা পড়েছে, এই গ্রহাণুটি দেখতে আলু বা খেলনার মতো নয়, বরং একটি চ্যাপ্টা চাকতির মতো, অনেকটা ‘হকি পা্ঁকের’ মত।
এটি প্রতি ২০ মিনিটে একবারের বেশি ঘোরে, যা এর দ্রুত গতির ঘূর্ণনের প্রমাণ।
গবেষণা দলের প্রধান, ইউরেকা সায়েন্টিফিকের ব্রাইস বোলিন এক বিবৃতিতে বলেছেন, “অধিকাংশ গ্রহাণুর আকার আলু বা খেলনার টপের মতো হয়ে থাকে। তবে এটি (২০২৪ YR4) অপ্রত্যাশিতভাবে চ্যাপ্টা আকারের।”
বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই গ্রহাণু সম্ভবত মঙ্গল ও বৃহস্পতির মাঝে অবস্থিত প্রধান গ্রহাণু বলয় থেকে এসেছে এবং এতে প্রচুর পরিমাণে সিলিকেট বিদ্যমান।
যদিও এখন পৃথিবীর বুকে আঘাত হানার সম্ভাবনা খুবই কম, তবে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এর চাঁদে আঘাত হানার সম্ভাবনা এখনো ৩.৮ শতাংশ রয়েছে।
তবে, নাসা নিশ্চিত করেছে যে, এমনটা ঘটলেও চাঁদের কক্ষপথে কোনো পরিবর্তন হবে না।
প্রতি চার বছর পর পর এই গ্রহাণুটি পৃথিবীর কাছাকাছি আসে।
বিজ্ঞানীরা একে বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন, কারণ এর মাধ্যমে তারা ভবিষ্যতে কোনো সম্ভাব্য বিপদজনক গ্রহাণু পৃথিবীর দিকে আসলে তার মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিতে পারবেন।
আগামী সপ্তাহে গ্রাউন্ড টেলিস্কোপের মাধ্যমে এটিকে আর দেখা যাবে না।
তবে, এই মাসের শেষের দিকে অথবা আগামী মাসে ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের মাধ্যমে এর উপর পুনরায় নজর রাখা হবে।
মহাকাশ বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণা আমাদের ভবিষ্যৎ পৃথিবীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এর মাধ্যমে আমরা যেমন গ্রহাণু সম্পর্কে জানতে পারি, তেমনি ভবিষ্যতের বিপদ সম্পর্কেও ধারণা লাভ করতে পারি।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস